ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

কৃচ্ছ্রতা অব্যাহত থাকবে আগামী বছরও

সৌদি অর্থনৈতিক দুর্দশা আরও বাড়ছে

প্রকাশিত: ০৪:২১, ২৩ ডিসেম্বর ২০১৬

সৌদি অর্থনৈতিক দুর্দশা আরও বাড়ছে

বিশ্ববাজারে তেলের দাম কমে যাওয়ায় এবং ভর্র্তুকি হ্রাস করতে হওয়ায় সৌদি আরবে গত বছর জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে গিয়েছিল। এখন সৌদি নাগরিকরা আরও সরকারী ব্যয় হ্রাসের জন্য প্রস্তুত হচ্ছেন। এর ফলে জনসাধারণের ক্ষুব্ধ হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। এ সত্ত্বেও তারা ২০১৭ সালে কিছুটা স্বস্তি আশা করছেন। খবর ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের। সরকারী ভর্তুকি সৌদি জনগণকে দীর্ঘ সময় ধরে অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার বাইরে রেখেছে। তবে সরকার ইতোমধ্যেই জ্বালানি, বিদ্যুত ও পানির জন্য ভর্তুকি সহায়তা হ্রাস করেছে এবং ভবিষ্যতে কম সাহায্যের সম্ভাবনা ভীত সৌদিদের আরও উদ্বিগ্ন করে তুলেছে। পশ্চিম উপকূলীয় শহর থুয়ালের এক বাসিন্দা হানান আল-সারগি বলেন, সর্বত্র উচ্চমূল্য বৃদ্ধিতে কেউ আমাদের একটু স্বস্তি দেবে বলে আশা করছি আমি। এই মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে মানিয়ে নিতে গাড়ির মতো বিলাসিতার উপর খরচ করতে আরও সতর্কতা অবলম্বন করছে তার পরিবার। দেশটির তেল সম্পদের উপর নির্ভর করে সৌদিরা কয়েক দশক ধরে আয়েশী জীবনযাপন করেছে। তারা সরকারের বার্ষিক বাজেটের ওপর গভীরভাবে নজর রাখছেন যে, এতে আরও কোন কৃচ্ছ্রমূলক ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে কিনা যা তাদের সামর্থ্যকে আরও সীমিত করে দিতে পারে। বাজেট বৃহস্পতিবার ঘোষণার কথা রয়েছে। তেলহীন ক্ষেত্র থেকে আয় উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বাড়িয়ে বাজেটকে সুষম করার লক্ষ্য থেকে দেশটি এখনও অনেক দূরে। বাদশাহ সালমান সৌদিদের এই উদ্বেগের কথা স্বীকার করে গত সপ্তাহে পরামর্শদাতা সূরা কাউন্সিলকে বলেন, সরকারের নেয়া কিছু পদক্ষেপ স্বল্প সময়ের জন্য পীড়াদায়ক হতে পারে। তবে আমাদের চূড়ান্ত লক্ষ্য হলো দেশের অর্থনীতিকে খারাপ পরিস্থিতি থেকে রক্ষা করা। ২০১৫ সালে তেলে দাম ব্যাপকভাবে কমে যাওয়ায় সৌদি আরবের রাজস্ব ঘাটতি রেকর্ড নয় হাজার ৮০০ কোটিতে দাঁড়িয়েছে, যা মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের ১৬ শতাংশ। সরকার ভর্তুকি কমানো, ফি বৃদ্ধি, নতুন করের প্রবর্তন ও অনেক সরকারী বেতন কর্তনের ফলে সৌদি সরকারের বাজেট ঘাটতি আরও কমে যাবে বলে আশা করছে আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিল (আইএমএফ)। এই প্রাথমিক সাফল্যে উজ্জীবিত হয়ে সরকার ২০১৭ সালে দেশের অর্থব্যবস্থাকে আরও উন্নত করার পদক্ষেপ সৌদি সরকার ঘোষণা করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এই পরিবর্তনগুলো মূলত বাদশাহর ছেলে ও সৌদি সিংহাসনের দ্বিতীয় উত্তরাধিকারী প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের প্রবল প্রচেষ্টায় হয়েছে। তিনি শক্তিশালী সরকারী সংস্থা কাউন্সিল অব ইকোনমিক এ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট এ্যাফেয়ার্সের চেয়ারম্যান এবং এটি অভ্যন্তরীণ নীতি নির্ধারণের দায়িত্বে রয়েছে। সৌদি অর্থনীতিকে বহুমুখী করতে জুন মাসে উচ্চাভিলাসী ন্যাশনাল ট্রান্সফরমেশন প্রোগ্রাম ঘোষণার পর থেকে সরকার রাষ্ট্রীয় কর্মচারীদের বোনাস প্রদান বাতিল করেছে এবং মন্ত্রীদের বেতন ২০ শতাংশ ও সূরা কাউন্সিল সদস্যদের বেতন ১৫ শতাংশ হ্রাস করা হয়েছে।
×