ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

তাজকিয়া নুর মুন

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের আলোচিত ঘটনা

প্রকাশিত: ০৬:২৫, ২৮ ডিসেম্বর ২০১৬

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের আলোচিত ঘটনা

টি২০র চ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজ ॥ ২০১৬ সালে যেন পুনর্জন্ম হয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেটের। চার মাসের মধ্যে ক্যারিবিয়ান ক্রিকেটে সুবর্ণ উৎসব রচিত হয়। অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেটের পর নারীদের বিশ্ব শিরোপা জয়ের দিনে ওয়েস্ট ইন্ডিজ টি২০ বিশ্বকাপও জিতে নেয়। শ্বাসরুদ্ধকর ফাইনালে ইংল্যান্ডকে ৪ উইকেটে হারিয়ে প্রথম দল হিসেবে দ্বিতীয়বার টি২০ বিশ্বকাপ জয়ের রেকর্ড গড়ে ব্রায়ান লারার দেশ। ক্রিকেটের নন্দন কানন ইডেন গার্ডেন্সে ফাইনালের মঞ্চে এ্যাকশন হিরো ছিলেন কার্লোস ব্রাথওয়েট। মাত্র ১০ বলে অপরাজিত ৩৪ রানের ম্যাচজয়ী অসাধারণ ইনিংস উপহার দেন তিনি। শেষ ওভারে জয়ের জন্য ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রয়োজন ছিল ১৯ রান। বিধ্বংসী ব্রাথওয়েট ইংলিশ বোলার বেন স্টোকসের প্রথম চার বলেই ছক্কা হাঁকিয়ে অবিশ্বাস্য জয় উপহার দেন ক্যারিবীয়দের। উইন্ডিজকে দ্বিতীয় টি২০ বিশ্বকাজয়ে নেতৃত্ব দেন ড্যারেন সামি। কিন্তু কাকতালীয়ভাবে বিশ্বকাপের পর পরই দল থেকে বাদ পড়েন তিনি! বর্ষসেরা রবিচন্দ্রন অশ্বিন ॥ বিদায়ী বছরে আইসিসির বর্ষসেরা ক্রিকেটারের পুরস্কার ‘স্যার গারফিল্ড সোবার্স ট্রফি’ জিতেছেন ভারতীয় স্প্রিনার রবিচন্দ্রন অশ্বিন। আইসিসি টেস্ট র‌্যাঙ্কিংয়ের সেরা বোলার ও অলরাউন্ডার জিতেছেন বছরের সেরা টেস্ট খেলোয়াড়ের পুরস্কারও। ভারতের হয়ে এর আগে সেরা ক্রিকেটারের পুরস্কার জিতেছিলেন কেবল রাহুল দ্রাবিড় ও শচীন টেন্ডুলকর। তৃতীয় ভারতীয় ক্রিকেটার হিসেবে আইসিসির বর্ষসেরা ক্রিকেটার হয়েছেন তিনি। বছরজুড়ে আশ্বিন অবিশ্বাস্য পারফর্ম করেন। নিজে উঠে আসেন অলরাউন্ডার র‌্যাঙ্কিংয়ের এক নম্বরে। তার দেশ ভারত যে শীর্ষস্থান দখল করে তাতে বড় অবদান আশ্বিনেরই। আইসিসির ভোটিং চলাকালীন সময়ে অশ্বিন ৮ টেস্টে ৪৮ উইকেট নিয়েছেন এবং ৩৩৬ রান করেছেন। আবার ১৯ টি২০ ম্যাচে পেয়েছেন ২৭ উইকেট। শুধুমাত্র ২০১৬ সালেই অশ্বিনের ঝুলিতে যোগ হয়েছে ১২ টেস্টে ৭২ উইকেট! এ বছরই ইতিহাসের দ্বিতীয় দ্রুততম বোলার হিসেবে টেস্টে ২০০ উইকেট শিকারের মাইলফলক ছুঁয়েছেন তিনি। অবিশ্বাস্য বিরাট কোহলি ॥ টেস্ট, ওয়ানডে কিংবা টি২০, তিন ভার্সনে বরাবরাই বিধ্বংসী ব্যাটসম্যানের নাম কোহলি। বিদায়ের পথে থাকা ২০১৬ সালে ওয়ানডেতে ১০ ইনিংসে ৯২.৩৭ গড়ে তার মোট রান ৭৩৯। সর্বোচ্চ অপরাজিত ১৫৪সহ সেঞ্চুরি ৩টি। টি২০তে ১৩ ইনিংসে ৬৪১ রান। গড় ১০৬.৮৩! ২০০৮ সালে ওয়ানডে দিয়ে অভিষেক, ২০১১Ñএ আভিজাত্যের টেস্টে পা রাখেন। নিন্দুকদের অভিযোগ, রঙিন পোশাকের তুলনায় টেস্টে অতটা ভাল নন তিনি। সম্প্রতি সেখানেও নিজেকে মেলে ধরেছেন। চলতি বছর ১৮ ইনিংসে ৭৫.