ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

গ্রামীণ ব্যাংক ভবন থেকে অবশেষে গুলশানে ভাড়া বাড়িতে ড. ইউনূস

প্রকাশিত: ০৮:০৮, ২৬ ডিসেম্বর ২০১৬

গ্রামীণ ব্যাংক ভবন  থেকে অবশেষে গুলশানে ভাড়া বাড়িতে ড. ইউনূস

বিডিনিউজ ॥ গ্রামীণ ব্যাংকের এমডির পদ থেকে অপসারণের প্রায় ছয় বছর পর গ্রামীণ ব্যাংক ভবন ছেড়ে গুলশানের একটি ভাড়া বাড়িতে উঠেছেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। গত বুধবার ইউনূস তার ৩০ বছরের আবাস ছেড়ে যান বলে এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে জানিয়েছেন ইউনূস সেন্টারের মহাব্যবস্থাপক এম এফ এম আমির খসরু। মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার কারণ দেখিয়ে ২০১১ সালের ২ মার্চ গ্রামীণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের পদ থেকে ইউনূসকে অপসারণ করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর বিরুদ্ধে আইনী লড়াইয়েও হেরে যান তিনি। তারপর থেকে সরকারের সঙ্গে নোবেলজয়ী ড. ইউনূসের সম্পর্কে টানাপড়েন চলছে। পাল্টাপাল্টি বক্তব্যও এসেছে বিভিন্ন সময়। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির সাবেক শিক্ষক ড. ইউনূস গত শতকের আশির দশকে প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে গ্রামীণ ব্যাংকের এমডির দায়িত্বে ছিলেন। এই দায়িত্ব পালনের মধ্যেই ২০০৬ সালে নোবেল পুরস্কার পান তিনি। অপসারণের পরও ইউনূসের কারণেই গ্রামীণ ব্যাংকের বিষয়ে সরকার কোন পদক্ষেপ নিতে পারছিল না বলে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত অভিযোগ করে আসছিলেন। এই ব্যাংকটির ৩০ শতাংশ শেয়ারের মালিকানা সরকারের হাতে। ঢাকার মিরপুর-২ নম্বরে বহুতল গ্রামীণ ব্যাংক ভবনে ব্যাংকটির প্রধান কার্যালয়। গ্রামীণ ব্যাংক ভবন কমপ্লেক্সের মধ্যেই পাঁচতলা করে আরও তিনটি ভবন আছে, যার একটি আবাসিক। ওই আবাসিক ভবনের নিচতলায় স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে থাকতেন ড. ইউনূস। তার ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠান ইউনূস সেন্টারের কার্যালয়ও গ্রামীণ ব্যাংক ভবনে। আমির খসরু ফেসবুকে লিখেছেন, “গত ৩০ বছর ধরে গ্রামীণ ব্যাংক কমপ্লেক্সে বাস করেছেন প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি গ্রামীণ ব্যাংককে নিজের সন্তানের মতো করে গড়ে তুলেছেন। এমনকি তিনি যখন দেশের বাইরে ছিলেন তখনও এখানে তার উপস্থিতি অনুভব করা যেত।... তিনি অনেক আগেই এখান থেকে সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেও গ্রামীণ পরিবারের অনুরোধে পারেননি। কিন্তু আমরা আর তাকে ধরে রাখতে পারলাম না। আমাদের সবাইকে চোখের জলে ভাসিয়ে তিনি আজ নতুন বাসায় চলে গেলেন। রবিবার গ্রামীণ ব্যাংক ভবনে গেলে সেখানকার কয়েক কর্মচারী জানান, বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে গ্রামীণ ব্যাংক ভবন ছেড়ে যান ইউনূস। ওই ভবন ছাড়ার সময় ছোট একটি অনুষ্ঠানে সবার উদ্দেশে বক্তব্যও দেন তিনি। ইউনূস যে ভবনে থাকতেন তার বেশিরভাগ আবসবাবপত্র গ্রামীণ ব্যাংক থেকে সরবরাহ করা জানিয়ে এক কর্মচারী বলেন, হাতেগোনা কিছু আসবাবপত্র স্যারের কেনা ছিল, চলে যাওয়ার সময় স্যার ওগুলো নিয়ে গেছেন। এই কর্মচারী বলেন, স্যারকে এমডির পদ থেকে অপসারণের পর ওনার মেয়ে ওই বাড়িতে আর থাকতে চাইতেন না। এখানে কোন অসুবিধা না থাকলেও মেয়ের কারণেই স্যার গুলশানে বাসা ভাড়া নিয়েছেন। গ্রামীণ ব্যাংকের উর্ধতন কয়েক কর্মকর্তা বুধবার ইউনূসকে গুলশানের বাড়িতে এগিয়ে দিয়ে এসেছেন। গুলশানের ১৬ তলা একটি ভবনের ১২ তলার ফ্ল্যাটে এই নোবেলজয়ী উঠেছেন বলে ওই কর্মচারী জানান। রবিবার বড়দিনের ছুটিতে গ্রামীণ ব্যাংক ভবনের সব শাখা বন্ধ থাকায় মুহাম্মদ ইউনূস গুলশানের কোন বাড়িতে উঠছেন সে তথ্য কোন কর্মচারীই জানাতে পারেননি।
×