ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

চক্ষু মেলিয়া ॥ নিয়ামত হোসেন

প্রকাশিত: ০৪:১৯, ২৩ ডিসেম্বর ২০১৬

চক্ষু মেলিয়া ॥ নিয়ামত হোসেন

নেমতন্ন খেল পাড়ার কুকুরেরা! কয়েক দিন আগে পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় এক অদ্ভুত ধরনের বিয়ের ভূরিভোজ অনুষ্ঠি হয়েছে। বিয়ে হলো, বিয়ের পর এই ভূরিভোজের আয়োজন। খাওয়া-দাওয়ার অনুষ্ঠান। নেমতন্ন করা হয়েছিল এক দল কুকুরকে। তারা এসে হাজির। সমাদর পেয়েছে এসে এবং পেয়েছে চমৎকার খানাও। মজা করে খেয়েছে ওরা বিয়ের ভোজ। প্রকাশিত খবর থেকে জানা যায় : সেখানকার উচ্চ শিক্ষিত দুই তরুণ-তরুণীর মধ্যে বিয়েতে ঘটেছে এমন ঘটনা। বিবাহিত দম্পতির একজন চার্টার্ড এ্যাকান্টনেন্ট। অন্যজন কম্পিউটার ইনজিনিয়ার। বেশ কিছুদিন আগে দু’জনের পরিচয়। কলকাতার রাস্তার কুকুরদের ব্যাপারে দুজনেরই বিশেষ আগ্রহ। এই নিয়ে বেশ কিছু কাজও করেছেন তারা। এই কাজ করতে গিয়ে দুজনের মধ্যে পরিচয়। তারপর ঘনিষ্ঠতা ধীরে ধীরে। পরে দুজনেই সিদ্ধান্ত নেন বিয়ের। সেই বিয়েটাই সারলেন তারা। কুকুরদের নিয়ে কাজ করতে গিয়ে যখন তাদের দুজনের মধ্যে পরিচয়, তখন বিয়েতে তো কুকুরদের নেমতন্ন পাওয়ার অধিকার রয়েছে। তারাও সেটা মনে করেন বলে বিশেষ আমন্ত্রণ পেয়েছে আশপাশের পথ- কুকুরেরা। নেমতন্ন রক্ষা করে কুকুরেরা এসেছে এবং চর্ব্যচোষ্য খেয়ে বিদায় নিয়েছে। পথের কুকুর, নেড়ি কুত্তা, পথে-ফুটপাথে, এখানে ওখানে ডাস্টবিনের ধারে পড়ে থাকে। কোথাও কিছু পেলে অর্ধাহার, না পেলে অনাহার। সেই ওরাই যদি একদিন বিয়েবাড়ির আমন্ত্রিত হয়ে রাজভোগ ধরনের খাবার খেতে পায়, তাহলে ওদের সুখের তো সীমা থাকার কথা নয়। হয়ত সেদিন বিয়ের ভোজ খেয়ে ওদের মনের অবস্থা ওই রকমই হয়েছিল কে বলবে সে কথা। কোন বিয়ে বাড়িতে খাওয়া-দাওয়ার শেষে যে সব উচ্ছিষ্ট হাড্ডিগুড্ডি জমা হয় একগাদা, সেগুলোর একটু পেলে যেখানে কুকুরেরা যেন বর্তে যায়! আর এখানে ওরা পেয়েছে আসল খাওয়া। এ-যে সোনায় সোহাগা! ‘যাই হোক পথের কিছু কুকুর একবেলা পেট পুরে ভাল খাবার খেয়েছে শুনলে অনেকে খুশিই হবে! আহা রে, অবলা জীব! পোলাও কোর্মা। যাই পেয়েছে খাক। পেট পুরে খাক। খেয়ে শান্তি পাক। তবে হ্যাঁ এটাও দেখতে হবে যদি এমন কোন ঘৃতপক্ব খাবার ওদের হয়ত খেতে দেয়া হয়নি, যাতে ওদের দেহের ক্ষতি হয়! কথায় আছে না, কুকুরের পেটে ঘি সয়না! কুড়াল দিয়ে চুল কাটা! সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেয়া একটি সচিত্র সংবাদে দেখা যাচ্ছে নাপিতের দোকানে চুল কাটা হচ্ছে হাতুড়ি আর কুড়াল দিয়ে। একী কা-! এটা নাপিতের কেমন দোকান, কেমন সেলুন! তাজ্জব ব্যাপার তো! আসলে ঘটনাটি ঠিক। মরক্কোর এক সেলুনে এমনিভাবেই নাকি চুল কাটা হয়। তবে বনে জঙ্গলে কাঠ কাটার মতো কুড়াল বা