ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

বিদায়ী মার্কিন প্রেসিডেন্টের দাবি উড়িয়ে দিলেন ট্রাম্প

ওবামা জিততে পারতেন না

প্রকাশিত: ০৫:৪৯, ২৮ ডিসেম্বর ২০১৬

ওবামা জিততে পারতেন না

মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বলেছেন, তিনি এবার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারলে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে হারিয়ে দিতেন। সিএনএনের বিশ্লেষক ডেভিড এ্যাক্সেলরডকে সোমবার দেয়া এক সাক্ষাতকারে তিনি এ কথা বলেন। তার এই বক্তব্যের ত্বরিত জবাব দিয়েছেন রিপাবিলকান দল থেকে নির্বাচিত দেশটির পরবর্তী প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। তিনি মনে করেন, বেকারত্ব, আইসিস এবং ওবামাকেয়ারের মতো ঘটনাগুলোর জন্য ওবামার নির্বাচনে জেতার কোন সম্ভাবনাই ছিল না। খবর সিএনএন ও ওয়াশিংটন পোস্ট অনলাইনের। ওবামা মনে করেন, ট্রাম্পকে হারানোর সামর্থ্য তার ছিল। তিনি বলেন, হিলারি ক্লিনটন এ নির্বাচনে মোটের ওপর ভাল করেছেন এবং রিপাবলিকান প্রার্থীর সঙ্গে উপযুক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। ওবামা ‘আমাদের কি করেছি সেদিকটির ওপরই এখন জোর দেয়া প্রয়োজন।’ সাক্ষাতকার গ্রহণকারী এ্যাক্সেলরড ওবামার সাবেক উপদেষ্টা ও দীর্ঘদিনের বন্ধু। তাকে ওবামা বলেন যে, রিপাবলিকানদের কৌশলই হলো তার সব পরিকল্পনা রুখে দেয়ার চেষ্টা করা। হিলারির প্রতি সহানুভূতিসূচক সুরে ওবামা বলেন, হিলারি বিভিন্ন সময়ে অন্যায় আক্রমণের শিকার হয়েছেন। সম্প্রতি আরেকটি সাক্ষাতকারে ওবামা বলেছিলেন, তিনি মনে করেন না হিলারির পরাজয়ের অর্থ এই নয় যে প্রেসিডেন্ট হিসেবে তার আট বছরের কর্মকা- জনগণ প্রত্যাখ্যান করেছে। বরং ডেমোক্র্যাটিক প্রার্থীকে জয়ের জন্য তিনি তাদের যেভাবে পরামর্শ দিয়েছিলেন তারা সেটি যথাযথভাবে কাজে লাগাতে পারেনি। সর্বশেষ সাক্ষাতকারে তিনি বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে পুরোপুরি আত্মবিশ্বাসী যে, নির্বাচনে দাঁড়ালে ট্রাম্পকে হারাতে পারতাম। আমেরিকার জনগণ হয়ত আবারও তাকে সমর্থন দিত।২০০৮ সালে প্রথম দফার নির্বাচনে পরিবর্তনের ডাক দিয়ে জয়ের কথা মনে করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, “আমি আত্মবিশ্বাসী; যদি দাঁড়াতে পারতাম, তাহলে জিততাম। আমার মনে হয়, অধিকাংশ আমেরিকানকে আমি এক কাতারে আনতে পারতাম। ট্রাম্প এর জবাব দিয়েছেন এক টুইটে। বলেছেন, ‘কোন মতেই না।’ তিনি মনে করিয়ে দিয়েছেন, ওবামার সময়ই বহু কোম্পানি যুক্তরাষ্ট্র থেকে অফিস সরিয়ে নিয়েছে। ইসলামিক স্টেটের মতো জঙ্গী গ্রুপের আবির্ভাব ঘটেছে। তথাকথিত ‘ওবামাকেয়ার’ বা স্বাস্থ্যসেবা সংস্কার করেও সুবিধা করতে পারেননি। হিলারির মুখপাত্র ব্রায়ান ফ্যালনও এক টুইটে বলেছেন, আবার দাঁড়ালে ওবামা জিততেন। আবার হিলারিও জিততে পারতেন যদি পররাষ্ট্র মন্ত্রী থাকাকালে তার রাষ্ট্রীয় কাজে ব্যক্তিগত ই মেইল সার্ভার ব্যবহার করার ঘটনা নিয়ে ভোটের আগে আগে এফবিআই নতুন করে ঝামেলা না করত। ভোটের মাত্র দুদিন আগে তদন্ত সংস্থা এফবিআই ইমেইল ইস্যুতে হিলারিকে নির্দোষ হওয়ার বিষয়ে ছাড়পত্র দিলেও ভোটের মাঠে এর কোন প্রভাব পড়েনি। নির্বাচনের দিন যা বেশ ভালমতোই টের পান হিলারি ও তার সমর্থকরা। নির্বাচনে ট্রাম্প পান ৩০৬ ইলেক্টোরাল ভোট আর হিলারি ২৩২টি ভোট। পপুলার ভোট পান হিলারি ৪৮.২ শতাংশ এবং ট্রাম্প ৪৬.১ শতাংশ। ওবামার বিরুদ্ধে ইসরাইলের হুঁশিয়ারি ॥ ইসরাইল মনে করে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে সদ্য পাস হওয়া নিন্দা প্রস্তাবের নেপথ্যে ওবামার হাত ছিল। অধিকৃত ফিলিস্তিনী ভূখ-ে ইহুদি বসতি নির্মাণের সমালোচনা শুক্রবার নিরাপত্তা পরিষদ একটি প্রস্তাব পাস করে। যুক্তরাষ্ট্র এতে ভেটো দেয়নি। পক্ষেও ভোট দেয়নি। প্রস্তাবটি পাস হতে দেয়ায় ইসরাইল যুক্তরাষ্ট্রের বিদায়ী প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার প্রশাসনের ওপর বেজায় ক্ষুব্ধ হয়। ফিলিস্তিনী কর্তৃপক্ষ অবশ্য নিরাপত্তা পরিষদের প্রশংসা করে। নেতানিয়াহুর ঘনিষ্ঠ কর্মকর্তারা দাবি করেছেন, আরব সূত্রে তারা জানতে পেরেছেন ওবামা প্রশাসনই ওই প্রস্তাবের খসড়া তৈরি করে দিয়েছিল। যদিও যুক্তরাষ্ট্র ভোটদানে বিরত ছিল। এ ব্যাপারে ইসরাইলের হাতে যেসব প্রমাণ রয়েছে তা ট্রাম্প ক্ষমতা গ্রহণের পর তার প্রশাসনের হাতে তুলে দেয়া হবে বলে নেতানিয়াহুর মুখপাত্র ডেভিড কেইয়েস সোমবার ফক্স নিউজকে জানিয়েছেন। এদিকে শুক্রবার নিরাপত্তা পরিষদের ২৩৩৪ নম্বর প্রস্তাবে যেসব দেশ ইসরাইলের বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছে সেদেশগুলোর সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার উদ্যোগ নিয়েছে তেল আবিব।
×