ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

যশোরের শহীদস্মৃতি রক্ষার প্রস্তাব ফাইলবন্দী

প্রকাশিত: ০৫:৫৯, ২১ ডিসেম্বর ২০১৬

যশোরের শহীদস্মৃতি রক্ষার প্রস্তাব ফাইলবন্দী

স্টাফ রিপোর্টার, যশোর অফিস ॥ যশোরে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের শহীদদের সম্মান ও স্মৃতি সুরক্ষায় বিজয় ও স্মৃতিস্তম্ভ সংস্কার এবং নির্মাণে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো ৪ কোটি টাকার প্রস্তাবনা ফাইলবন্দী হয়ে পড়ে আছে। মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতিবিজড়িত কয়েকটি স্পটসহ কয়েকটি পুরনো স্তম্ভ মিলিয়ে পাঁচটির প্রস্তাবনা পাঠানোর এক বছর পার হলেও কার্যকর ব্যবস্থা না নেয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন যশোরের মুক্তিযোদ্ধারা। দেশের প্রথম শত্রুমুক্ত জেলা, মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের বীরগাথা জীবন্ত দলিলের স্মৃতি আর ইতিহাস বহনকারী জেলা যশোর। দেশ মাতৃকার জন্য এখানে প্রাণ দেয়া শহীদদের স্মৃতি ও সম্মান সুরক্ষায় বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সদর উপজেলা ইউনিট কমান্ড মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ে ১২ দফা দাবি পেশ করেন। সময়োপযোগী ও যৌক্তিক ওই দাবি মন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছে দেয়া হয়। দাবিগুলোর মধ্যে শহীদদের স্মৃতি ও বিজয় স্তম্ভগুলো সংস্কার ও নির্মাণের জন্য দ্রুত অর্থ বরাদ্দের দাবি করা হয়। ওই দাবির প্রায় এক বছর পার হয়ে গেলেও ফাইল এগুচ্ছে না বলে তথ্য মিলেছে। সদর উপেজেলা ইউনিট কমান্ডের তথ্যমতে, খাজুরা শহীদ স্মৃতি স্তম্ভ সংস্কার ও নির্মাণ, খুলনা বাসস্ট্যান্ড এলাকার বিজয় স্তম্ভ সংস্কার ও নির্মাণ, চাঁচড়া মোড়, মুড়লী মোড় ও বাহাদুরপুর এলাকায় নতুন স্মৃতি স্তম্ভ নির্মাণের জন্য প্রায় ৪ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়ার দাবি জানিয়ে একটি প্রস্তাবনা তৈরি করা হয়। যা স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়েও পাঠানো হয়। মন্ত্রণালয়ের পক্ষে এলজিইডি যশোর সদর উপজেলা প্রকৌশলীকে দায়িত্বে দেন প্রস্তাবিত শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ ও বিজয় স্তম্ভগুলোর অবস্থান, প্রস্তাবিত নকসা ও সম্ভাব্য ব্যয়ের উপর রিপোর্ট পাঠাতে বলেন। সে মোতাবেক উপজেলা প্রকৌশলী শহিদুল ইসলাম যশোর সদর উপজেলা ইউনিট কমান্ডার মোহাম্মদ আলী স্বপনকে নিয়ে স্পটগুলোতে যান এবং মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে কথা বলেন। মুক্তিযোদ্ধাদের দাবি ও নকসার উপর তিনি কাজ শুরু করেন। এরপর একটি রিপোর্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠান। এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলী শহিদুল ইসলাম জানান, মুক্তিযোদ্ধাদের এ নির্মাণ ও সংস্কার দাবি যৌক্তিক। এ ব্যাপারে চার কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ দাবি করা হলেও প্রায় আড়াই কোটি টাকা ব্যয়ের একটি খসড়া প্রস্তাবনা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ যশোর জেলা ইউনিট কমান্ডের কমান্ডার রাজেক আহমেদ জানান, শুধু যশোরেই নয়, সারা দেশে মুক্তিযোদ্ধা ও যুদ্ধের স্মৃতি যথাযথভাবে সুরক্ষায় সরকার কাজ শুরু করেছে। আর এটা জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগ ও অদম্য ইচ্ছার প্রতিফলন। তবে ওই কাজ ২০১৭ সাল থেকে শুরু হতে পারে এমন আভাস তিনি পেয়েছেন। সারা দেশের বধ্যভূমিগুলো, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ও প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধাদের কবর সরকার একই আদলে নির্মাণ করবে। মন্ত্রণালয়কে ভুল বুঝিয়ে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের স্বার্থ পরিপন্থী অনেক কাজ করিয়ে নিচ্ছে অসাধু চক্র। অথচ যশোরের মুক্তিযোদ্ধাদের দেয়া প্রস্তাব কার্যকর হয়নি।
×