কাঠ মিস্ত্রির হাতের হাতুড়ি নয় ওগুলো। জিনিস দুটো একই ধরনের, আকৃতি ছোট। ওই দোকানটিতে চুল কাটতে অন্য কিছু লাগছে না, শুধু ওই জিনিস দুটো! ও দুটো এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে যাতে কাজ হচ্ছে ভালই। তাই চালানো হচ্ছে ঐভাবেই! কাজও হলো, নতুনত্বও আনা হলো! কোন কোন মানুষের কী বিচিত্র খেয়াল থাকে! তারই অভিপ্রকাশ দেখা যায়। তাদের কাজেকর্মে। উপস্থিত ওই সেলুনের মালিক হয়ত চিরুনি কাঁচি দিয়ে চুল কাটার ব্যাপারটা পছন্দ করেন না। তার পছন্দ কুড়াল আর হাতুড়ি- তাই কাঁচির বদলে তিনি হাতুড়ি কুড়াল বানিয়ে তাই দিয়ে চুল কাটার কাজ চালাচ্ছেন তবে এতে তার শখ হয়ত মিটছে আর নতুনত্ব পিয়াসী কোন কোন তরুণ খদ্দেরও হয়ত জুটছে তার! আর এর পাশাপাশি মনের ভেতরে খ্যাতির যে সুপ্ত বাসনা সেটাও পূরণ হচ্ছে হয়ত কিছুটা! তবে এটুকুই যথেষ্ট হলে ভাল, নইলে যদি দেখা যায় নতুনত্বের উস্কানির চোটে কেউ যদি সেখানে কোন সেলুন খুলে কোদাল আর করাত দিয়ে চুল কাটার ঘোষণা দেয় তাহলে লোকজন আর ওমুখো হবে না কোন দিন! অদ্ভুত উপায়ে ফিরে এলো আংটি এক অদ্ভুত ঘটনা ঘটেছে সম্প্রতি জার্মানিতে। সেখানকার এক ভদ্রলোকের বিয়ের আংটি হারিয়ে গিয়েছিল। অনেক খোঁজাখুঁজির পরও তিনি সেটা পেলেন না। শেষে সম্প্রতি সেটি তিনি ফেরত পেয়েছেন এক অদ্ভুত ঘটনার মধ্য দিয়ে। অদ্ভুত এবং আশ্চর্যজনক ঘটনাই বটে! ভদ্রলোক বৃদ্ধ। বিয়ের অনেক স্মৃতির মধ্যে তার প্রিয় একটি জিনিস ছিল বিয়ের আংটি। দীর্ঘদিন তিনি যতœ করে রেখেছিলেন সেটি। বছরতিনেক আগের ঘটনা। হারিয়ে গেল তার প্রিয় আংটি। অনেক খুঁজলেন কিন্তু পেলেন না। মনে তার অনেক দুঃখ, আপসোস। কেন তিনি হারিয়ে ফেললেন ওটি। নিশ্চয়ই কখনও বেখেয়াল হয়েছিলেন। তাই হারিয়ে ফেলেছিলেন ওটি। তার আংটির জন্য তার আফসোস করা দেখে বৃদ্ধ স্ত্রী বলেছিলেন, একদিন অবশ্যই ওটা খুঁজে পাওয়া যাবে। হারানো সেই আংটি সেদিন তিনি ফেরত পেয়েছেন। পেয়ে তো মহাখুশি। কিন্তু খশি আরও বেশি হতে পারতেন যদি স্ত্রী বেঁচে থাকতেন। কিন্তু তিনি এখন পরলোকে। যাই হোক, কিভাবে পাওয়া গেল আংটিটা? ভদ্রলোকের গৃহসংলগ্ন একটি ছোট বাগান তথা ক্ষেত ছিল, সেখান থেকে তিনি তুলছিলেন গাজর। একটা একটা করে ওঠাচ্ছিলেন গাজার, ওঠাচ্ছিলেন আর জমা করেছিলেন একটা পাত্রে। ঠিক এমন সময় একটা গাজর মাত্র তুলেছেন, দেখেন তার গায়ে কী যেন লেগে আছে। দেখন একটি আংটির মতো জিনিস গাজরের সঙ্গে লেগে আছে। গাজরটির গায়ের ময়লা পরিষ্কার করে দেখেেলর তার হারিয়ে সেই আংটি ওটি। খুশিতে ভরে উঠল তার মন। পাওয়া গেছে সেই বিয়ের আংটি। মহাখুশি তিনি। কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে তার মন বিষাদে বরে উঠল। এ আংটি পরে বিয়ে করেছিলেন যাক, তিনি তো কাছে নেই। তিনি এখন বহুদূরে। রয়েছেন শুধু স্মৃতি হয়ে।
×