ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

কে হচ্ছেন নগরপিতা- আইভী, নাকি সাখাওয়াত?;###;ব্যালটে অবৈধভাবে হাত দিলেই গুলি ॥ রিটার্নিং অফিসার;###;বড় ফ্যাক্টর ৭০ হাজার নতুন ভোটার;###;২২ প্লাটুন বিজিবি, ৩২ ব্যাটালিয়ন র‌্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি থাকছে ৮৫ ভ্রাম্যমাণ আদালত

আজ নাসিক নির্বাচন

প্রকাশিত: ০৫:৪২, ২২ ডিসেম্বর ২০১৬

আজ নাসিক নির্বাচন

আরাফাত মুন্না/মোঃ খলিলুর রহমান, নারায়ণগঞ্জ থেকে ॥ উৎসবমুখর পরিবেশের মধ্য দিয়ে আজ ভোটগ্রহণ হচ্ছে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন (নাসিক) নির্বাচনের। সম্পন্ন হয়েছে সব প্রস্তুতি। ‘প্রাচ্যের ডান্ডি’ খ্যাত এই শহরের বাসিন্দার মতো সারাদেশের দৃষ্টি থাকছে নারায়ণগঞ্জেই। গত মেয়াদে উন্নয়নের জোয়ারে ভাসিয়ে দেয়া ডাঃ সেলিনা হায়াত আইভীই কি থাকছেন নগরপিতা, নাকি সাত খুন মামলার আইনজীবী হয়ে আলোচনায় আসা সাখাওয়াত হোসেন খান? রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা দেখবেন, জিতল কোন্ প্রতীক, ‘নৌকা’, নাকি ‘ধানের শীষ’। এসব প্রশ্নের উত্তর মিলবে আজই। সকাল আটটা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত বিরতিহীন চলবে ভোটগ্রহণ। ভোট গণনা শেষে কেন্দ্রে ফল ঘোষণার পাশাপাশি নারায়ণগঞ্জ ক্লাবে ইসি স্থাপিত কন্ট্রোল রুম থেকেই ফল ঘোষণা করা হবে। নির্বাচক বিশ্লেষকরা মনে করেণ্ড এই নির্বাচনে দলীয় প্রতীকের পাশাপাশি ৭০ হাজার নতুন ভোটারও ফল নির্ধারণে ভূমিকা রাখবে। এদিকে, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন কেন্দ্র করে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেয়া হয়েছে নির্বাচনী এলাকা। বুধবার সকালে র‌্যাবের ডগ স্কোয়াড ও বম্ব ডিস্পোজাল ইউনিট শহরের বিভিন্নস্থানে মহড়া দিয়েছে। বিকেলের মধ্যে ১৭৪ ভোট কেন্দ্রেই ভোটের সামগ্রী পৌঁছে দেয়া হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে কেন্দ্রে পৌঁছেছেন ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। নির্বাচন উপলক্ষে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন এলাকায় সাধারণ ছুটিও ঘোষণা করা হয়েছে। অন্যদিকে ভোটারদের নির্বিঘেœ ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে লিফলেট বিতরণ করেছেন পুলিশের ঢাকা রেঞ্জেরে ডিআইজি মাহফুজুল হক নুরুজ্জামান। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন রিটার্নিং অফিসার নুরুজ্জামান তালুকদার, নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক রাব্বি মিয়া, পুলিশ সুপার মঈনুল হক, র‌্যাব-১১ ’র অধিনায়ক (সিও) কামরুল হাসান ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোঃ তারিকুজ্জামান। প্রচারের শুরু থেকেই নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে আসছিলেন বিএনপি সমর্থিত মেয়র প্রার্থী এ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান। তবে প্রচারের শেষদিন পর্যন্ত কোন প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটায় তার সেই শঙ্কা আমলে নিতে পারেননি রিটার্নিং অফিসার। প্রচারের শুরু থেকে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত