ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বোরো চাষ বাড়াতে মরা খাল খনন জরুরী

প্রকাশিত: ০৫:৫৩, ২৭ ডিসেম্বর ২০১৬

বোরো চাষ বাড়াতে মরা খাল খনন জরুরী

স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল ॥ ধান, নদী, খাল এই তিনে বরিশাল হলেও দীর্ঘদিন যাবত উত্তর বরিশালের গৌরনদী, আগৈলঝাড়া, উজিরপুর ও বাবুগঞ্জ উপজেলার জনগুরুত্বপূর্ণ খালগুলো পুনঃখনন না করার ফলে এসব এলাকার বোরো চাষে বিরূপ প্রভাবের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বিএডিসি সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪-১৫ ও ২০১৫-১৬ অর্থবছরে গৌরনদী ও আগৈলঝাড়া উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের ভরাট হয়ে যাওয়া ২২.৫ কিলোমিটার খাল পুনঃখনন করা হয়েছে। খালগুলো পুনঃখননের ফলে ৬০ থেকে ৭০টি ব্লক বোরো চাষের আওতায় এসেছে। কৃষিকাজের জন্য এবং এলাকার জলাবদ্ধতা নিরসনে এখনও প্রায় ৫০ কিলোমিটার খাল পুনঃখনন ও খননকৃত খালগুলোর পলি অপসারণ জরুরী হয়ে পড়েছে।গৌরনদী উপজেলার মাহিলাড়া ইউনিয়নের পূর্ব শরিফাবাদ গ্রামের বোরো ব্লকের ম্যানেজার ইদ্রিস হাওলাদার, হাপানিয়া গ্রামের রহিম সরদার জানান, তাদের আওতাধীন হাপানিয়া-শরিফাবাদ এলাকার তিন কিলোমিটার খাল পুনঃখননের ফলে ৩শ’ একর জমিতে চৈত্র-বৈশাখ মাসে প্রচ- খরার সময়ও দিব্যি পানি সরবরাহ করতে পারছেন। ফলে ধানের ফলন আগের চেয়ে অনেকাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। পূর্ব মাহিলাড়া বোরো ব্লকের ম্যানেজার নাজমুল সরদার জানান, গত অর্থবছরে মাহিলাড়া-নলচিড়া খাল পুনঃখননের ফলে তার ব্লকে বোরোর বাম্পার ফলন হয়েছে। মাহিলাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সৈকত গুহ পিকলু জানান, তার ইউনিয়নে বিএডিসির অর্থায়নে গত কয়েক বছরের ব্যবধানে কয়েক কিলোমিটার খাল পুনঃখনন করা হয়েছে। ফলে ইউনিয়নের অনেক অনাবাদি জমিতে ধান ও শাকসবজির ফলন বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনি আরও জানান, এখনও গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি খাল পুনঃখনন করা হলে ইউনিয়নে কৃষিকাজের জন্য পানির ঘাটতি থাকবে না। চাঁদশী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কৃষ্ণ কান্ত দে জানান, তার ইউনিয়নে একটি খাল পুনঃখনন করা হয়েছে। এখনও অনেক গুরুত্বপূর্ণ খননযোগ্য খাল রয়েছে, যা কৃষিকাজের জন্য পুনঃখনন করা জরুরী হয়ে পড়েছে। বাটাজোর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুর রব হাওলাদার জানান, বাটাজোর-শৌলকরের মরা খাল পুনঃখননের ফলে অনেক অনাবাদি জমি চাষের আওতায় এসেছে। বাকাল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বিপুল দাস জানান, তার ইউনিয়নের খালগুলো দীর্ঘদিনেও খনন না করার ফলে বর্ষার পানি খালে নামতে পারছে না। অপরদিকে বোরো মৌসুমে খালে পানি না থাকায় বোরো চাষের জন্য কৃষকদের জোয়ারের পানির ওপর নির্ভরশীল হতে হয়। ইউপি চেয়ারম্যানরা আরও জানান, বিভিন্ন সময়ে তাদের কাছ থেকে খাল পুনঃখননের জন্য তালিকা নেয়া সত্ত্বেও অদ্যবধি জনগুরুত্বপূর্ণ খালগুলো পুনঃখনন করা হচ্ছে না। জরুরীভিত্তিতে খালগুলো পুনঃখনন করা না হলে বোরো মৌসুমে ধান চাষে বিরূপ প্রভাবের আশঙ্কা রয়েছে। তাই খালগুলো পুনঃখননের জন্য তারা সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছেন। গৌরনদী উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা কৃষিবিদ নজরুল ইসলাম জানান, উপজেলায় অনেক খাল রয়েছে, যা অনেকাংশে ভরাট হয়ে গেছে।
×