ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ইলেক্টোরাল কলেজ ভোটে বিজয়ী হওয়ার পর ট্রাম্পকে মেনে নিতে আরএনসির আহ্বান

আনুষ্ঠানিকভাবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলেন ট্রাম্প

প্রকাশিত: ০৫:১৩, ২১ ডিসেম্বর ২০১৬

আনুষ্ঠানিকভাবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলেন ট্রাম্প

যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাচিত হওয়ার বিষয়টি সোমবার নিশ্চিত করেছে আমেরিকার ইলেক্টোরাল কলেজ। রিপাবলিকানের হোয়াইট হাউসে যাওয়ার পথে বাধা সৃষ্টির জন্য গোঁড়া বিরোধীদের বেপারোয়া উদ্যোগ কোন প্রভাব রাখতে পারেনি এ নির্বাচনে। খবর এএফপির। ডেমোক্র্যাটিক প্রার্থী হিলারি ক্লিন্টনের বিরুদ্ধে ট্রাম্পের অপ্রত্যাশিত বিজয়ের ছয় সপ্তাহ পর আনুষ্ঠানিক বিজয়ের জন্য প্রয়োজনীয় প্রত্যাশিত ২৭০ ভোটের অনেক বেশি ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়ে যাত্রা শুরু করলেন তিনি। ২০ জানুয়ারি বারাক ওবামার উত্তরসূরি হওয়ার বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে ওঠল এবার। মার্কিন মিডিয়া একথা বলেছে। ৭০ বছর বয়স্ক ধনকুবের এ ফল প্রকাশিত হওয়ার পর টুইটে বলেছেন, আমরা সাফল্য অর্জন করেছি। আমার সকল মহান সমর্থকদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আমরা নির্বাচনে সরকারীভাবে যথার্থই বিজয় অর্জন করেছি যদিও সকল বানোয়াট ও অযথার্থ মিডিয়া উদ্যোগ ছিল আমাদের বিরুদ্ধে। তার নির্বাচনী প্রচার অভিযান টিম প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলা হয়, নব-নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট তার পক্ষে এতো বেশি সংখ্যক ভোট পড়ায় অভিনন্দন জানিয়েছেন সমর্থকদের। তিনি বিবৃতিতে বলেন, এ ঐতিহাসিক পদক্ষেপ গ্রহণের সঙ্গে আমরা উজ্জ্বল ভবিষ্যত গড়ে তোলার জন্য সামনে অগ্রসর হতে সমর্থ হব। স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে ইলেক্টোরাল কলেজ ভোট হচ্ছে কম গুরুত্বপূর্ণ ও নামমাত্র এক আনুষ্ঠানিকতা যেখানে ইলেক্টোর্সরা হচ্ছেন অধিকাংশই দলীয় সদস্য এবং তারা এমন প্রার্থীকেই ভোট দেন যিনি তাদের রাজ্যে পপুলার ভোটে জয়ী হয়েছেন। এবার প্রচার অভিযানের বিভাজন সৃষ্টির ধরন, ট্রাম্পের উস্কানিমূলক ব্যক্তিত্ব এবং পপুলার ভোটে হিলারির প্রায় ৩ লাখ ভোটে এগিয়ে থাকা, সবকিছু মিলে এ ঝামেলা সৃষ্টিতে ভূমিকা রেখেছে। ইলেক্টোরাল ভোট যেভাবে কাজ করে তা হচ্ছে, মার্কিন ভোটাররা ৮ নবেম্বর যখন ভোট দেয় তখন তারা প্রত্যক্ষভাবে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করে না। বরং ৫৩৮ জন ইলেক্টোর সাধারণ ভোটারদের ইচ্ছা বাস্তবায়নের দায়িত্ব পালন করেন। ট্রাম্প এ ইলেক্টোরদের মোট ৩০৬ ভোট পেয়ে স্পষ্ট সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করেন। ডেমোক্র্যাট কর্মীরা ট্রাম্পকে জাতির জন্য এক হুমকি হিসেবে তুলে ধরেন এবং তার বিরুদ্ধে কয়েক সপ্তাহব্যাপী প্রচার অভিযানে নামেন। হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পের দায়িত্ব গ্রহণে বাধা সৃষ্টির জন্য অন্তত ৩৭ জন রিপাবলিকান ইলেক্টোরকে সম্মত করার প্রয়োজন হয়ে পড়ে তাদের। নিউইয়র্ক টাইমসের মতে, মোট ৭ জন তথাকথিত অবিশ্বস্ত ইলেক্টোর তাদের দলীয় প্রার্থীর প্রতি সমর্থন ব্যক্ত না করে অন্য কোন প্রার্থীর পক্ষে সপক্ষ ত্যাগ করেন। হাওয়াইয়ে ১জন ইলেক্টোর ডেমোক্র্যাটিক প্রাইমারিতে ক্লিন্টনের বিরোধী সিনেটর বার্নি স্যা-ারসের পক্ষে ভোট দেন। টেক্সাসের ২ রিপাবলিকান ইলেক্টোর সপক্ষ ত্যাগ করেন। ১জন প্রতিনিধি পরিষদের সাবেক সদস্য রন পলের পক্ষে এবং অন্যজন ওহিওয়ের গবর্নর জন ক্যামিকের পক্ষে ভোট দেন। ওয়াশিংটনে ১২ ইলেক্টোরের মধ্যে ৩ জন সাবেক রিপাবলিকান পররাষ্ট্রমন্ত্রী কলিন পাওয়েলের পক্ষে এবং চতুর্থজন স্থানীয় আমেরিকান নেতা ফেইথ স্পটেট ঈগলের পক্ষে ভোট দেন। রিপাবলিকান ন্যাশনাল কমিটি (আরএনসি) ফলাফলের প্রতি অভিনন্দন জানিয়েছে এবং ট্রাম্পের বিজয় শেষবারের মতো মেনে নেয়ার জন্য ডেমোক্র্যাটদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। আরএনসির কো-চেয়ার শ্যারন ডে এক বিবৃতিতে বলেছেন, এ ঐতিহাসিক নির্বাচন এখন আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ হয়েছে। দেশের মঙ্গলের জন্য এ নির্বাচনের বৈধতা নস্যাতে নৈরাশ্যব্যঞ্জক প্রচেষ্টা অবশ্য বন্ধ করতে হবে ডেমোক্র্যাটদের। নির্বাচনে রিপাবলিকান প্রার্থীকে জয়ী করার লক্ষ্যে রুশ হ্যাকিং নিয়ে শোরগোল শুরু হলে সম্প্রতি ট্রাম্পবিরোধী তৎপরতা আরও গতিশীলতা পায়। নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট দায়িত্ব গ্রহণের দু’সপ্তাহ আগে ৬ জানুয়ারি মার্কিন কংগ্রেসে আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হবে ভোটের চূড়ান্ত ফলাফল।
×