ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বরিশালে ৩১ শিক্ষার্থীর ফরম পূরনের টাকা আত্মসাত

প্রকাশিত: ০০:৪৪, ২৩ ডিসেম্বর ২০১৬

বরিশালে ৩১ শিক্ষার্থীর ফরম পূরনের টাকা আত্মসাত

স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল ॥ সরকারী গৌরনদী কলেজের ডিগ্রী পরীক্ষার ফরম পূরণকারী ৩১ শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ফরমপূরণের প্রায় ৭৫ হাজার টাকা আত্মসাত করেছে কলেজ ছাত্রলীগের কতিপয় নেতা। হিসাব সহকারীর স্বাক্ষর জাল করে ফরম নিয়ে শিক্ষার্থীদের প্রদাণ করে টাকা আত্মসাত করার ফলে ওই ৩১ শিক্ষার্থীর পরীক্ষা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। কলেজ কর্তৃপক্ষ, প্রতারিত শিক্ষার্থী ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ নবেম্বর সরকারী গৌরনদী কলেজ থেকে ডিগ্রী পরীক্ষার অংশগ্রহণকৃত ছাত্র-ছাত্রীদের ফরম পুরন শুরু হয়। ফরমপুরনের শেষ সময়সীমা ছিল গত ১৮ ডিসেম্বর। অফিস সহকারী আজাহার আলী সরদার জানান, ডিগ্রী পরীক্ষার ফরম পুরনের নির্দিষ্ট সময় সীমার মধ্যে তার কাছে ফরম পুরনের নির্ধারিত টাকা জমা দিয়ে পরীক্ষা কমিটির সদস্য প্রভাষক মনির হোসেনের কাছ থেকে অনলাইনে ফরম সংগ্রহ করার কথা রয়েছে। আজাহার আলী অভিযোগ করে বলেন, আমি ৫১৭জন শিক্ষার্থীর ফরমপুরন বাবদ টাকা গ্রহণ করে পরীক্ষা কমিটির সদস্য অনলাইনের দায়িত্বে থাকা প্রভাষক মনির হোসেনের কাছে পাঠিয়েছি। কিন্তু মনির স্যারের কাছে ৫৪৬ জন শিক্ষার্থী ফরম নিয়ে যান। এ সময় ফরমের সাথে ক্যাশের অমিল থাকায় কতিপয় ছাত্রলীগ নেতার জালিয়াতি ধরা পরে। সূত্রমতে, জমাকৃত ফরম পরীক্ষা নিরীক্ষান্তে দেখা গেছে অফিস সহকারী আজাহারের স্বাক্ষর জাল করে ফরম পুরনের টাকা গ্রহণ পূর্বক জাল রশিদ দিয়ে ৩১জন শিক্ষার্থী ফরম জমা দিয়েছে। পরে ওই সকল শিক্ষার্থীদের তলব করার পর জালিয়াতির রহস্য ফাঁস হয়ে যায়। শিক্ষার্থীরা জানান, উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লুৎফর রহমান দিপের ভাই কলেজ ছাত্রলীগ নেতা ও ছাত্র সংসদের সমাজ সেবা বিষয়ক সম্পাদক ইব্রাহিম বাবু তাদের ফরম পুরনের টাকা নিয়ে রশিদ দিয়েছে। শিক্ষার্থীরা আরও জানান, ফরম পুরনের শেষ সময়সীমা পার হয়ে যাওয়ায় এখন আমাদের পরীক্ষা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। প্রতারনার শিকার শিক্ষার্থীরা জানান, ফরম পুরনে কিছু আর্থিক সুবিধা (কম টাকায়) পাওয়ার জন্য তারা ছাত্রলীগ নেতা ইব্রাহিম বাবুর কাছে টাকা দিয়েছেন। ইব্রাহিম বাবু তাদের কাছ থেকে ২ হাজার ৯৮৫ টাকা ও কারও কারও কাছ থেকে ২ হাজার ২০০ টাকা করে নিয়ে তাদের রশিদ দিয়ে ফরম পুরন করে দিয়েছেন। ওই রশিদ যে ভূয়া তা শিক্ষার্থীদের জানা ছিলনা। অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে নিজেকে নির্দোশ দাবি করে ছাত্রলীগ নেতা ও ছাত্র সংসদের সমাজ সেবা বিষয়ক সম্পাদক ইব্রাহিম বাবু বলেন, অভিযোগ সত্য নয়। উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি জুবায়ের ইসলাম সান্টু ভূঁইয়া ও কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাতুল শরীফ বলেন, প্রতারিত শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে একই অভিযোগ পেয়েছেন। বিষয়টি দলীয় নিতীনির্ধারকদের অবহিত করা হয়েছে। এ ব্যাপারে কলেজ ছাত্র সংসদের ভিপি সুমন মাহমুদ বলেন, ছাত্রলীগ ও ছাত্র সংসদের নাম ভাঙ্গিয়ে অপকর্ম করে কেউই পার পাবে না। অন্যায়কারী যেই হোক না কেন তার বিচার হবে। কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুর রাজ্জাক অফিস সহকারীর স্বাক্ষর জাল করে রশিদ দিয়ে জালিয়াতির কথা স্বীকার করে বলেন, অভিযুক্তকে দুইদিনের মধ্যে কলেজের ক্যাশে টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে, অন্যথায় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
×