ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

মিথ্যা প্রতিবেদনে বসত ভিটা হারানোর শঙ্কা গারো পরিবারের

প্রকাশিত: ০৫:২৩, ২২ ডিসেম্বর ২০১৬

মিথ্যা প্রতিবেদনে বসত ভিটা হারানোর শঙ্কা গারো পরিবারের

নিজস্ব সংবাদদাতা, শেরপুর, ২১ ডিসেম্বর ॥ প্রতিপক্ষের ষড়যন্ত্র, নানা হুমকি আর মামলা-মোকদ্দমার বেড়াজালে বংশানুক্রমে স্বত্বদখলীয় ৪০ শতক ভূমিসহ বসতভিটা হারানোর আশঙ্কায় রয়েছে শেরপুরের সীমান্তবর্তী ঝিনাইগাতী উপজেলার পশ্চিমগজারীকুড়া গ্রামের আদিবাসী অসহায় পরিবার। ওই বিষয়ে বুধবার ভুক্তভোগী পরিবারের প্রধান ত্রিপলা মারাক জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট দফতরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগ উঠেছে, স্থানীয় একটি অশুভ মহল ত্রিপলা মারাকদের প্রতিপক্ষ স্থানীয় সুরভী সাংমাকে পুঁজি করে গারো পরিবারের মাঝে বিভেদ সৃষ্টি করে উভয় পক্ষের জমিজমা হাতিয়ে নেয়ার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। জানা যায়, ঝিনাইগাতীর ভারুয়া মৌজায় ৪০ শতাংশ ভূমিতে উত্তরাধিকার, গারো আইন ও সামাজিক প্রথামতে মাতৃতান্ত্রিক ওয়ারিশ হিসেবে স্থানীয় ত্রিপলা মারাক, প্রমলা মারাক ও প্রবালিকা মারাক নামে ৩ সহোদর বসতবাড়ি নির্মাণ করে দীর্ঘদিন যাবত বসবাস করে আসছেন। ওই অবস্থায় প্রভাবশালী মহলের যোগসাজশে সুরভি সাংমা ত্রিপলা মারাকদের বসতভিটাসহ স্বত্বদখলীয় জমি জবর দখলের অপচেষ্টায় লিপ্ত। এক পর্যায়ে গত ১২ জুলাই অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নালিশী মোকদ্দমা দায়ের করে। আদালত বিষয়টি সরেজমিনে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন। পরবর্তীতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিষয়টি সরেজমিনে খতিয়ে দেখার জন্য কানুনগো এএইচএম শামসুল ইসলামকে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিলে তদন্ত কর্মকর্তা কুচক্রী সুরভি সাংমার সঙ্গে যোগসাজশ করে সাক্ষ্যপ্রমাণ ছাড়া সরেজমিনে তদন্ত না করে মনগড়া প্রতিবেদন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর দাখিল করেন। তদন্তকারী কর্মকর্তার প্রতিবেদনের আলোকে তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ সেলিম রেজা ২৬ জুলাই অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে প্রেরণ করেন। প্রতিবেদনের আলোকে আদালত নালিশী জমি ত্রিপলা মারাকের বসতবাড়ির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে। আদালতের নিষেধাজ্ঞার খড়গ নিয়ে বসতভিটা হারানোর ভয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে আদিবাসী পরিবারটি। এছাড়া বসতভিটা ছাড়তে প্রায় প্রতিনিয়ত হুমকি দেয়া হচ্ছে ত্রিপলা মারাকের স্বজনদের। এ ব্যাপারে ঝিনাইগাতী ট্রাইবাল ওয়েলফেয়ার এ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান নবেশ খকশী বলেন, গারো আইনে মায়ের সম্পত্তিতে ছেলেদের অধিকার নেই। এক্ষেত্রে ভূমির মালিক প্রমলা মারাক, ত্রিপলা মারাক ও প্রবিলা মারাক এবং তাদের আত্মীয়তার সুবাদে ওই জমিতে প্রবেশ সাংমা ও মার্টিনা চাম্বুগং বসতবাড়ি নির্মাণ করে ভোগদখলকার আছেন। সুরভি সাংমা বিশেষ মহলের কুচক্রান্তে নেহায়েত পরিবারটিকে হয়রানি করার উদ্দেশেই মামলা-মোকদ্দমায় জড়াচ্ছেন।তদন্ত কর্মকর্তা সত্যকে আড়াল করে প্রতিবেদনে ওই ভূমি সুরভি সাংমার দখলে আছে বলে উল্লেখ করেছেন।
×