ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

কৃষিঋণ বিতরণে পিছিয়ে নতুন ব্যাংকগুলো

প্রকাশিত: ০৫:১৫, ২৬ ডিসেম্বর ২০১৬

কৃষিঋণ বিতরণে পিছিয়ে নতুন ব্যাংকগুলো

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ নিয়ম অনুযায়ী কৃষিঋণ বিতরণ করতে পারছে না নতুন প্রজন্মের ব্যাংকগুলো। চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে (জুলাই-নবেম্বর) কৃষিঋণ বিতরণে লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ব্যাপক পিছিয়ে রয়েছে এ ব্যাংকগুলো। বারবার তাগাদা দেয়া হলেও কৃষিঋণ বিতরণ করছে না এ ব্যাংকগুলো। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। কৃষিঋণ সংক্রান্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী, নতুন প্রজন্মের ৯টি ব্যাংকের মধ্যে পিছিয়ে রয়েছে ৭টি। এ ৭টি ব্যাংকের মধ্যে সবচেয়ে কম কৃষিঋণ বিতরণ করেছে ফারমার্স ও ইউনিয়ন ব্যাংক লিমিটেড। এছাড়া এ তালিকায় রয়েছে মেঘনা, মধুমতি, এনআরবি কমার্শিয়াল, এনআরবি গ্লোবাল এবং সাউথ বাংলা ব্যাংক। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ফারমার্স ব্যাংকের ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ১শ’ ৫ কোটি টাকা। ব্যাংকটি (জুলাই-নবেম্বর) পাঁচ মাসে ঋণ বিতরণ করেছে ১ কোটি ৫০ লাখ টাকা, যা মোট লক্ষ্যমাত্রার ১ দশমিক ৪৩ শতাংশ। ইউনিয়ন ব্যাংকের পুরো বছরে ঋণ বিতরণ লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ১৯০ কোটি টাকা। কিন্তু উল্লিখিত সময়ে ব্যাংকটি ঋণ বিতরণ করতে পেরেছে ১ কোটি ৫২ লাখ টাকা, যা লক্ষ্যমাত্রার দশমিক ৮০ শতাংশ। এছাড়া উল্লিখিত সময়ে মেঘনা ব্যাংক লক্ষ্যমাত্রার ১৯ দশমিক ৩৯ শতাংশ, মধুমতি ব্যাংক ১ দশমিক ১০ শতাংশ, এনআরবি কমার্শিয়াল ৬ দশমিক ১০ শতাংশ, এনআরবি গ্লোবাল ৮ দশমিক ৯৪ শতাংশ এবং সাউথ বাংলা ব্যাংক ২৩ দশমিক ৩৮ শতাংশ ঋণ বিতরণ করেছে। তবে নতুন প্রজন্মের দুটি ব্যাংক কৃষিঋণ বিতরণে বেশ ভাল করছে বলে জানা গেছে। প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী, মিডল্যান্ড ব্যাংক সবচেয়ে বেশি ঋণ বিতরণ করতে পেরেছে। ব্যাংকটি তাদের পুরো অর্থবছরের লক্ষ্যমাত্রা পাঁচ মাসেই অতিক্রম করে গেছে। ব্যাংকটির পুরো বছরে ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪৫ কোটি টাকা। তারা ৫৮ কোটি ২৭ লাখ টাকা বিতরণ করেছে, যা লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ১২৯ শতাংশ। ঋণ বিতরণে এর পরই ভাল করছে এনআরবি ব্যাংক লিমিটেড। ব্যাংকটি ৫০ কোটি টাকা বিতরণ লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে বিতরণ করেছে ৪০ কোটি টাকা, যা লক্ষ্যমাত্রার ৮০ শতাংশ। প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী, বেসরকারী ব্যাংকগুলোর চলতি অর্থবছরে কৃষিঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ৭ হাজার ৮শ’ ২৭ কোটি টাক। ব্যাংকগুলো পাঁচ মাসে বিতরণ করতে পেরেছে ৩ হাজার ৮শ’ ৫২ কোটি টাকা, যা লক্ষ্যমাত্রার ৪৯ দশমিক ৫৪ শতাংশ। বিদেশী ব্যাংকগুলোর কৃষিঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা ৪৩৩ কোটি টাকা। ব্যাংকগুলো বিতরণ করতে পেরেছে ৩২২ কোটি টাকা, যা লক্ষ্যমাত্রার ৭৪ দশমিক ৪৬ শতাংশ। যদিও ব্যাংক আল-ফালাহ, কমার্শিয়াল ব্যাংক অব সিলন, ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান চলতি অর্থবছরে এখন পর্যন্ত কোন প্রকার কৃষিঋণ বিতরণ করেনি। এছাড় রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো উল্লিখিত সময়ে কৃষিঋণ বিতরণ করেছে ৩ হাজার ৩৯৬ কোটি টাকা, যা পুরো বছরের লক্ষ্যমাত্রার ৩৬ দশমিক ৫৬ শতাংশ। রাষ্ট্রায়ত্ত ও বিশেষায়িত ৮টি ব্যাংকের ঋণ বিতরণ লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৯ হাজার ২৯০ কোটি টাকা। এসব ব্যাংকের মধ্যে এখন পর্যন্ত সোনালী ব্যাংক ও বিডিবিএল কৃষিঋণ বিতরণে পিছিয়ে রয়েছে।
×