ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

বরিশাল এলাকায় ৬৮ বধ্যভূমি চিহ্নিত

প্রকাশিত: ০৬:৪৭, ২৪ ডিসেম্বর ২০১৬

বরিশাল এলাকায় ৬৮ বধ্যভূমি চিহ্নিত

স্বাধীনতার ৪৫ বছর পরে আজও চিহ্নিত হয়নি বরিশাল, ঝালকাঠি ও পিরোজপুরের অধিকাংশ বধ্যভূমি। এমনকি তৈরি হয়নি শহীদদের তালিকা। তবে গবেষকদের দাবি, অনুসন্ধানে ৬৮টি বধ্যভূমি চিহ্নিত করা গেছে। বরিশাল অঞ্চলে ‘জেনোসাইড স্টাডিজ’ প্রকল্পের গবেষক সুশান্ত ঘোষ জানান, ৬৮ বধ্যভূমির মধ্যে বরিশাল জেলা সদরে তিনটি, গৌরনদীতে চারটি, আগৈলঝাড়ায় ছয়টি, বাকেরগঞ্জে তিনটি, বানারীপাড়ায় পাঁচটি, বাবুগঞ্জে দুটি, উজিরপুরে পাঁচটি, মুলাদীতে দুটি, মেহেন্দীগঞ্জে তিনটিসহ ৩৩ বধ্যভূমির সন্ধান পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ঝালকাঠিতে নয়টি, পিরোজপুরে ২৬টি বধ্যভূমি চিহ্নিত করা হয়েছে। তিনি বলেন, ৬৮ বধ্যভূমিতে নিহতের সংখ্যা নিরূপণ করা মুশকিল। চিহ্নিত বধ্যভূমিগুলো হচ্ছে- বরিশালে সদর উপজেলার পানি উন্নয়ন বোর্ড সংলগ্ন কীর্তনখোলা তীর, তালতলী, চরকাউয়া মোসলেম মিয়ার বাড়ি সংলগ্ন খালের পাড়, গৌরনদী উপজেলার বাটাজোর হরহর মৌজার মড়ার ভিটা, গৌরনদীর তীরে সহকারী পুলিশ সুপারের অফিসের সামনে, গৌরনদীর গয়নাঘাটাপুল সরকারী গৌরনদী কলেজ সংলগ্ন হাতেম পিয়নের বাড়ির সামনের ঘাটলা। আগৈলঝাড়া উপজেলার কাঠিরা ব্যাপ্টিস্ট চার্চ সংলগ্ন রাজিহার রাংতা বিল, রাজিহার কেতনার বিল, রাজিহার ফ্রান্সিস হালদারের বাড়ি, পতিহার, দক্ষিণ শিহিপাশা এবং বাকেরগঞ্জ উপজেলার কলসকাঠি, বেবাজ, শ্যামপুর। বানারীপাড়া উপজেলার দক্ষিণ গাভার নরেরকাঠী, গাভা বাজার, গাভা বিল্ববাড়ি, গাভা পূর্ব বেড়মহল, বাওনের হাট, গাভা রামচন্দ্রপুরের পূর্ব বেরমহল, বাবুগঞ্জ উপজেলার ক্যাডেট কলেজ, রামপট্টি এবং উজিরপুর উপজেলার বড়াকোঠা দরগা বাড়ি, উত্তর বড়াকোঠা মল্লিকবাড়ি, বড়াকোঠা মুক্তিযুদ্ধের মিলনকেন্দ্র সংলগ্ন বধ্যভূমি, খাটিয়ালপাড়া, বড়াকোঠা চন্দ্রকান্ত হালদারের বাড়ি, মুলাদীর পাতারচর, মুলাদী নদীর দক্ষিণ পাড়, বেলতলা, মেহেন্দীগঞ্জ থানা সংলগ্ন খাল, পাতারহাট গার্লস স্কুল সংলগ্ন ব্রিজের গোড়া, পাতারহাট গার্লস স্কুলের দক্ষিণ পাড়ের খলিল মোল্লার বাসার সামনে। পিরোজপুর জেলার স্বরূপকাঠি উপজেলার ভরসাকাঠি, মৈশানি, জুজুখোলা, জুলুহার, সোহাগদল, অলংকারকাঠী, শশীদ ও সাগরকান্দা। কুড়িয়ানা খাল, কুড়িয়ানা জয়দেব হালদারের বাড়ি, পূর্ব জলাবাড়ী খালপাড়, তেজদাসকাঠি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে, দৈহারী ইউনিয়ন পরিষদের সামনে। পিরোজপুর সদর উপজেলার বলেশ্বর তীর এবং হুলারহাট টার্মিনলের সামনে। নাজিরপুর উপজেলার দীঘা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সামনে, ঘোষকাঠি বিদ্যালয়, শ্রীরামকাঠি বন্দর এবং গাবতলা গ্রামে। কাউখালি লঞ্চঘাট, মঠবাড়িয়া উপজেলার ম-লবাড়ি, বড়মাছুয়া বেড়িবাঁধ, সাপলেজা, নলি বাড়ৈ বাড়ি. সূর্যমণি, আঙ্গুলকাটা। ঝালকাঠি জেলার রাজাপুর উপজেলার দক্ষিণ কাঠিপাড়া বধ্যভূমি, বাঘরি ব্রিজ সংলগ্ন থানাঘাট, পূর্ব নৈকাঠি, নৈকাঠি-নমপাড়া বড়মিস্ত্রী বাড়ি, কাঠিপাড়া ঠাকুর বাড়ি জঙ্গল। নলছিটি উপজেলার সুগন্ধা তীর, মানপাশা, সদর উপজেলার পালবাড়ি সংলগ্ন নদী তীরের এবং বেসাইন খান গ্রাম। বরিশাল শহরের পানি উন্নয়ন বোর্ড সংলগ্ন কীর্তনখোলা তীরের বধ্যভূমি সরকারিভাবে স্মারক স্তম্ভ দিয়ে সংরক্ষিত এবং তালতলী বধ্যভূমি বেসরকারীভাবে স্মৃতিফলক দিয়ে চিহ্নিত। বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে আগৈলঝাড়ার কাঠিরা ব্যাপ্টিস্ট চার্চ সংলগ্ন বধ্যভূমিতে ফলক নির্মিত হয়েছে। ব্যক্তিগত উদ্যোগে একই উপজেলার রাজিহার ফ্রান্সিস হালদারের বাড়ির বধ্যভূমি চিহ্নিত এবং সেখানে আট শহীদের স্মরণে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মিত হয়েছে। বাকেরগঞ্জ উপজেলার কলসকাঠি বধ্যভূমিটি চিহ্নিত এবং ব্যক্তিগত উদ্যোগে সেখানে ফলক নির্মিত হলেও শহীদদের তালিকা ও তথ্য প্রমাণের অভাবে সম্পূর্ণ রক্ষিত হয়নি। পিরোজপুর জেলায় স্বরূপকাঠি উপজেলার ভরসাকাঠি বধ্যভূমিটি সরকারী উদ্যোগে চিহ্নিত ও সংরক্ষিত। এ ব্যাপারে বরিশাল জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাংগঠনিক কমান্ডার এনায়েত হোসেন চৌধুরী বলেন, মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি, নিদর্শন, ইতিহাস ও দলিলপত্র সংরক্ষণে অনেক দেরি এবং শৈথিল্য দেখানো হয়েছে। -খোকন আহম্মেদ হীরা বরিশাল থেকে
×