ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত সড়ক নির্মাণ ও যৌথ ভূমি জরিপে মতৈক্য

প্রকাশিত: ০৫:৪৩, ২৯ ডিসেম্বর ২০১৬

বাংলাদেশ-ভারত  সীমান্ত সড়ক নির্মাণ ও যৌথ  ভূমি জরিপে  মতৈক্য

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম অফিস ॥ সীমান্ত এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার সড়ক নির্মাণ, যৌথ ভূমি জরিপ, অপ্রয়োজনীয় উত্তেজনা ও সংঘর্ষ পরিহার, নারী ও শিশু পাচার রোধ এবং আন্তঃসীমান্ত অপরাধ ও সন্ত্রাস বন্ধে মতৈক্য হয়েছে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তবর্তী জেলা প্রতিনিধি সম্মেলনে। বুধবার চট্টগ্রাম নগরীর মোটেল সৈকতে আয়োজিত এ সম্মেলনে অংশ নেন উভয় দেশের সীমান্তবর্তী ৬টি জেলার প্রশাসক, বিজিবি প্রতিনিধি, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এবং অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটসহ প্রতিনিধিরা। অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এ সম্মেলনে উপনীত সমঝোতার ভিত্তিতে আজ বৃহস্পতিবার একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে বলে আশা করছেন আয়োজকরা। চট্টগ্রামে আয়োজিত এ সম্মেলন উদ্বোধন করেন বিভাগীয় কমিশনার রুহুল আমিন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রামে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার সোমনাথ হালদার, বাংলাদেশের পক্ষে নেতৃত্বদানকারী খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ ওয়াহিদুজ্জামান ও ভারতের পক্ষে নেতৃত্বদানকারী উনাকাটির জেলা ম্যাজিস্ট্রেট পি আর ভট্টাচার্য। এছাড়া বাংলাদেশের পক্ষে রাঙ্গামাটি ও মৌলভীবাজার জেলা এবং ভারতের পক্ষে ধলাই ও উত্তর ত্রিপুরা জেলার প্রতিনিধিরা সম্মেলনে যোগ দেন। স্বাগত বক্তব্যে বাংলাদেশের পক্ষে নেতৃত্বদানকারী খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক দু’দেশের মধ্যে সুসম্পর্কের ভিত্তি, ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট এবং সাম্প্রতিক অবস্থা তুলে ধরে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও সুদৃঢ়করণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। ভারতীয় দলের নেতা পি আর ভট্টাচার্যও তাঁর বক্তব্যে সম্পর্কের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞার বিষয়টি তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সুসম্পর্কের ভিত্তি ঐতিহাসিক। সীমান্তে সৌহার্দ্য, সাংস্কৃতিক আদান-প্রদানসহ নানাক্ষেত্রে আরও উন্নয়ন ঘটিয়ে দু’দেশের মধ্যে আস্থা ও বিশ্বাস সুদৃঢ় করা সম্ভব বলে মতব্যক্ত করেন তিনি। চট্টগ্রামে বাংলাদেশ ও ভারতের সীমান্তবর্তী জেলা প্রতিনিধি সম্মেলন শুরু হয় বুধবার সকাল ১০টায়। সম্মেলনে আলোচ্যসূচীর মধ্যে ছিল সীমান্ত এলাকায় নিরাপত্তা রক্ষায় সড়ক নির্মাণ, সীমান্ত হাট প্রতিষ্ঠা, সীমান্ত এলাকায় যৌথ ভূমি জরিপ সম্পন্ন করা, অপ্রয়োজনীয় উত্তেজনা ও সংঘর্ষ পরিহার, নারী ও শিশু পাচার রোধ, মাদক চোরাচালান রোধ, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, আন্তঃসীমান্ত অপরাধ ও সন্ত্রাস নিরোধ, বিজিবি-বিএসএফ যৌথ টহল জোরদার, সীমান্ত এলাকায় নদ-নদীর বাঁধ ও বন্যা নিয়ন্ত্রণ, উভয় দেশের মধ্যে সাংস্কৃতিক আদান-প্রদান এবং জাল নোট রোধ করা। আলোচনায় এ বিষয়গুলোতে একমত দু’দেশের প্রতিনিধিরাই। বাংলাদেশের তিন সীমান্তবর্তী জেলা এবং ভারতের তিন সীমান্তবর্তী জেলাসহ ৬ জেলার প্রশাসকগণের মধ্যে অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। অত্যন্ত আন্তরিকতা প্রদর্শন করেন উভয় পক্ষই। গৃহীত সিদ্ধান্তের আলোকে আজ বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে। আলোচক প্রায় সকলেই বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সম্পর্ক সাম্প্রতিক অতীতের যে কোন সময়ের তুলনায় ভাল। দু’দেশের জনগণের মধ্যেও রয়েছে সুদৃঢ় সম্পর্কের বন্ধন। অতীতের আলোকে এ সম্পর্কের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে প্রতিশ্রুতির কথাই বেরিয়ে আসে প্রতিনিধিদের বক্তব্যে। সম্মেলনে সীমান্তবর্তী দু’দেশের জেলা প্রতিনিধিরা পৃথক পৃথকভাবেও বৈঠক করেন। বৈঠক ফলপ্রসূ বলে অভিমত ব্যক্ত করা হয়েছে আয়োজকদের পক্ষ থেকে।
×