ছিল শান্তিপূর্ণ। আওয়ামী লীগ সমর্থিক মেয়র প্রার্থী ডাঃ সেলিনা হায়াত আইভীও বলেছেন, তিনি শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চান। রিটার্নিং অফিসার নুরুজ্জামান তালুকদার জনকণ্ঠকে জানিয়েছেন, আশা করছি শান্তিতেই ভোটগ্রহণ করতে পারব। নির্বাচন সুষ্ঠু করতে সকল ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। কেউ অবৈধ ব্যালটে হাত দিলে বিনিময়ে গুলি পাবে বলেও জানান তিনি। গত ১৪ নবেম্বর নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে তফসিল ঘোষণা পর ১৮ নবেম্বর মেয়র হিসেবে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পান সেলিনা হায়াত আইভী। তৈমুর আলম খন্দকারকে বিএনপির পক্ষ থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার কথা বলা হলেও তিনি রাজি না হওয়ায় ২৩ নবেম্বর বিএনপি মেয়র প্রার্থী হিসেবে সাখাওয়াত হোসেন খানকে মনোনয়ন দেয়। পরে ২৪ নবেম্বর মনোনয়নপত্র দাখিল শেষে ২৬ ও ২৭ নবেম্বর ৪ ডিসেম্বর ছিল মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষদিন। ৫ ডিসেম্বর ২০১ বৈধ প্রার্থীকে প্রতীক বরাদ্দ দেন রিটার্নিং অফিসার। আইভী ও সাখাওয়াতসহ মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও পরে প্রতীক বরাদ্দ পেয়েও দুজন নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান। অন্যদিকে ২৭ সাধারণ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে ১৭৬ এবং ৯ সংরক্ষিত মহিলা ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে ৩৮ প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দেন। মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই শেষে মেয়র পদে একজন ও নারী কাউন্সিলরসহ ১৪ কাউন্সিলর প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল হয়। পরে ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার বরাবরে আপীল করে এক নারী কাউন্সিলর প্রার্থীসহ ৬ কাউন্সিলর প্রার্থী তাদের প্রার্থিতা ফিরে পান। ২৭ সাধারণ ওয়ার্ডে ১৫৬ কাউন্সিলর প্রার্থী ও ৯ সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ৩৮ নারী প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। অন্য মেয়র প্রার্থীরা হলেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির প্রার্র্থী মাহবুবুর রহমান ইসমাইল (কোদাল), ইসলামী ঐক্যজোটের প্রার্থী মাওলানা এজহারুল হক (মিনার), ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী মুফতি মাসুম বিল্লাহ (হাতপাখা)। এলডিপির কামাল প্রধান (ছাতা) ও কল্যাণ প্রার্থীর রাশেদ ফেরদৌস (হাতঘড়ি) নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিলেও ব্যালট পেপারে তাদের প্রতীক থাকবে। ভোটার পৌঁনে ৫ লাখ ॥ নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে এবার মোট ভোটার ৪ লাখ ৭৪ হাজার ৯৩১। এর মধ্যে পুরুষ ২ লাখ ৩৯ হাজার ৬৬২ এবং নারী ২ লাখ ৩৫ হাজার ২৬৯। নারায়ণগঞ্জ সদরে ১ লাখ ৭৫ হাজার ৬২১, সিদ্ধিরগঞ্জে ১ লাখ ৮৫ হাজার ৯৯৭ ও বন্দরে ১ লাখ ১৩ হাজার ৩২২। মোট ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা ১৭৪। মোট ভোট কক্ষের সংখ্যা ১ হাজার ৩শ’ ৪, অস্থায়ী ভোট কক্ষের সংখ্যা ১২৬। এ নির্বাচনে সাধারণ ওয়ার্ড ২৭ ও সংরক্ষিত নারী ওয়ার্ড ৯। ফ্যাক্টর ৭০ হাজার নতুন ভোটার ॥ নির্বাচন, ভোট আর প্রার্থীদের পক্ষ-বিপক্ষ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনায় মশগুল নারায়ণগঞ্জবাসী। সর্বত্রই এখন ভোটের আলোচনা। নাসিক নির্বাচনে প্রচার শেষে এখন ভোটের হিসাব কষছেন নগরবাসী। তাদের মতে, ভোটের সমীকরণ পাল্টে দেবে নতুন ভোটারদের ভোট। নাসিকের ৭০ হাজার নতুন ভোটার রয়েছে। এসব ভোটারের ভোট যার পক্ষে পড়বে সেই প্রার্থীই নির্বাচিত হতে পারেন। নির্বাচনী এলাকার বিভিন্ন ওয়ার্ড ঘুরে একাধিক স্থানীয় সমাজসেবী, রাজনৈতিক, দলীয় নেতাকর্মীর সঙ্গে নতুন ভোটারদের বিষয়ে কথা হলে তারা জানান, বড় দুই রাজনৈতিক দলের মেয়র প্রার্থীরা আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে নিজেদের প্রতিশ্রুতি জানিয়েছেন। তাদের এই প্রতিশ্রুতি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে নাসিকের ৭০ হাজার নতুন ভোটারের মধ্যে। দলীয় প্রতীকে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হতে চলা নাসিক নির্বাচনে এই নতুন ভোটার একটা ফ্যাক্টর। আইভী ও সাখাওয়াত কখন ও কোথায় ভোট দেবেন ॥ আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী ডাঃ সেলিনা হায়াত আইভী ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের ভোটার। আইভীর মিডিয়া সেল সূত্র জানায়, তিনি সকাল সাড়ে নয়টায় পশ্চিম দেওভোগ এলাকার শিশুবাগ স্কুলে তার ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। এদিকে বিএনপি মেয়র প্রার্থী সাখাওয়াত হোসেন খান ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের ভোটার। তিনি সকাল আটটায় আদর্শ হাইস্কুল এ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে তার ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন বলে জানিয়েছে সাখাওয়াতের মিডিয়া সেল। যা বললেন রিটার্নিং অফিসার ॥ রিটার্নিং অফিসার নুরুজ্জামান তালুকদার জনকণ্ঠকে বলেন, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকে এখন পর্যন্ত কোথাও কোন বিশৃঙ্খলা ঘটেনি। আশা করছি শান্তিপূর্ণভাবে ভোট গ্রহণও করতে পারব। সমস্ত প্রস্তুতির কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ১৭৪ কেন্দ্রেই ভোট গ্রহণে প্রয়োজনীয় ব্যালট পেপার, সিল ও ব্যালট বাক্সসহ অন্যান্য সরঞ্জাম পৌঁছে দেয়া হয়েছে। কেন্দ্রগুলোতে দায়িত্বে থাকা ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাও পৌঁছে গেছেন। আশা করছি কোথাও কোন সমস্যা নেই। বৈধ ও অবৈধ অস্ত্রের বিষয়ে তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন এলাকায় ৯১৭ বৈধ আগ্নেয়াস্ত্র রয়েছে। এদের কারো অস্ত্রই আমরা জমা নিইনি। সবাইকে বলে দেয়া হয়েছে কেউ অস্ত্র বের করবেন না, এখন পর্যন্ত কেউ বের করেওনি বলে তিনি জানান। তিনি বলেন, যদি কেউ তার অবৈধ অস্ত্র বের করেছেন, এমন খবর পাওয়া যায় তাহলে তার ওই অস্ত্র সিজ করা হবে। অবৈধ অস্ত্রের বিষয়ে তিনি বলেন, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মাঠে কাজ করছে। তবে কোন অস্ত্র উদ্ধার এখনও হয়নি। আর প্রচার চলাকালে কেউ অবৈধ অস্ত্র প্রদর্শন করেছেন বলেও খবর পাওয়া যায়নি। ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রের বিষয়ে তিনি বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ বলতে ১৩৭ কেন্দ্র অতিগুরুত্ব হিসেবে চিহ্নিত করেছি আমরা। একটি গোয়েন্দা সংস্থা আমাদের তালিকা দিয়েছে, সেই অনুযায়ী আমরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দায়িত্ব দিয়েছি। তিনি বলেন, সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ১০টি কেন্দ্রে আমাদের বেশি নজর থাকবে। নির্বাচনের সার্বিক মূল্যায়ন জানতে চাইলে রিটার্নিং অফিসার বলেন, শুরু থেকে এখন পর্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে আমরা পার করেছি। যে কোন মূল্যে শান্তিুপূর্ণ পরিবেশেই ভোটগ্রহণ সমাপ্ত করব। যদি কেউ অবৈধভাবে ব্যালটে হাত দেয়, তাহলে তিনি গুলি পাবেন বলে মন্তব্য করেন রিটার্নিং অফিসার। ডিআইজি যা বললেন ॥ পুলিশের ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি মাহফুজুল হক নুরুজ্জামান বুধবার বিকেলে ভোটারদের মাঝে লিফলেট বিতরণকালে বলেন, আমাদের লিফলেট বিতরণের উদ্দেশ্য হচ্ছে মানুষ যাতে নিরাপদে, উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট দিতে পারে। তিনি বলেন, এখানে যাতে সুন্দর এবং সুষ্ঠু নির্র্বাচন হয়, নারায়ণগঞ্জের এই নির্বাচনটা যেন একটা মডেল নির্বাচন হয় সেজন্য সবাইকে সতর্ক, সচেতন করা এবং আশ্বস্ত করা। সে কারণেই আমাদের নারায়ণগঞ্জে আসা। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মাহফুজুল হক নুরুজ্জামান বলেন, এই নির্বাচন আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জিং। আমাদের জন্য সব কাজই চ্যালেঞ্জিং। এটার কোন ব্যত্যয় নেই। নির্বাচন নিয়ে কেউ যাতে কোন প্রশ্ন করতে না পারে এবং নির্বাচন যাতে সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য হয় সেজন্যই আমাদের এই প্রক্রিয়া। তিনি আরও বলেন, বৃহস্পতিবার উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচন হবে। কেউ ঘরে থাকবে না, সবাই কেন্দ্রে গিয়ে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবে বলেও প্রত্যাশা ডিআইজির। প্রায় দেড় শ’ বছর আগে নারায়ণগঞ্জ শহর হিসেবে গড়ে ওঠে। বন্দরনগরী চট্টগ্রামের পরই ব্যবসাবাণিজ্যের ক্ষেত্রে নারায়ণগঞ্জের অবস্থান। এসব ছাড়াও রাজনৈতিক কারণে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন এখন দেশের মানুষের আলোচনার প্রধান বিষয়। বর্তমান নির্বাচন কমিশনেরও এটি শেষ সিটি নির্বাচন। এ কারণে কমিশন কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা নারায়ণগঞ্জ ॥ নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বিজিবি, র‌্যাব, পুলিশ, নৌ পুলিশ, শিল্প পুলিশ, কোস্টগার্ড ও আনসার বাহিনীসহ ৭টি বাহিনীর সাড়ে ৯ হাজার সদস্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় দায়িত্ব পালন করবেন আজ। এর মধ্যে ২২ প্লাটুন বিজিবির, ৩২ ব্যাটালিয়ন র‌্যাব, পুলিশ ৪ হাজার, শিল্পাঞ্চল পুলিশ ২শ’, কোস্টগার্ড ৩ প্লাটুন, নৌ পুলিশ ৩ প্লাটুন ও আনসার ১ প্লাটুন। ২২ প্লাটুন বিজিবির মধ্যে সদরে ৭ প্লাটুন, সিদ্ধিরগঞ্জে ১০ প্লাটুন ও বন্দরে ৫ প্লাটুন মোতায়েন থাকবে। মোট সাড়ে নয় হাজার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যের মধ্যে সাড়ে ৫ হাজার বিভিন্ন ওয়ার্ডে মোবাইল টিম ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে। বাকি ৪ হাজার পুলিশ ও আনসার ১৭৪ কেন্দ্রে স্থায়ী দায়িত্বে থাকবে। ভ্রাম্যমাণ আদালত থাকবে ৮৫ ॥ রিটার্নিং অফিসার নুরুজ্জামান তালুকদার জানান, ভোট গ্রহণের সময় কোথাও কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে জড়িতদের সঙ্গে সঙ্গে সাজা দেয়া হবে। এ জন্য ৭১ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও ১৪ বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের দায়িত্বে ৮৫ মোবাইলকোর্ট কাজ করবে। অপরাধকারীরা কোনভাবেই পার পাবে না। যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করবে বা বিশৃঙ্খলার চেষ্টা করবে যে সঙ্গে সঙ্গেই সাজা পাবে। এই সিটি কর্পোরেশনের আয়তন ৭২.৪৩ বর্গ কিমি। নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনে ২৭ ওয়ার্ড আছে। ১৮৭৬ সালে পৌরসভা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয় নারায়ণগঞ্জ। ২০১১ সালের ৫ মে থেকে সিটি কর্পোরেশন হিসেবে রূপ পায় নারায়ণগঞ্জ পৌরসভা। নারায়ণগঞ্জ পৌরসভার সঙ্গে বিলুপ্ত হয় কদমরসুল ও সিদ্ধিরগঞ্জ পৌরসভাও। একই বছরের ৩০ অক্টোবর নির্বাচনের মধ্য দিয়ে সিটি কর্পোরেশন পূর্ণাঙ্গ রূপ পায়। এই সিটি কর্পোরেশনের প্রথম মেয়র হিসেবে এই নগরকে উন্নয়নের জোয়ারে ভাসিয়ে দেন ডাঃ সেলিনা হায়াত আইভী। ভোটারদের কেন্দ্রে আসার আহ্বান আইভী ও সাখাওয়াতের ॥ নির্বাচনের পরিবেশ স্বাভাবিক আছে উল্লেখ করে ভোটারদের কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সমর্থিত মেয়র প্রার্থী ডাঃ সেলিনা হায়াত আইভী। সাখাওয়াত বলেছেন, যে কোন পরিস্থিতিতেই যেন ভোটাররা ভোট দিতে কেন্দ্রে যান। ভোটারদের উদ্দেশে বুধবার সেলিনা হায়াত আইভী সাংবাদিকদের বলেন, শান্তিপূর্ণভাবেই ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হবে বলে আশা করছি। আপনারা কেন্দ্রে এসে ভোট দিন। আমি কারচুপির মাধ্যমে জয় চাই না। তিনি বলেন, কারচুপির মাধ্যমে জয়ের কোন চেষ্টাও আমি করিনি। জনগণ যাকে ভোট দেবেন সেই মেয়র হবেন। এখানে জোরজবরদস্তির কিছু নেই। তিনি আরও বলেন, প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে প্রচারের শেষদিন পর্যন্ত আমরা শান্তিপূর্ণভাবে কাজ করেছি। আশা করছি, ভোটের দিনও সবাই শান্তিপূর্ণভাবেই ভোট দেবেন। আমি ভোটে বিশ্বাসী। নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষভাবে কাজ করছে বলেও মন্তব্য করেন আইভী। অন্যদিকে, বিএনপি সমর্থিত মেয়র প্রার্থী এ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খানও ভোটারদের কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। ভোটরদের উদ্দেশে তিনি বলেন, যত শঙ্কাই থাক আপনারা কেন্দ্রে আসুন, ভোট দিন। ভোটের বিকল্প কিছুই নেই। ভোটের মাধ্যমে যেই নির্বাচিত হবেন তাকেই আপনারা মেনে নেবেন। তবে কারচুপি হলে সহ্য করা হবে না বলে মন্তব্য করেন সাখাওয়াত।
×