ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

নাব্যতা সংকটে মাঝ নদীতে আটকে আছে জাহাজ

প্রকাশিত: ২২:৫৯, ২৬ ডিসেম্বর ২০১৬

নাব্যতা সংকটে মাঝ নদীতে আটকে আছে জাহাজ

সংবাদদাতা, বেড়া, পাবনা ॥ উত্তরবঙ্গের ব্যবসায়িক প্রাণকেন্দ্র পাবনার নগড়বাড়ি। নগরবাড়ি দিয়ে সারা উত্তরবঙ্গের সার, সিমেন্ট, কয়লা সরবরাহ করা হয়। নবেম্বর থেকে শুরু করে যমুনা নদীতে নাব্যতা সংকটের সৃষ্টির কারণে এসব সার, সিমেন্ট, কয়লা, জিপসাম, ক্লিকারবাহী জাহাজ নগরবাড়ি ঘাটে ভিড়তে পারছে না। ড্রেজিং না থাকায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। ফলে এর সাথে জড়িত এ এলাকার প্রায় অর্ধশত ব্যবসায়ী দিনের পর দিন মোটা অংকের লোকসান গুণছে। এসব পণ্যের উপর নির্ভরশীল উত্তরবঙ্গের নানামুখী উন্নয়নমূলক কাজেও এসেছে ধীর গতি। নগরবাড়ি ঘাট ব্যবসায়িক সমিতির সদস্য, কয়েকটি চরে আটকে থাকা জাহাজের শ্রমিক, সারেং ও এলাকা সরেজমিনে ঘুরে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। জানা যায়, নাব্যতা সংকটের শুরু হয়েছে গত নবেম্বর মাস থেকে। গভীরতা ঠিক থাকলে প্রতিদিন পনের-বিশটি জাহাজ এ ঘাটে পৌছায়। কিন্তু নাব্যতার সংকট থাকায় কয়েকটি হালকা জাহাজ ছাড়া কোন জাহাজ ঘাটে নোঙর করতে পারছে না। বেড়া উপজেলার ঢালারচর ইউনিয়ের মোল্লার চর, চর নতীবপুর ও রাজবাড়ির দৌলতদিয়া পয়েন্টে পনের বিশটি জাহাজ চরে আটকে আছে। এসব জাহাজ থেকে ব্যবসায়ীরা ট্রলার ভাড়া করে পন্য খালাস করে বন্দরে আনছে। এতে তাদের প্রতিদিন ক্ষতি হচ্ছে প্রায় দশ লক্ষ টাকা। কোটি কোটি টাকা লোকসান দিয়ে পণ্য খালাস করায় বন্দরের ব্যবসা বাণিজ্য স্থবির হবার উপক্রম হয়েছে। মোল্লার চরে গিয়ে দেখা যায় সেখানে মংলা থেকে ছেড়ে আসা এমভি আল সেতু ১৬,০০০ ব্যাগ সার নিয়ে চারদিন ধরে আটকে আছে। সেখান থেকে চারদিনে কেবল চারহাজার বস্তা হালকা করা হয়েছে। হতাশ হয়ে এ জাহাজের মাষ্টার জামাল বলেন, ভাই খেয়ে না খেয়ে এই নদীর মাঝে চারদিন আটকে আছি। এছাড়াও এই চরে এম ভি আল মোয়াজ-২, আল্লার দান, এমভি ভি ইরেকটার্স সহ আরও কয়েকটি জাহাজও আটকে আছে। এখান থেকে নগরবাড়ির দুরত্ব প্রায় ১৫ কিলোমিটার। এছাড়া পাটুরিয়া পয়েন্টে এম ভি রানা খান ৮০০ মে.টন টিএসপি সার, এমভি আখি এক্সপ্রেস ৮০০ মে.টন টিএসপি ও এম ভি অনন্ত ৮০০ মে.টন টিএসপি সহ অন্তত ১০-১২ টি জাহাজ আটকে আছে। নগরবাড়ি ঘাট সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও পুরাণ ভারেঙ্গা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কে এম রফিক উল্ল্যাহ বলেন, এ অবস্থায় প্রতিদিন উত্তরবঙ্গের ১৬ জেলায় সার, সিমেন্ট ও কয়লা সরবরাহে বিঘœ ঘটছে। ফলে গুরুত্বপূর্ণ সরকারি স্থাপনা নির্মান বন্ধ থাকতে পারে। ড্রেজিং না করালে ব্যবসা থমকে যাবে। এ বিষয়ে বিআইডব্লিউটিএ এর আরিচা পোর্ট অফিসার শেখ মোহাম্মদ সেলিম রেজার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, এ মৌসুমে ছয় সাত ফুট গভীর পানিতে চলাচল করতে পারে কেবল সেসব জাহাজকে চলচলের কথা বারবার বলা হয়েছিল। সে মোতাবেক নির্দেশনাও রয়েছে। কিন্তু চালকরা তা না মানায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। ড্রেজিংয়ের বিষয়ে তিনি বলেন, ড্রেজিং ইতিমধ্যেই কয়েক স্থানে চলছে।
×