ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

আলোচনা সভায় ওবায়দুল কাদের

বঙ্গবন্ধুর পরিবারকে এখনও ধ্বংস করার চক্রান্ত চলছে

প্রকাশিত: ০৫:৪২, ২৯ ডিসেম্বর ২০১৬

বঙ্গবন্ধুর পরিবারকে এখনও ধ্বংস করার চক্রান্ত চলছে

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বিএনপি নেতাদের বক্তব্যের জবাবে বলেছেন, বাংলাদেশ ব্যর্থ দেশ নয়। বিএনপি নিজেদের কৃতকর্মের কারণে ব্যর্থ দলে পরিণত হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ দ্রুত সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যাচ্ছে। সাম্প্রদায়িক ও জঙ্গীবাদী শক্তিকে পরাজিত করতে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির ঐক্যের কোন বিকল্প নেই। বুধবার বিকেলে ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে মুক্তিযোদ্ধা বঙ্গবন্ধু পরিষদ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি এ কথা বলেন। নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন নিয়ে খালেদা জিয়ার দেয়া বক্তব্যের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ষড়যন্ত্রের মধ্য দিয়ে যাদের জন্ম, ষড়যন্ত্রের মধ্য দিয়ে যাদের বিকাশÑ তারা সব সময় সব কিছুতেই ষড়যন্ত্র দেখে এবং ষড়যন্ত্রের কথা বলে। নারায়ণগঞ্জ নির্বাচন নিয়ে যেখানে সমগ্র বিশ্ব বলছে নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে হয়েছে, সেখানে পরাজিত বিএনপি ষড়যন্ত্রের গন্ধ খুঁজে বেড়াচ্ছে। এদের রাজনীতির শেষটা কোথায়Ñ সেটা সবাই জানে। ওবায়দুল কাদের বলেন, ৪১ বছর পর বাংলাদেশে সবচেয়ে সাহসী ও দক্ষ প্রশাসক হলেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। এই ৪১ বছরে তিনি সবচেয়ে বেশি জীবনের ঝুঁকি নিয়েছেন। বঙ্গবন্ধু আমাদের রাজনৈতিক আদর্শ। আর শেখ হাসিনা হলেন উন্নয়নের আদর্শ। তাই বঙ্গবন্ধুর পরিবারকে এখনও ধ্বংস করে দেয়ার চক্রান্ত চলছে। এটাকে খুব হালকাভাবে উড়িয়ে দেয়ার কোন কারণ নেই। শেখ হাসিনাকে ১৯ বার হত্যাচেষ্টা হয়েছে। এবার তাকে হত্যাচেষ্টায় ২০তম পরিকল্পনা করা হয়েছিল। কিন্তু তিনি আল্লাহর অশেষ রহমতে বেঁচে গেছেন। এটাকে বিচ্ছিন্নভাবে দেখার কোন উপায় নেই। তিনি বলেন, শেখ হাসিনা হচ্ছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা। তাই বিপদ কিন্তু এখনও আছে। বিপদ এখনও যায়নি। এখনও যথেষ্ট ভয়ের কারণ ও শঙ্কাহীন উদ্বেগ আছে। বঙ্গবন্ধু কন্যাও শঙ্কিত কিন্তু বিচলিত নন। তার উদ্বিগ্ন হওয়ার যথেষ্ট কারণ আছে। বিগত সময়ে দেশে সংঘটিত জঙ্গী হামলা ও অভিযানের প্রসঙ্গ তুলে ওবায়দুল কাদের বলেন, হলি আর্টিজান ও শোলাকিয়ার ঘটনার পর আমরা ভেবেছিলাম জঙ্গীরা হয়ত শেষ। কারণ আমরা একটা সঙ্কুচিত জাতি। আমরা একটা প্রবলেম আসলে রি-এ্যাকটিভ হয়ে উঠি। কিন্তু এই প্রবলেমটা আসতে পারে তার আশঙ্কা আগে করতে পারি না। এজন্য দলীয় নেতাকর্মী, বঙ্গবন্ধু প্রেমিক ও সৈনিকদের উদ্দেশে কাদের বলেন, আজকে আমাদের রাজনীতি রি-এ্যাকটিভ না হয়ে প্রো-এ্যাকটিভ হতে হবে। মিলিট্যান্সির নতুন ডাইমেনশন সৃষ্টি হয়েছে। আত্মঘাতী নারী, আত্মঘাতী কিশোর এবং ঢাল হিসেবে শিশুকে ব্যবহার করে পরিবারভিত্তিক মিলিট্যান্সি স্কোয়াড তারা গঠন করছে। আত্মঘাতী হামলা একটা গ্লোবাল ফেনোমেনন। জঙ্গীবিরোধী সফল অভিযান পরিচালনার জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। তলে তলে তারা যে আরও ভয়াবহ আক্রমণের প্রস্তুতি নিচ্ছে নাÑ এটা ভাবার নিশ্চয়তা নেই। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আজকে আমাদের বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক উগ্রবাদের বিষবৃক্ষকে উপড়ে ফেলার শপথ নিতে হবে। এটা খ- খ- করে উপড়ে ফেললে কিছুই হবে না। এ কারণে মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের সকল মানুষকে আমাদের আস্থা ও নির্ভরযোগ্য ঠিকানা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই উগ্র সাম্প্রদায়িকতার বিষবৃক্ষকে উপড়ে ফেলে তাদের প্রতিরোধ ও পরাজিত করতে হবে। বিজয়ের মাসে এটাই হোক আমাদের শপথ। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু যে স্বপ্ন নিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীন করেছিলেন, আমরা সেই পাকিস্তানকে আর্থ-সামাজিক ও অর্থনৈতিকসহ সকল সূচকে পেছনে ফেলে এগিয়ে যাচ্ছি। পাকিস্তান আজকে বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক রাষ্ট্র। আজকে কোথায় পাকিস্তান আর কোথায় বাংলাদেশ। আমরা আজকে বিশ্বের কাছে উন্নয়নের রোল মডেল। তবে পাকিস্তান শুধু বাংলাদেশের চেয়ে পরমাণু বোমার সূচকে এগিয়ে আছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। সাম্প্রদায়িক শক্তিকে পরাজিত করতে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সকল শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, সাম্প্রদায়িক ও জঙ্গীবাদী শক্তিকে পরাজিত করতে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির ঐক্যের কোন বিকল্প নেই। ১৯৭১ সালে যেমন জাতির পিতার নেতৃত্বে দেশের মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল, তেমনি এখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সবাইকে আবারও ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ডাঃ এসএ মালেকের সভাপতিত্বে সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ, বঙ্গবন্ধু পরিষদের নেতা মাহবুব উদ্দিন বীরবিক্রম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপচার্য অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জমান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
×