ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

টিএসসিতে স্মরণসভা

শাকিলের অকালমৃত্যু ভীষণ কষ্টের বেদনার ॥ মুহিত

প্রকাশিত: ০৫:৫৬, ২১ ডিসেম্বর ২০১৬

শাকিলের অকালমৃত্যু ভীষণ কষ্টের বেদনার ॥ মুহিত

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, জটিল বিষয়গুলো দ্রুত আত্মস্থ করে তা সাবলীলভাবে লেখার এক অসাধারণ ক্ষমতা ছিল মাহবুবুল হক শাকিলের। দীর্ঘ ৮ বছর অত্যন্ত ঘনিষ্টভাবে কাজ করার অভিজ্ঞতায় আমি নিঃসন্দেহে বলতে পারি, কঠিন কোন বিষয়ে একটু বুঝিয়ে বললেই তিনি তা অনুধাবন করে অত্যন্ত সুন্দরভাবে লিখে হাজির হতেন। তাঁর অকাল মৃত্যু সত্যিই ভীষণ কষ্টের, বেদনার। সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) মিলনায়তনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সদস্য প্রয়াত বিশেষ সহকারী (মিডিয়া) ও কবি মাহবুবুল হক শাকিলের ৪৮তম জন্মদিন উপলক্ষে আয়োজিত স্মরণসভায় তিনি একথা বলেন। শাকিলের ছাত্র ও কর্মজীবনের সহকর্মী, বন্ধু-বান্ধবররা ‘সুহৃদজন’ নামে একটি সংগঠনের ব্যানারে এ স্মরণসভার আয়োজন করে। মাহবুবুল হক শাকিলের স্মৃতিচারণ করে আবুল মাল আব্দুল মুহিত আরও বলেন, শাকিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে অত্যন্ত ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতেন। সেজন্য তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পছন্দ ও অপছন্দ সম্পর্কে ভালভাবে বুঝতেন। প্রধানমন্ত্রীর পছন্দ এবং অপছন্দের বিষয়ে সব সময় অত্যন্ত সতর্ক থাকতেন। তিনি তাঁর কাজের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মুগ্ধ করে রাখতেন। আওয়ামী লীগের গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিআরআইর প্রতিষ্ঠালগ্নে মাহবুবুল হক শাকিলসহ ৫ জনকে নিয়ে দীর্ঘ ৮ বছর দলের জন্য কাজ করার অভিজ্ঞতার কথা স্মরণ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, ওই সময় মূলত শাকিল ছিল আমার দক্ষিণহস্ত। সিআরআই কার্যক্রম পরিচালনা করতে গিয়ে বার বার তৎকালীন ক্ষমতাসীন বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার বাধা দিয়েছে, হামলা চালিয়ে প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ করে দিয়েছে। তারপরও আমরা থেমে থাকিনি। এক্ষেত্রেও শাকিল দলের জন্য নিরলসভাবে কাজ করে গেছে। আর রাজনৈতিক বিষয়াবলীও অনুধাবন করে তা সুন্দরভাবে উপস্থাপন করতে পারতেন মাহবুবুল হক শাকিল। তাঁর অকাল প্রয়াণে সত্যিই অপূরণীয় ক্ষতি হলো। যা কখনও পূরণ হবার নয়। আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য এবং স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম মাহবুবুল হক শাকিলের স্মৃতিচারণ করে বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু আদর্শের একজন নিষ্ঠাবান কর্মী এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছায়াসঙ্গী ছিলেন মাহবুবুল হক শাকিল। সাহস ও লেখনী দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সে সবসময় সাহায্য করেছেন। একাত্তরের ঘাতকদের বিচার করে দেশকে উন্নয়নের মহাসড়কে উন্নীত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আর তাঁর এ অসাধ্য সাধনের পেছনে যাদের ছোট ছোট অবদান রয়েছে তার মধ্যে শাকিলও একজন। তিনি বলেন, একযুগ সন্ধিক্ষণে মাহবুবুল হক শাকিল চলে গেল। সামনে অনেক লড়াই রয়েছে। তিনি বেঁচে থাকলে এ লড়াইয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারতেন। শাকিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একজন সাহসী অনুরাগী ছিলেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, মাহবুবুল হক শাকিল তার সাহস, লেখা ও কাজের মধ্য দিয়ে অমর হয়ে থাকবেন। মাহবুবুল হক শাকিলের মেধা ছিল বিদ্যুতের ঝলকের মতো ছিল উল্লেখ করে কবি শিহাব সরকার বলেন, প্রতিভার যে চাপ রয়েছে তা নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন। অনেক বড় বড় কবিরাও তা নিয়ন্ত্রণ করতে পারেননি। মাইকেল মধুসূদন দত্তের মতো কবি মাহবুবুল হক শাকিলও প্রতিভার চাপ সহ্য করতে পারেননি। আর সেজন্যই অকাল মৃত্যুকে বরণ করে নিতে হয়েছে। শাকিলের মতো এ ধরনের মৃত্যুকে প্রকৃতির পরিহাসও বলা যেতে পারে। স্মরণসভায় অন্যান্যের মধ্যে বিশিষ্ট সাংবাদিক ও কলামিস্ট আবেদ খান, কবি অসীম সরকার, কবি হাবিবুল্লাহ সিরাজী, কবি নিশাত খান, অধ্যাপক ডাঃ উত্তম কুমার বডুয়া, অধ্যাপক ডাঃ জাহাঙ্গীর আলম, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক একেএম এনামুল হক শামীম, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, উপ-দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব, সুভাষ সিংহ রায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপ-প্রেস সচিব আশরাফুল আলম খোকন, সাংবাদিক অঞ্জন রায়, রাহুল রাহা, ছাত্র নেতা শাহজাদা মহিউদ্দিন, জয়দেব নন্দী, পরিবারের সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান ফারুকসহ তাঁর দীর্ঘদিনের বন্ধু, সুহৃদরা বক্তব্য রাখেন। সভা পরিচালনা করেন সংবাদ প্রতিদিনের উপ-সম্পাদক কামাল পাশা চৌধুরী। মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন প্রয়াত মাহবুবুল হক শাকিলের ছোটভাই নাইমুল হক বাবু।
×