ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

শতভাগ ফিট নন মুস্তাফিজ!

প্রকাশিত: ০৬:২০, ২৯ ডিসেম্বর ২০১৬

শতভাগ ফিট নন মুস্তাফিজ!

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ইনজুরি থেকে সেরে উঠে পাঁচ মাস পর কোন ম্যাচ খেলতে নামলেন বাংলাদেশ ‘কাটার মাস্টার’ মুস্তাফিজুর রহমান। আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেললেন ৯ মাস পর। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে একটি ম্যাচ খেলেই আবার হয়ত বিশ্রাম নিতে হচ্ছে মুস্তাফিজকে। টানা ম্যাচ খেলার জন্য শতভাগ ফিট যে নন এখনও মুস্তাফিজ! শুধু মুস্তাফিজকে বিশ্রাম দিয়ে পেসার শুভাশিষ রায়কে প্রথমবারের মতো জাতীয় দলের জার্সি গায়ে জড়ানোর সুযোগ দেয়াই নয়, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডে শেষে যেন বাংলাদেশ দলেরই সব পাল্টে গেল। মুশফিকুর রহীম ইনজুরিতে পড়লেন। তার বিকল্প কোন ব্যাটসম্যান দলে নেই। তার পরিবর্তে ওয়ানডে অভিষেক হবে উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান নুরুল হাসান সোহানের। বাংলাদেশ দল শুধু মুশফিকের মতো একজন নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যানকেই হারাল না, দলও দুর্বল হয়ে পড়ল। সেই দুর্বলতা টি২০ সিরিজ পর্যন্ত বজায় থাকবে। মুশফিক যে ওয়ানডে ও টি২০ সিরিজে আর খেলতে পারবেন না। প্রথম ওয়ানডেতে বাঁ পায়ের পেশীতে টান পড়েছে। তা ঠিক হতে দুই সপ্তাহ লাগবে। মুস্তাফিজ প্রথম ওয়ানডেতে দারুণ বল করেন। ১০ ওভার বল করে ৬২ রান দিয়ে ২ উইকেট নেন। তবে টানা ম্যাচ খেলতে পারছেন না। মুস্তাফিজকে টানা ম্যাচ খেলানোর পক্ষে নন ফিজিও। তাতে বাংলাদেশ দল এ মুহূর্তে দলের সেরা পেসারকেও হারাচ্ছে। ব্যাটিংয়ে মুশফিককে হারিয়ে ব্যাটিং সাইড যেমন দুর্বল হলো তেমনি বোলিংয়ে মুস্তাফিজ না থাকায় এই সাইডও দুর্বলতায় ঘিরে ধরল। ব্যাটিংয়ে আরও বিপদ আছে। সৌম্য সরকার টানা ব্যর্থ হয়েই চলেছেন। তাই আর তাকে সুযোগ নাও দেয়া হতে পারে। তার পরিবর্তে লেগ স্পিনার-ব্যাটসম্যান তানভির হায়দারকে বিবেচনা করা হতে পারে। তানভিরেরও তাহলে জাতীয় দলের জার্সি প্রথমবারের মতো গায়ে জড়ানো হবে। যদি তানভির ভাল করে ফেলেন, তাহলে সৌম্য সরকারের আপাতত জাতীয় দলে আবার জায়গা করে নেয়া কঠিনই হয়ে যাবে। যতদূর জানা, তানভিরকে লেগ স্পিনের জন্যই বিবেচনায় আনা হয়েছে। তবে তানভির ব্যাটিংটাও দারুণ করেন। তবে প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে ৬টি শতক থাকলেও লিস্ট ‘এ’ তে ৫৬ রানের বেশি কোন ইনিংস নেই তানভিরের। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে এ বছর অক্টোবরে চট্টগ্রামে একটি প্রস্তুতি ম্যাচে ৪ উইকেট নেয়াতেই তানভিরকে টিম ম্যানেজমেন্টের মনে ধরেছে। তানভিরকে তাই জাতীয় দলেও রাখা হয়েছে। সৌম্যের পরিবর্তে খেলানোও হতে পারে। তাই যদি হয়, তাহলে দলের ব্যাটিংটা আরেকটু দুর্বল হয়ে পড়বে। বিদেশের মাটিতে দীর্ঘ বিরতির পর খেলতে গিয়েই যেন দলের বেহাল দশা শুরু হয়েছে। সেই দশায় পরিবর্তনের হাওয়াও লেগেছে! দ্বিতীয় ওয়ানডেতেই সেটি দেখা যেতে পারে। একসঙ্গে তিন পরিবর্তন দেখা যেতে পারে। এক ম্যাচেই তিনজনের অভিষেকও হয়ে যেতে পারে। মুশফিক তো খেলতে পারবেনই না। তার পরিবর্তে সোহানের ওয়ানডে অভিষেক হওয়া নিশ্চিত। মুস্তাফিজ না খেললে শুভাশিষের এবং সৌম্যকে একাদশের বাইরে রাখলে তানভিরের জাতীয় দলে অভিষেক হতে পারে। দলের এমন বেহাল দশা যেখানে, সেখানে কিন্তু নিউজিল্যান্ড দল ফুরফুরে মেজাজেই আছে। বাংলাদেশের বিপক্ষে গত দুটি সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হয়েছে নিউজিল্যান্ড। বাংলাদেশের মাটিতে সিরিজগুলো হয়েছে। এবার হচ্ছে নিউজিল্যান্ডের মাটিতে সিরিজ। বাংলাদেশকে সিরিজে হারিয়ে দেয়ার সঙ্গে হোয়াইটওয়াশ হওয়ার প্রতিশোধ নেয়ারও সুযোগ ধরা দিয়েছে। নিউজিল্যান্ড কী সেই সুযোগ ছাড়বে? নিউজিল্যান্ড বোলাররাওতো বুঝে গেছে, শর্ট বল খেলায় বাংলাদেশ ব্যাটসম্যানদের দুর্বলতা রয়েছে। সেই দুর্বলতাতেই তো আঘাত করবে তারা। প্রথম ওয়ানডেতে ৩ উইকেট নেয়া লকি ফার্গুসনই যেমন বলেছেন, ‘আমার মনে হয় দ্বিতীয় ম্যাচেও বাংলাদেশীদের বিপক্ষে ছেলেরা আরও বেশি আক্রমণাত্মক হয়ে উঠবে। শর্ট বলের পরিকল্পনাটা আমরা আগেই করেছিলাম। মাঝপথে দ্রুত উইকেট তুলে নিতেই এই কাজ করেছি। উপমহাদেশের উইকেট অনেকখানি ধীরগতির। তাই নিউজিল্যান্ডের উইকেটে এখনও অভ্যন্ত হতে পারেননি বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা। সে কারণেই শর্ট বলে বিপাকে পড়ছেন তামিম-মুশফিকরা। তারা অতিরিক্ত গতি, বাউন্সের সঙ্গে অভ্যস্থ নন। এই জায়গাটা ধরেই আমরা এগোচ্ছি। কাজে লাগানোর চেষ্টা করছি।’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘আমরা পরের ম্যাচের দিকে তাকিয়ে আছি, আগের ম্যাচের পুনরাবৃত্তি ছাড়া আর কিছু ভাবছি না। আমি মনে করি দ্বিতীয় ম্যাচেও আমাদের জন্য খুব ভাল কিছু অপেক্ষা করছে।’
×