অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ মাঠপর্যায় থেকে মোবাইলের মাধ্যমে পাট কেনার উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ পাটকল কর্পোরেশন (বিজেএমসি)। নিজস্ব মাধ্যমে সারাদেশের ৬৪টি পাট ক্রয় সেন্টারে পাট কিনবে প্রতিষ্ঠানটি। চলতি মাসেই প্রাথমিকভাবে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হবে।
বিজেএমসি বলছে, এ কার্যক্রম পরিচালনায় লাভবান হবেন পাটচাষীরা। এছাড়া মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য বন্ধের পাশাপাশি কমবে দুর্নীতি। তবে অর্থনীতি বিশ্লেষকরা বলছেন, সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করা না হলে ভেস্তে যাবে এ উদ্যোগ।
দেশে উৎপাদিত পাটের প্রায় ৬০ শতাংশই কিনে থাকে বাংলাদেশ পাটকল কর্পোরেশন (বিজেএমসি)। উৎপাদিত এলাকায় দেড় শতাধিক পাট ক্রয় কেন্দ্রের মাধ্যমে এসব পাট কিনত প্রতিষ্ঠানটি। এতে প্রায় ৪০ কোটি টাকা ব্যয় হতো ক্রয় সেন্টারগুলোর জন্য। তবে এবার ব্যয় ও দুর্নীতি কমিয়ে আনতে ক্রয় সেন্টারের সংখ্যা কমানোর পাশাপাশি নেয়া হয়েছে এসএমএস পদ্ধতির মাধ্যমে কৃষকের কাছ থেকে পাট কেনার উদ্যোগ। বিজেএমসি বলছে, এতে লাভবান হবেন কৃষক।
সংস্থাটির চেয়ারম্যান মাহমুদুল হাসান একটি প্রিন্ট মিডিয়াকে বলেন, ‘এবার ফোনের মাধ্যমে পাট সম্পর্কে তারা তথ্য জানতে পারবেন। তার কাছে কেমন পাট আছে, কী পরিমাণ পাট তিনি বিক্রি করতে চান, পাটের দাম কেমন এবং বিজেএমসি কত নির্ধারণ করেছে- এ তথ্যগুলো তিনি জানতে পারবেন। এখানে মধ্যস্বত্বভোগী শ্রেণীর প্রভাবটা কমে আসবে।’ একই সঙ্গে মিলগুলোতে দেয়া হচ্ছে নিজস্ব সফটওয়্যার। এতে পাট কেনাসহ মিলগুলোর সার্বিক কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ সহজ হবে বলেও জানান এ কর্মকর্তা।
পাট কেনার জন্য দর জানতে রেট লিখে পাঠাবে। এরপর দর জানিয়ে দিয়ে পরের এসএমএসে নিকটস্থ এজেন্ট, ইনচার্জের নাম এবং মোবাইল নম্বর দেয়া হবে। পাট ক্রয় কেন্দ্রে পাট দেয়ার পর চেক বা বিকাশের মাধ্যমে পাট বিক্রির টাকা নেয়ার জন্য গোপন পিন কোড দেয়া হবে বিক্রেতাকে।
সরকারের পক্ষ থেকে কৃষকের জন্য বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দেয়া হলেও তা লুফে নেয়ার জন্য সব সময়ই ওতপেতে থাকে একটি অসাধু চক্র। তাই সুষ্ঠুভাবে এসব কার্যক্রম পরিচালনার পরামর্শ অর্থনীতিবিদদের।
অর্থনীতিবিদ হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘যে সাপোর্টটা সরকারের পক্ষ থেকে কৃষককে দেয়ার চেষ্টা করা হয়, একটি চক্র সে সুবিধাটা কিন্তু নিয়ে নেয়। দেখা যায়, বিজেএমসির মধ্যেই এ চক্রের যোগসাজশ থাকে। এখন কতটা কার্যকরভাবে এটা করতে পারবে তার ওপর নির্ভর করবে এর উপকারিতা।’