ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

৩০ ডিসেম্বর পরীক্ষা

ঠাকুরগাঁওয়ে ভর্তির প্রস্তুতি নিয়ে ভোগান্তিতে শিশুরা

প্রকাশিত: ০৫:৪৭, ২৫ ডিসেম্বর ২০১৬

ঠাকুরগাঁওয়ে ভর্তির প্রস্তুতি নিয়ে ভোগান্তিতে  শিশুরা

নিজস্ব সংবাদদাতা, ঠাকুরগাঁও, ২৪ ডিসেম্বর ॥ কয়েক হাজার খুদে শিক্ষার্থী সরকারী বিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে। কোচিং, মডেল টেস্টের পাশাপাশি গৃহশিক্ষকের কাছে পড়ছে তারা দিনরাত। সন্তানদের নিয়ে ব্যস্ততা বেড়েছে অভিভাবকদেরও। এত কিছুর পরও দুশ্চিন্তা তাদের পিছু ছাড়ছে না। কারণ, আসন সংখ্যার তুলনায় শিক্ষার্থী কয়েক গুণ বেশি। জেলা শিক্ষা অফিস জানায়, ঠাকুরগাঁওয়ে পাঁচটি সরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এর মধ্যে জেলা সদরের সরকারী বালক উচ্চ বিদ্যালয় ও সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণীতে ভর্তি করা হয়। প্রতিটিতে দুই শিফটে ২৪০টি করে মোট আসন ৪৮০। রানীশংকৈল ও পীরগঞ্জ উপজেলার তিনটি সরকারী বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ শ্রেণীতে ভর্তি করা হয়। জেলার ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শহরের দুটি সরকারী বিদ্যালয়। অভিভাবকরাও সেখানে সন্তানদের পড়াতে চান। এজন্য সেখানে ভর্তি পরীক্ষায় প্রতিযোগিতাও বেশি। গত বছর এ দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রতি আসনের জন্য গড়ে আট-দশজন শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিয়েছিল। এ বছর ভর্তি পরীক্ষা ৩০ ডিসেম্বর। ১২ ডিসেম্বর পর্যন্ত অনলাইনে আবেদন নেয়া হয়েছে। তবে এবার এ বিদ্যালয়গুলোতে ষষ্ঠ শ্রেণীতে শিক্ষার্থী ভর্তি না করার সিদ্ধান্তে জেলার ২৯,০৭৩ জন শিক্ষার্থী পিএসসি পাস করে মহাসঙ্কটে পড়তে যাচ্ছে। সম্প্রতি কোচিংয়ে যাওয়ার পথে কথা হয় শহরের আশ্রমপাড়ার বাসিন্দা শিশু শিক্ষার্থী মৌমিত হাসানের সঙ্গে। সারাদিন কীভাবে কাটে জিজ্ঞাস করলে সে বলে, ‘ভোর হলেই মা কিংবা বাবার সঙ্গে কোচিং সেন্টারে যাই। কিছুক্ষণ পর বাড়ি ফিরে আসি। আবারও ছুটতে হয় অন্য একটি কোচিং সেন্টারে। সেটা চলে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত। সন্ধ্যায় বাড়িতে গৃহশিক্ষক আসেন। রাতে মা-বাবা ভাগাভাগি করে পড়ান।’ এভাবেই চলছে মৌমিতের সপ্তাহের ছয়টি দিন। শুক্রবার ছুটির দিনেও মুক্তি নেই তার। সেদিনও থাকে তিন থেকে চারটি মডেল পরীক্ষা। সরকারী বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ আখতারুজ্জামান বলেন, জেলায় শুধু দুটি সরকারী বিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণীতে ভর্তির ব্যবস্থা রয়েছে। ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে শিশুদের অনেক কষ্ট করতে হচ্ছে। জেলায় অন্য যে বিদ্যালয় রয়েছে তাতে মানসম্মত শিক্ষা এবং শিক্ষার্থীদের বেতনের হার কমাতে পারলে দুর্ভোগ কমত। জেলা প্রশাসক মোঃ আবদুল আওয়াল বলেন, ‘সরকারী বিদ্যালয়ের ভর্তির জন্য নিজেকে প্রস্তুত করতে গিয়ে শিশুরা শৈশব হারিয়ে ফেলছে, এটা সত্যি। তবে এ মুহূর্তে বিকল্প উপায় বের করার কোন সুযোগ নেই।’
×