ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

চার নৌকা ফেরত

উখিয়ায় রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির পরিদর্শনে ইন্দোনেশীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৫:৪৭, ২১ ডিসেম্বর ২০১৬

উখিয়ায় রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির পরিদর্শনে ইন্দোনেশীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী

মোয়াজ্জেমূল হক/এইচএম এরশাদ ॥ মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে নির্যাতিত হয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের সংখ্যা কেবলই বাড়ছে। টেকনাফ থেকে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি পর্যন্ত স্থল সীমান্তের বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে রোহিঙ্গারা অবৈধভাবে প্রবেশ করছে। এছাড়া সমুদ্র পথেও এরা ঢুকছে। সর্বশেষ মঙ্গলবার সকালে নাফ নদীর একটি পয়েন্ট দিয়ে অবৈধ অনুপ্রবেশকালে চার নৌকাবোঝাই রোহিঙ্গা সদস্যদের আগমন ঠেকিয়ে দিয়েছে বিজিবি। তাদের পুনরায় মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে নাফ নদীর একটি পয়েন্ট দিয়ে চার নৌকা বোঝাই রোহিঙ্গা দলের অনুপ্রবেশ ঠেকিয়ে দিয়েছে বিজিবি সদস্যরা। টেকনাফ-২ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল আবুজার আল জাহিদ জানিয়েছেন, মঙ্গলবার সকাল ৮টা পর্যন্ত নাফ নদী পার হয়ে হৃীলা সীমান্তের পয়েন্ট দিয়ে রোহিঙ্গা বোঝাই চারটি নৌকা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের চেষ্টাকালে তাদের আটকে দেয়া হয়। পরে তাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সহিংস ঘটনা শুরুর পর এ পর্যন্ত সাত শতাধিক রোহিঙ্গা বোঝাই নৌকা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশকালে আটক করে তাদের ফেরত পাঠানো হয়েছে। রোহিঙ্গা পরিস্থিতি নিয়ে অনুসন্ধানে জানা গেছে, মংডু সীমান্ত চৌকিতে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনার পর আরএসও ক্যাডাররা সাধারণ রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে প্রবেশে উৎসাহিত করছে। এতে করে আন্তর্জাতিক সাহায্য তৎপরতা বৃদ্ধি ঘটানোকে টার্গেট করে তারা এ ঘটনা সৃষ্টি করছে বলে জানা গেছে। অভিযোগ উঠেছে, বৈধ অবৈধভাবে বাংলাদেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের সাহায্যের বড় একটি অংশ আরএসও ক্যাডারদের পকেটে চলে যায়। এরপরও এদেশে পালিয়ে আসার পর রোহিঙ্গারা বিভিন্নভাবে আশ্রয়ের পাশাপাশি আর্থিক সহযোগিতা পেয়ে থাকে এমন তথ্য আরাকান প্রদেশে প্রচার হওয়ার পর রোহিঙ্গারা এদেশে পালিয়ে আসতে ব্যাপকভাবে তৎপর হয়েছে বলে জানা গেছে। এ প্রক্রিয়ায় রোহিঙ্গারা সীমান্তের বিভিন্ন পয়েন্টে দালালদের চাহিদার অর্থ দিয়ে অনুপ্রবেশে সুযোগ পাচ্ছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। অপরদিকে, দলে দলে আবারও রোহিঙ্গা আগমনের ঘটনায় গোটা কক্সবাজার অঞ্চল জুড়ে উদ্বেগ উৎকণ্ঠার সৃষ্টি হয়েছে। মূলত এসব রোহিঙ্গারা অনগ্রসর এলাকার বাসিন্দা। আর্থিকভাবে অসচ্ছল। ফলে এদের দিয়ে যে কোন ধরনের অপরাধ ঘটানো যায়, যা ইতোমধ্যে বাংলাদেশে বিভিন্ন ঘটনায় প্রমাণ মিলেছে। ইতোমধ্যে রোহিঙ্গারা কক্সবাজার চট্টগ্রাম হয়ে দেশের অন্যান্য স্থানেও পৌঁছে গেছে। শুধু তাই নয়, এদের ক্ষুদ্র একটি অংশ বাংলাদেশী পাসপোর্ট গ্রহণ করে মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পাড়ি দেয়ার ঘটনা রয়েছে। নিজেদের বাঙালি পরিচয় দিয়ে এরা বিদেশেও নানা ধরনের অপকর্মে জড়িত হয়ে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি বিনষ্ট করছে বলে জোরালো অভিযোগ রয়েছে। বিশেষ করে সৌদি আরবে রোহিঙ্গাদের বড় একটি অংশ আশ্রয় লাভ করেছে। সেখানে এদের পরিচয় রয়েছে বাঙালি হিসেবে। ফলে এদের যত অপকর্মের দায়ভার বাঙালির ওপর বর্তাচ্ছে।
×