ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ঢাকা-চট্টগ্রাম রাতের ট্রেনে নিরাপত্তাহীনতায় যাত্রীরা

প্রকাশিত: ০৫:৪১, ২৬ ডিসেম্বর ২০১৬

ঢাকা-চট্টগ্রাম রাতের ট্রেনে নিরাপত্তাহীনতায় যাত্রীরা

মাকসুদ আহমদ, চট্টগ্রাম অফিস ॥ ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলরুটে তূর্ণা নিশিতা এক্সপ্রেস ট্রেনকে ঘিরে অনির্ধারিত স্টপেজ দিয়ে বিনা টিকেটে যাত্রী তুলে চলছে বাণিজ্য। অনির্ধারিত যাত্রা বিরতির কারণে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে যাত্রীরা। ট্রেনের চালক, সহকারী চালক, গার্ড, টিটি ও জিআরপি সদস্যরা সিন্ডিকেট করে এই বাণিজ্য চালাচ্ছে বলে প্রমাণ মিলেছে। কারণ, নির্দিষ্ট স্টেশন ছাড়াও রাতের এই ট্রেন অনির্দিষ্ট কিছু স্টেশনে থেমে যাত্রী উঠানামা করছে অর্থের বিনিময়ে। অভিযোগ রয়েছে, শুধু তূর্ণা নিশিতা ট্রেনই নয়, রাতেরবেলায় চলাচলরত মহানগর এক্সপ্রেস, সোনার বাংলা এক্সপ্রেস, উদয়ন এক্সপ্রেস, পাহাড়িকা এক্সপ্রেসসহ কয়েকটি আন্তঃনগর ট্রেন কুমিল্লার শশীদল, রাজাপুরসহ কয়েকটি মাদক অভয়ারণ্য এলাকায় অনির্ধারিত যাত্রা বিরতি করে। নির্দিষ্ট সময়ে ট্রেনটি গন্তব্যে পৌঁছালে অনির্ধারিত যাত্রাবিরতির হিসেব রাখে না কন্ট্রোল বিভাগ। এই সুযোগে চালক থেকে পরিচালক পর্যন্ত সকলেই বিনা টিকেটীদের কাছ থেকে আদায়কৃত অর্থ ভাগবাটোয়ারা করে। আরও অভিযোগ রয়েছে, গতমাসের মাঝামাঝি কুমিল্লা রেল স্টেশনের সিজিপিওয়াই লোকশেডের এলএম মোশরফ হোসেনকে দুষ্কৃতকারীরা ছুরিকাঘাত করে। অনির্ধারিত যাত্রা বিরতি নিশ্চিত করতে না পারায় এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে বলে বাংলাদেশ রেলওয়ে রানিং স্টাফ ও শ্রমিক কর্মচারী সমিতির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে। এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে রেলের পূর্বাঞ্চলীয় জিএম আবদুল হাইকে গত ২০ নবেম্বর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। যাত্রীদের কাছ থেকে অভিযোগ পাওয়া গেছে, শুক্রবার রাতে কমলাপুর স্টেশন থেকে ৭৪২নং তূর্ণ নিশিতা এক্সপ্রেস ট্রেনটি রাত সাড়ে ১১টায় ছাড়ার কথা। নির্দিষ্ট সময়ের চেয়ে ৫৫ মিনিট বিলম্বে রাত ১২টা ২৫ মিনিট কমলাপুর স্টেশন থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসে। বিমানবন্দর স্টেশনে ট্রেনটি পৌঁছানোর পর বেশকিছু বিনা টিকেটের যাত্রী উঠে ভৈরব স্টেশনে নামে। আবার ভৈরব থেকে যাত্রী উঠে আশুগঞ্জ স্টেশনে নামে। মূলত ভৈরব কিংবা আশুগঞ্জ স্টেশনে এ ট্রেনটির স্টপেজ নেই। এছাড়া ট্রেনটি লাকসাম স্টেশনেও থামার কথা নয়। কিন্তু লাকসাম স্টেশন থেকেও যাত্রী উঠানামা করেছে। এতেই প্রমাণ মিলেছে অনির্ধারিত যাত্রা বিরতি হলেও ট্রেন চালক থেকে শুরু করে গার্ড পর্যন্ত সকলেই বিনা টিকেটীদের পক্ষে কাজ করছে। অবৈধ অর্থ আদায়ের উদ্দেশে এ ধরনের অনির্ধারিত যাত্রা বিরতি যাত্রীদের জন্য কাল হয়ে দাঁড়াচ্ছে। এছাড়া শীতাতপনিয়ন্ত্রিত বার্থগুলোর করিডরের সম্মুখভাগ অর্থাৎ দরজায়, ¯িœগ্ধা চেয়ার কোচের দরজার সামনে এমনকি নন-এসি কোচগুলোতে স্ট্যান্ডিং অবস্থায়ও যাত্রী চলাচল করছে বিনা টিকেটে। খাবার গাড়ি ও নামাজের কক্ষ এমনকি গার্ড ব্রেকেও রাতের এসব ট্রেনে বিনা টিকেটে যাত্রীর কমতি নেই। এর কারণ হচ্ছে ট্রেনের চালক থেকে পরিচালক পর্যন্ত এমনকি জিআরপি সদস্যও বিনা টিকেটীদের কাছ থেকে অর্থ আদায় করে তাৎক্ষণিক ভাগবাটোয়ারা করছে।
×