ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ক্ষমতায় গেলে সংখ্যালঘুদের জন্য কোটা ব্যবস্থা চালু করব ॥ এরশাদ

প্রকাশিত: ০৫:৩২, ২৭ ডিসেম্বর ২০১৬

ক্ষমতায় গেলে সংখ্যালঘুদের জন্য কোটা ব্যবস্থা চালু করব ॥ এরশাদ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ফের ক্ষমতায় গেলে জাতীয় সংসদ, সরকারী চাকরি এবং উচ্চশিক্ষায় ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের জন্য কোটা ব্যবস্থা চালুর ঘোষণা দিয়েছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। সোমবার শুভ বড়দিন উপলক্ষে খ্রীস্টান সম্প্রদায়ের নাগরিকদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়ে এরশাদ এ ঘোষণা দেন। দলীয় চেয়ারম্যানের বনানী কার্যালয়ে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এ সময় খ্রীস্টান সম্প্রদায়ের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দসহ দলের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন। এরশাদ বলেন, আমি ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের জন্য সংসদে প্রতিনিধিত্ব এবং চাকরি ও উচ্চশিক্ষার জন্য কোটা প্রবর্তন করতে চাই। আপনারা পাশে থাকলেই জাতীয় পার্টি আবার ক্ষমতায় যেতে পারবে, এ বিশ্বাস আমার আছে। এ সময় খ্রীস্টান নেতাদের সঙ্গে নিয়ে বড়দিনের কেক কাটেন এরশাদ। এরশাদ তার বক্তব্যে বলেন, আমাদের জন্য এটা অত্যন্ত গর্বের বিষয় যে, প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ থেকে একজন কার্ডিনাল হয়েছেন। আমিই বাংলাদেশের প্রথম এবং একমাত্র রাষ্ট্রপতি যে ভ্যাটিকানে পোপের সঙ্গে দেখা করেছি এবং তাকে বাংলাদেশে দাওয়াত দিয়ে নিয়ে এসেছি। নিজের শাসনামলে খ্রীস্টানদের জন্য কল্যাণ ট্রাস্ট করার উদ্যোগ নিলেও সেসময় সম্প্রদায়ের নেতাদের পাশে না পাওয়ার কথা জানান তিনি। ক্ষমতায় থেকে আমি কোনদিন কারও প্রতি বৈষম্য করিনি উল্লেখ করে এরশাদ বলেন, অথচ এখন দেখছি পাদ্রি, নিরীহ খ্রীস্টান নাগরিকদের হত্যা করা হচ্ছে। মানুষের জানমালের নিরাপত্তা নেই। এ অবস্থার পরিবর্তন দরকার। আর পরিবর্তনের জন্য প্রয়োজন জাতীয় পার্টি। আপনারা জাতীয় পার্টিকে শক্তিশালী করুন। এরশাদ বলেছেন, বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ হিসেবে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের জান-মালের নিরাপত্তাসহ তাদের সকল নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। তারা যাতে কোনভাবে বঞ্চিত না হয় সেজন্য সংসদে সংরক্ষিত আসন, সরকারী চাকরি এবং উচ্চ শিক্ষার সুযোগের ক্ষেত্রে কোটা ব্যবস্থা প্রবর্তন করতে হবে। খ্রীস্টান সম্প্রদায়ের গাজীপুর অঞ্চলের নেতা মি. ডেভিড গমেজের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত শুভেচ্ছা বিনিময় সভায় বক্তব্য বাখেন, জাতীয় পার্টির কো-চেয়াম্যান জি. এম. কাদের, মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার এমপি, প্রেসিডিয়াম সদস্য সুনীল শুভরায়, ভাইস চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম নুরু, কেন্দ্রীয় সদস্য জয়নাল আবেদীন, পিউস গমেজ ও রনি গমেজ। এ সময় কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রেসিডিয়াম সদস্য এস.এম. ফয়সাল চিশতী, ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুস সাত্তার প্রমুখ। এরশাদ বলেন, আমাদের খ্রীস্টান সম্প্রদায়ের ভাইয়েরা দেশকে সম্মানিত করেছেন। কারণ, এবার আমাদের দেশ থেকে প্রথমবারের মতো খ্রিস্টজগতের কার্ডিনাল নিযুক্ত হয়েছেন। তিনি বলেন, জাতীয় পার্টির শাসনামলে পোপ তৃতীয় জনপল বাংলাদেশে সফর করেছেন। আমার শাসনামলে সংখ্যালঘুদের নির্যাতনের শিকার হতে হয়নি। তাদের জানমালের নিরাপত্তা ছিল। তিনি বলেন, জাতীয় পার্টি আবার যদি ক্ষমতায় যেতে পারে- তাহলে সংখ্যালঘুদের স্বার্থ রক্ষা হবে, তাদের নিরাপত্তা থাকবে এবং ধর্মীয় স্বাধীনতা থাকবে। দেশে প্রতিহিংসার রাজনীতি চলছে ॥ জাতিকে শান্তির বাণী শুনিয়ে ক্ষমতায় এসে বিএনপি-আওয়ামী লীগ একে অপরের প্রতি প্রতিহিংসার রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়ে। যার মাসুল দিতে হয় সাধারণ জনগণকে। সন্ত্রাস, অরাজকতা ও প্রতিহিংসার থেকে জাতিকে মুক্ত করতে হলে এরশাদকে আবার রাষ্ট্রক্ষমতায় আনতে হবে। সোমবার জাপা চেয়ারম্যানের বনানী কার্যালয়ে দলের এক জানুয়ারি মহাসমাবেশ সফল করার লক্ষ্যে ঢাকা মহানগর উত্তরের এক যৌথসভায় দলের নেতারা এসব কথা বলেন। দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য এস এম ফয়সল চিশতি বলেন, দেশের বড় দুটি দল ক্ষমতার মোহে আজ অন্ধ হয়ে গেছে। জাতীয় কোন সমস্যা নিয়ে এদের রাজপথে দেখা যায় না। কিন্তু কিভাবে ক্ষমতায় যাওয়া যায় আর ক্ষমতা আঁকড়ে রাখা যায় সেজন্য একে অপরের প্রতি রীতিমত যুদ্ধ ঘোষণা করে। তিনি বলেন, রাজনীতিতে আজ সহাবস্থান নেই। যে যার মতো রাজনীতি করে যাচ্ছে। কোন জবাবদিহিতা নেই। নিজ দলের স্বার্থে জনবিরোধী ও ধ্বংসাত্মক কর্মসূচী দিতেও তাদের বিবেক বাধা দেয় না। তাই দেশবাসীও এদের কাছ থেকে মুক্তি চায়। আর জাতিকে এ থেকে মুক্ত করতে হলে এরশাদের হাতকে আরও শক্তিশালী করে রাষ্ট্রক্ষমতায় বসাতে হবে। যৌথসভায় বক্তব্য রাখেন দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য মেজর (অব) খালেদ আখতার, কেন্দ্রীয় নেতা শাহাদাৎ কবির চৌধুরী, সুলতান আহমেদ সেলিম, মোস্তাফিজু রহমান নাঈম, হাজী সিরাজ, আব্দুস সাত্তার, মোহাম্মদ আলী, কাজী আবুল খায়ের, সরদার নজরুল, আশিকুল আমিন, মোঃ আলী বাবু, মামুনুর রহমান প্রমুখ।
×