ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

সমুদ্রে অপরাধীদের হাইফ্রিকোয়েন্সি নেটওয়ার্কের আড়ালে ব্যবসা

প্রকাশিত: ০৬:০৭, ৩০ ডিসেম্বর ২০১৬

সমুদ্রে অপরাধীদের হাইফ্রিকোয়েন্সি নেটওয়ার্কের আড়ালে ব্যবসা

মাকসুদ আহমদ, চট্টগ্রাম অফিস ॥ পুরাতন জাহাজের বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ও টেলিকমিউনিকেশন যন্ত্রাংশ বিক্রি হচ্ছে খোলাবাজারে। এক সময় এ ধরনের যন্ত্রাংশের চাহিদা না থাকলেও বর্তমানে এসব হাইফ্রিকোয়েন্সি সরঞ্জামের রমরমা ব্যবসা গড়ে উঠেছে অপরাধীদের কারণে। বিশেষ করে সমুদ্রকেন্দ্রিক অপরাধীরা হাইফ্রিকোয়েন্সি সরঞ্জাম ব্যবহার করে ইয়াবা, অস্ত্র ও বিভিন্ন অবৈধ পণ্যের ব্যবসা করছে বলে র‌্যাবের কাছে তথ্য রয়েছে। তবে ৩৫ বছর ধরে এসব হাইফ্রিকোয়েন্সি ইক্যুইপমেন্টের চালান আসছে পুরাতন জাহাজ ভাঙ্গা এলাকা থেকে। র‌্যাবের ধারণাÑ এসব সরঞ্জাম দিয়ে অপরাধ নিয়ন্ত্রণ হচ্ছে। এছাড়াও অপরাধের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরাই এ ধরনের সরঞ্জাম ক্রয়ে আগ্রহী। ফলে অসাধু ব্যবসায়ীরাও এসব সরঞ্জামের যোগান দিচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে, কক্সবাজার, টেকনাফ, মহেশখালীসহ আনোয়ারা হয়ে চট্টগ্রামসহ দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে প্রবেশ করছে নেশার অন্যতম সেব্য ইয়াবা। শুধু ইয়াবাই নয় ওইসব এলাকা থেকে অবৈধ অস্ত্র আসছে চট্টগ্রামে। কেউ করছে অস্ত্র ব্যবসা, আর কেউ করছে ইয়াবা বাণিজ্য। অবৈধ এ দুটি ব্যবসা সমুদ্র উপকূলকে ঘিরে গড়ে উঠেছে বিশাল নেটওয়ার্ক। এ নেটওয়ার্ক স্থাপন করতে গিয়ে ব্যবহার করা হচ্ছে হাইফ্রিকোয়েন্সি টেলিকমিউনিকেশন ইক্যুইপমেন্টস। মাছ ধরার ট্রলারের নামে বন্দর চ্যানেল অতিক্রম করে গভীর সমুদ্রে যাচ্ছে জেলে বেশে ইয়াবা পাচারকারীরা। ফলে কোস্টগার্ড ও র‌্যাবের অভিযানে বিভিন্ন সময়ে ইয়াবা ও অস্ত্রের চালান ধরা পড়ছে। এ ব্যাপারে র‌্যাব-৭ এর সিইও লে. কর্নেল মিফতাহ উদ্দিন আহমেদ জনকণ্ঠকে জানান, হাইফ্রিকোয়েন্সি টেলিকমিউনিকেশন ইক্যুইপমেন্টস বিষয়ে গ্রেফতারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। বেশ কিছু তথ্যও পাওয়া গেছে। সে অনুযায়ী অভিযান অব্যাহত রয়েছে। তবে এ অভিযানের পর এ ব্যবসার সঙ্গে যারা জড়িত ছিল তারা গা ঢাকা দিয়েছে। এমনকি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে পালিয়েছে। জানা গেছে, সীতাকু- উপজেলার শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ডকে কেন্দ্র করে এ যন্ত্রাংশ কালেকশন করছে ব্যবসায়ীরা। দীর্ঘ প্রায় ৩৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে শিপ ব্রেকিং ব্যবসা এদেশে চালু রয়েছে। এক সময় হাইফ্রিকোয়েন্সি ইলেকট্রনিক্স সামগ্রীর ক্রেতা না পাওয়া গেলেও বর্তমানে নানাবিধ অপরাধ ও অপরাধী বেড়ে যাওয়ায় এসবের কদর বেড়েছে। ফলে স্বল্প দামে হাইফ্রিকোয়েন্সি সরঞ্জাম ক্রয় করছে অপরাধীরা। কিন্তু ব্যবসার খাতিরে ও শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ডের ব্যবসা ধরে রাখতে এসব সরঞ্জাম বিক্রি হচ্ছে দেদার। কুমিরা, ভাটিয়ারি, মাদামবিবিরহাট, সিডিএ মার্কেট ও কদমতলীতে এসব হাইফ্রিকোয়েন্সি টেলিকমিউনিকেশন ইক্যুইপমেন্টস বিক্রি হচ্ছে। র‌্যাব ও কোস্টগার্ডের অভিযানে ইয়াবা ও অস্ত্রের চালান উদ্ধার হলেও হাইফ্রিকোয়েন্সি টেলিকমিউনিকেশন ইক্যুইপমেন্টসের ওপর নজরদারি রাখা হয়নি। কিন্তু অপরাধীরা নেটওয়ার্ক তৈরি করতে এসব সরঞ্জাম ব্যবহার করছে।
×