ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

আবহাওয়া এ্যাপ

প্রকাশিত: ০৬:২২, ৩০ ডিসেম্বর ২০১৬

আবহাওয়া এ্যাপ

আবহাওয়ার খবর জানাবে মোবাইল এ্যাপ- তথ্যপ্রযুক্তির এমনই উৎকর্ষ ও মহিমা। বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতর এই উদ্যোগ নিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছেন। অতঃপর যে বা যাদের স্মার্টফোন আছে, তারা খুব সহজেই বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতর বা ডিএমডির তৈরি এই এ্যাপ গুগল প্লে স্টোর থেকে জানতে পারবেন দেশের দৈনন্দিন আবহাওয়া সম্পর্কিত যাবতীয় তথ্য। যেমন, প্রতিদিন প্রতি মুহূর্তের তাপমাত্রা, আর্দ্রতা, বাতাসের গতিপ্রবাহ ও বায়ুচাপ, আকাশের অবস্থা, ঝড়-বৃষ্টি বজ্রপাতের খবরাখবর। চাই কী ভূমিকম্প কিংবা সুনামির আদৌ কোন পূর্বাভাস থাকলে, তাও। সে প্রেক্ষাপটে তারা নিজেরা স্ব-উদ্যোগে সতর্কতা ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারবেন। জানমাল ও সম্পদহানি ঠেকাতে নিতে পারবেন যথাযথ ব্যবস্থা ও পরামর্শ। এতে করে যে শুধু নগরবাসীই উপকৃত হবেন, তা নয়। দেশের বিভিন্ন অংশে স্বয়ংক্রিয় আবহাওয়া মনিটরিং সেন্টার থেকে সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্যাদি প্রদর্শিত হবে এই এ্যাপ্লিকেশনে। এতে করে নাগরিক সমাজের বাইরে অবস্থানরত বিপুলসংখ্যক গ্রামবাসীসহ কৃষক সমাজও উপকৃত হবেন দারুণভাবে। শুধু একটি ইন্টারনেট সংযোগ থাকলেই হলো! সরকার অঙ্গীকৃত ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ বিনির্মাণে নিঃসন্দেহে এটি একটি মাইলফলক অগ্রগতি। বহির্বিশ্বে এক সময় বাংলাদেশের এবং উপমহাদেশেরও পরিচিতি ছিল কালবৈশাখী, ঝড়Ñঝঞ্ঝা, সাইক্লোন, টর্নেডো, জলোচ্ছ্বাস, বন্যা, অতিবৃষ্টি, অনাবৃষ্টি, খরা এমনকি কলেরা-বসন্ত-ম্যালেরিয়াসহ মাড়ি ও মড়কের দেশ হিসেবে। সেদিন গত হয়েছে অনেক আগেই। বর্তমানে বাংলাদেশের অবস্থান অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও অগ্রগতির মহাসড়কে। বর্তমানে দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ এমনকি কিছু পরিমাণে খাদ্যশস্য রফতানিও হচ্ছে বিদেশে। তবে এক্ষেত্রে কৃষকের পাশাপাশি আবহাওয়া ও প্রকৃতির অপার মহিমা, দয়া ও দাক্ষিণ্যের কথাও অস্বীকার করা যায় না। বর্তমানে শুধু বাংলাদেশেই নয়; বরং সমগ্র বিশ্বেই পরিলক্ষিত হচ্ছে জলবায়ু ও আবহাওয়ার বৈরী মনোভাব এবং খামখেয়ালিপনা। যে কারণে বৈশ্বিক প্রকৃতি ও পরিবেশ রীতিমতো হুমকি ও বিপর্যয়ের সম্মুখীন। বাংলাদেশও এই বৃত্তের বাইরে নয়। প্রকৃতি ও পরিবেশ বিশেষজ্ঞদের ধারণা, আবহাওয়ার এহেন নেতিবাচক পরিবর্তনের প্রক্রিয়ার প্রতিরোধ করা সম্ভব না হলে আগামী কয়েক বছরে বাংলাদেশের অস্তিত্বই হুমকির সম্মুখীন হতে পারে। প্রকৃতির এই অবক্ষয়ের জন্য প্রধানত দায়ী মানুষ। মনুষ্যসৃষ্ট নানা কারণেই বর্তমানে প্রকৃতির এই দুরবস্থা। বাতাসে মাত্রাতিরিক্ত কার্বন নিঃসরণসহ বন কেটে বসত, নির্বিচারে শিল্প-কারখানা নির্মাণে ও উন্নয়ন, অপরিকল্পিত বাঁধ ও ব্যারাজ নির্মাণ করে নদ-নদীর গতিপথ পরিবর্তন ইত্যাদি বিরূপ প্রভাব ফেলছে প্রকৃতি ও পরিবেশে। সে অবস্থায় মোবাইল এ্যাপ সর্বস্তরের মানুষকে দৈনন্দিন আবহাওয়া সম্পর্কিত তথ্যাদি জানানোর পাশাপাশি সচেতন করে তুলতে পারে প্রকৃতির আসন্ন বিপদ-আপদ সম্পর্কে। তবে এর জন্য বাংলাদেশে আবহাওয়া দফতরকেও সর্বদা সচেষ্ট ও সক্রিয় হতে হবে। তারা যদি সর্বক্ষণ আপডেট তথা ডিজিটাল না হতে পারে, তাহলে শুধু মোবাইল এ্যাপ দিয়ে কিছু হবে না। যথাযথ এ নির্ভুল পূর্বাভাস প্রদানের সক্ষমতা অর্জন এক্ষেত্রে সহায়ক হতে পারে।
×