ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

শব্দসৈনিকদের স্বীকৃতি দেয়ায় সরকারকে সাধুবাদ জানাই ॥ ফকির আলমগীর

প্রকাশিত: ০৬:১২, ২৪ ডিসেম্বর ২০১৬

শব্দসৈনিকদের স্বীকৃতি দেয়ায় সরকারকে সাধুবাদ জানাই ॥ ফকির আলমগীর

স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের কণ্ঠসৈনিক শিল্পী ফকির আলমগীর। একাত্তরে সময় দলবেঁধে গান গেয়ে উজ্জীবিত করেছিলেন মুক্তিযোদ্ধাদের, সংগঠিত করেছিলেন লাখ লাখ শরণার্থীসহ সাধারণ মানুষদের। তাঁর দেখা সে সময়ের ঘটনাবলী নিয়ে কথা হয়। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে যোগ দেয়ার ইচ্ছে কেন হলো? ফকির আলমগীর : স্বাধীনতার জন্য লড়াই আমাদের শুরু হয়েছে দেশ বিভাজনের পর থেকেই। আমরা ’৫২-এর ভাষা আন্দোলন, ‘৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান পেরিয়ে এসেছি এক রক্তাক্ত অধ্যায়ের মধ্যে। পরে এলো মুক্তিযুদ্ধ। স্বাধীনতার জন্য বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ আমার মধ্যে এক অন্যরকম অনুভূতি এনে দেয়, ঝাঁপিয়ে পড়ি মুক্তিযুদ্ধে। আমার কণ্ঠ নিয়ে যোগ দিলাম স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে। ওই সময় গানের মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধাদের সাহস জুগিয়েছি। সে সময় আমাদের এক একটি গান ছিল এক একটি অস্ত্র। মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিময় দিনগুলো কেমন ছিল? ফকির আলমগীর : এ সময়ের অসংখ্য স্মৃতি রয়েছে। তবে মুক্তিযুদ্ধের একটি স্মৃতি আমাকে সবসময় কাঁদায়। আমি কলকাতার মেদিনিপুর শহরের মহিষাদল গ্রামে একটি জনসভায় গান করছিলাম। এখানে উপস্থিত ছিলেন আবদুল গফ্ফার চৌধুরী, রণেশ দাশ গুপ্ত, এম আর আক্তার মুকুলসহ প্রখ্যাত ব্যক্তিবর্গ ও দুই বাংলার প্রখ্যাত শিল্পীরা। গান করছি এমন সময় খবর পেলাম আমাদের দেশ স্বাধীন হয়ে গেছে। বহু অপেক্ষার পর স্বাধীনতার খবর শুনে চোখে পানি এসে গেল। স্বাধীন বাংলা শব্দসৈনিকদের নিয়ে গেজেট প্রকাশ সম্পর্কে আপনার বক্তব্য? ফকির আলমগীর : বিলম্ব হলেও সরকার শব্দসৈনিকদের স্বীকৃতি দিয়েছে। এ জন্য এ সরকারকে সাধুবাদ জানাই। আর দীর্ঘদিন পর যারা এই স্বীকৃতি পেলেন তাদেরকে অভিনন্দন। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা তরুণ প্রজন্মের ওপর কেমন প্রভাব ফেলেছে মনে করেন? ফকির আলমগীর : আমার একটি ভ্রান্ত ধারণা ছিল, প্রগতিশীল নতুন প্রজন্ম মনে হয় ইন্টারনেটসহ অন্যান্য তথ্যপ্রযুক্তি নিয়েই থাকে। কিন্তু তরুণ প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে নতুন করে ভাবছে। আমাদের দেশের কিছু তথাকথিত মহল কোন কোন সময় ইতিহাস বিকৃতি করে এই তরুণ প্রজন্মকে ভিন্ন পথে চালানোর অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে। যার ফলে কোন কোন সময় তারা মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস থেকে বঞ্চিত হয়েছে, বিভ্রান্ত হয়েছে। বিজয়ের মাসে আপনার ব্যস্ততা কেমন? ফকির আলমগীর : এ মাসের পুরোটাই ব্যস্ত থাকি। প্রায় প্রতিদিনই কোন না কোন জায়গায় অনুষ্ঠান থাকছে। এছাড়া চ্যানেলের অনুষ্ঠান তো আছেই। আমি সব সময় ব্যস্ত থাকতে পছন্দ করি। আপনার আগামী পরিকল্পনা কি? ফকির আলমগীর : ‘দুনিয়া কাঁপানো মানুষের গান’ ও ‘শপথের গান’ নামে দুটি এ্যালবামের কাজ করছি। ব্যস্ততার কারণে প্রকাশে বিলম্ব হচ্ছে। এবার একুশে বইমেলায় প্রকাশ করার ইচ্ছা রয়েছে। এ্যালবাম দুটি লেজার ভিশনের ব্যানারে প্রকাশ হবে। এছাড়া এবার বইমেলায় আমার আটটি বই প্রকাশ হবে। মুক্তিযুদ্ধ, গণসঙ্গীত ও লোকসঙ্গীতের অতীত-বর্তমানসহ বিভিন্ন বিষয় উঠে আসবে বইগুলোতে। -গৌতম পাণ্ডে
×