ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ফারহানা আদৃতা

বিলবোর্ড টপচার্টে হ্যালসি

প্রকাশিত: ০৬:৩৪, ২২ ডিসেম্বর ২০১৬

বিলবোর্ড টপচার্টে হ্যালসি

বিলবোর্ড উওম্যান ইন মিউজিক। ২০০৭ সাল থেকে প্রতিবছরই বিলবোর্ড ম্যাগাজিন এই পুরস্কার দিয়ে আসছে। সঙ্গীত ভুবনের সফল জনপ্রিয় নারীদের এই পুরস্কার দেয়া হয়। মূলত সঙ্গীত অঙ্গনের যেসব তারকা এই শিল্পে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন এবং তাদের কাজও অনবদ্য সাফল্যের মাধ্যমে প্রজন্ম ধরে নারীদের উৎসাহ জুগিয়েছেন, অনুপ্রাণিত করেছেন তাঁদের জন্যই এই বিলবোর্ড উওম্যান ইন মিউজিক এ্যাওয়ার্ড। পুরস্কার প্রদানের সময় এই উদীয়মান গীতিকার গায়িকা সম্পর্কে প্রদানকারী অতিথি ডেরি হ্যারি উল্লেখ করেন, এই পুরস্কার হ্যালসির অনন্য মেধা ব্যতিক্রমী সঙ্গীত প্রতিভার মাধ্যমে গানের ভুবনে প্রভাব বিস্তারের স্বীকৃতি। তিনি গানের মাধ্যমে নতুন প্রজন্মকে একই সূত্রে গেঁথেছেন। তিনি গানের অপূর্ব সুরের জাদুতে মোহগ্রস্ত করেছেন শ্রোতাদের। আগামীতে তিনি একইভাবে সাফল্যের জয়যাত্রা অব্যাহত রাখতে সক্ষম হবেন। আজকের তরুণ প্রজন্মের সঙ্গীত শ্রোতাদের মধ্যে দারুণ ক্রেজ সৃষ্টিকারী গায়িকা হ্যালসি নামে পরিচিত ও জনপ্রিয় হলেও তার আসল নাম এ্যাশলে নিকোলেট ফ্যাংগিপেন। ১৭ বছর বয়স থেকেই তার গান লেখা শুরু। নিউজার্সির ক্লার্কে তার জন্ম এবং বেড়ে ওঠা। মায়ের কাছ থেকে তিনি পেয়েছেন একাধারে ইটালিয়ান আইরশ এবং হাঙ্গেরীয় ভাষার টান আর বাবার কাছ থেকে আফ্রিকান-আমেরিকান ভাবধারা। ছোটবেলা থেকেই সঙ্গীতের প্রতি তার আগ্রহ ছিল। বেহালাসহ অন্যান্য বাদ্যযন্ত্র বাজানো শিখেছেন নিজের চেষ্টায়। এভাবে প্র্যকটিস করতে করতে একসময় এ্যাকুস্টিক গিটার বাজানো শুরু করেন। তখন হ্যালসির বয়স ছিল মাত্র ১৪। যখন তার বয়স ১৬-১৭ তখন এক কঠিন রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন। এরপর দারুণ অর্থকষ্টে পড়েন, অবস্থা এমন পর্যায়ে পৌঁছে যে বাড়ি ভাড়া পরিশোধের জন্য বাধ্য হয়ে বিভিন্ন শোতে গাইতে শুরু করেন। এভাবে বাড়ি ভাড়ার অর্থ পরিশোধের জন্য নিয়মিত স্টেজ পারফরমার হয়ে ওঠেন হ্যালসি। বিভিন্ন শহরে ঘুরে ঘুরে এ্যাকুস্টিক শো করতে থাকেন তিনি। এভাবে অনেক ঘাটের পানি খেতে খেতে এক সময় পরিপক্ব শিল্পী হিসেবে বিকশিত হন। কলেজে চারুকলা নিয়ে পড়ার পরিকল্পনা ছিল, কিন্তু নিজের আর্থিক অসঙ্গতির কথা ভেবে সেই পরিকল্পনা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলেন। অগত্যা হ্যালসি কমিউনিটি কলেজে ভর্তি হয়ে সৃজনশীল লেখালেখির কাজে যুক্ত হন। হ্যালসির মউিজিক ক্যারিয়ার শুরু হয় ইউটিউবে কভার সঙ পোস্টিং দেয়ার মাধ্যমে ২০১২ সালে টেইলর সুইফটের গাওয়া ‘আই নিউ ইয়্যু ওয়্যার ট্রাবল’ গানটির অনুকরণে প্যারডি গেয়ে সবার মনোযোগ আকর্ষণ করেন হ্যালসি। ২০১৪ সালে তিনি ঘোস্ট গানটি রেকর্ড করে সাউন্ড ক্লাউডে পোস্ট করেন। এই গানটিও হ্যালসির পিরিচিত ও জনপ্রিয়তার মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। এর প্রেক্ষিতে এ্যাস্টারলওয়ার্কস রেকর্ড লেবেলের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হন তিনি। ২০১৪ সালে হ্যালসির ডেব্যু ইপি ‘রুম নাইনটি থ্রি’ প্রকাশিত হয়, এর পাঁচটি গানের মধ্যে চারটি গানের ভিডিও রেক হতে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়। ২০১৪ সালে ‘দ্য কুকস’ ব্যান্ডের সঙ্গে মিউজিক ট্যুরে বের হন হ্যালসি, এটাও তার মিউজিক ক্যারিয়ারকে দারুণভাবে প্রভাবিত করেছে। ২০১৫ সালে সাউথ বাই সাউথওয়েস্ট ফেস্টিভ্যালের একজন আলোচিত পারফরমার হিসেবে তার নামটি টুইটারে উঠে আসে অনেকবার। গত বছরের আগস্টে হ্যালসির ডেব্যু এ্যালবাস ‘ব্যাডল্যান্ডস’ প্রকশিত হওয়ার পর আরেক দফা আলোড়ন সৃষ্টি হয়। তার বিভিন্ন গান নিয়ে বিতর্কের সূত্রপাত হয়। হ্যালসি তার ‘ব্যাডল্যান্ডস’ এ্যালবামকে বিদ্রোহী নারীর যুদ্ধহুঙ্কার বলে অভিহিত করেন। চলতি বছরের মে মাসে হ্যালসি তার গাওয়া ‘টোকিও নারিতা’ প্রকাশ করেন। ‘দ্য চেইন স্মোকারস’ ব্যান্ডের সঙ্গে তাদের সিঙ্গেল ‘ক্লোজার’এ অতিথি শিল্পী হিসেবে সংযুক্ত হন তিনি। এই গানটি তাকে আরও বেশি শ্রোতা দর্শকদের কাছাকাছি নিয়ে গেছে। ইউএস বিলবোর্ড হট হানড্রেডে গানটি ইতোমধ্যে স্থান করে নিতে সক্ষম হয়েছেন।
×