১৩ গড়ে করেছেন ১২৫ রান। সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ২৩৫ রানের ইনংসসহ হাঁকিয়েছেন মোট তিনটি ডবল সেঞ্চুরি! ২০১৬ সালে তিন ভার্সন মিলিয়ে তার মোট রান ২৫৯৫। রিয়েল রান মেশিন বলতে যা বোঝায়। এ বছর ক্রিকেটের তিন সংস্করণের সবকটিতেই ’৭৫Ñএর ওপরে গড়। তার নেতৃত্বে টানা পাঁচটি সিরিজ জেতে ভারত, অপরাজিত থাকে রেকর্ড ১৮ টেস্টে। করুণ নায়ারের ট্রিপল সেঞ্চুরি ॥ ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে চেন্নাই টেস্টে বীরেন্দ্র শেবাগের পর মাত্র দ্বিতীয় ভারতীয় হিসেবে দেশকে ট্রিপল সেঞ্চুরি উপহার দেন করুণ নায়ার। ৩৮১ বলে হার মানা ৩০৩ রানের ইতিহাস গড়া ইনিংস খেলেন ২৫ বছর বয়সী ব্যাটসম্যান। এমএ চিদাম্বরাম স্টেডিয়ামেই ২০০৮ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ৩১৯ রানের অনবদ্য ইনিংসে খেলেছিলেন শেবাগ। সাড়ে আট বছর পর সেই একই স্টেডিয়ামে তিনশো রানের কীর্তিগাথা রচনা করেন নায়ার। বিদেশে সফল দক্ষিণ আফ্রিকা ॥ চলতি বছর বেশিরভাগ শীর্ষ দল তাদের দেশে ভালো ফল করলেও দেশের বাইরে গিয়ে সাফল্য দেখাতে পারেনি? তবে ব্যতিক্রম ছিল দক্ষিণ আফ্রিকা? অস্ট্রেলিয়ায় গিয়ে তারা ২-১-এ টেস্ট সিরিজ জয় করেছে? একাধিক দিবারাত্রির টেস্ট ॥ ফ্লাডলাইটে একদিনের ম্যাচ প্রথম হয়েছিল ১৯৭৯ সালে। তবে প্রথম টেস্টম্যাচ হয় মাত্র গত বছর, অর্থাৎ ২০১৫ সালে? এ বছর ফ্লাডলাইটের আলোয় মোট তিনটি টেস্টম্যাচ হয়েছে। এর মধ্যে একটি দুবাইয়ে পাকিস্তান-ওয়েস্ট ইন্ডিজ। বাকি দুটি এ্যাডেলেইড আর ব্রিসবেনে। যথাক্রমে অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া-দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যে। ওয়ানডের শীর্ষে অস্ট্রেলিয়া ॥ ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত খেলা ম্যাচগুলো হিসেবে ধরে আইসিসি বলছে র‌্যাংকিংয়ের শীর্ষে আছে অসিরা। তাদের পয়েন্ট ১২০। বাংলাদেশ আছে সাত নম্বরে। সংগ্রহ ৯৫ পয়েন্ট। তারপর আছে পাকিস্তান (৮৯) এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজ (৮৬)। টেস্টে ভারতের দাপট ॥ বিরাট কোহলি ও রবিচন্দ্রন আশ্বিনের পারফরমেন্সের ওপর ভর করে ভারত টেস্ট র‌্যাংকিংয়ে এখন সবার উপরে আছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজে গিয়ে সিরিজ জয় ও নিজের দেশে নিউজিল্যান্ড ও ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে জয় পাওয়ায় ভারত এখন শীর্ষে। বছরের একটা সময় কিছুদিনের জন্য সেই অবস্থানে ছিল পাকিস্তান। ওয়ানডেতে সুপার ওয়ার্নার ॥ অস্ট্রেলিয়ার ডেভিড ওয়ার্নার চলতি বছর (ডিসেম্বরের ২০ তারিখ পর্যন্ত) সাতটি সেঞ্চুরি করেছেন। ফলে ওডিআইতে ক্রিকেট বিশ্বের আর সবার চেয়ে তাঁর ঝুলিতেই সবচেয়ে বেশি রান (২৩ ম্যাচে ১,৩৮৮ রান)। তাঁর পরেই আছেন অসি অধিনায়ক স্মিথ (২৬ ম্যাচে ১,১৫৪ রান)।
×