ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

কেবিনেটে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ

গার্মেন্টস শ্রমিকদের উস্কানিদাতাদের খুঁজে বের করতে হবে

প্রকাশিত: ০৫:৪০, ২০ ডিসেম্বর ২০১৬

গার্মেন্টস শ্রমিকদের উস্কানিদাতাদের খুঁজে বের করতে হবে

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ গার্মেন্টস শ্রমিকদের উস্কানিদাতাদের খুঁজে বের করে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যারা পেছন থেকে এ সেক্টরে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা চালাচ্ছে তাদের বিরুদ্ধেও তিনি ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে তিনি এ নির্দেশ দেন। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বেতন বৃদ্ধির দাবিতে সপ্তাহখানেক ধরে বিভিন্ন গার্মেন্টস শ্রমিকরা কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ কর্মসূচী পালন করে আসছে। তার সূত্র ধরে শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মজিবুল হক চুন্নু গর্মেন্টস শ্রমিকদের বেতন বাড়ানোর প্রস্তাব করেন মন্ত্রিপরিষদ বৈঠকে। প্রধানমন্ত্রী তখন তিরস্কারের সুরে বলেন, তা হলে তুমিই উস্কানিদাতা। আমাকে বুঝতে হবে তুমি উস্কানিদাতা কি-না। তুমি অথবা তোমার মন্ত্রণালয় থেকে কেউ উস্কানি দিচ্ছে। অথবা বাইরের কেউ উস্কানি দিচ্ছে। যেই হোক উস্কানিদাতাদের খুঁজে বের করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রীকে নির্দেশ দেন। সূত্র জানায়, মন্ত্রিসভা বৈঠকে শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মজিবুল হক বলেন, শ্রমিকদের বেতন অনেক কম। তাদের অন্তত মহার্ঘভাতা দিলেও চলে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০১৩ সালে তাদের বেতন বাড়ানো হয়েছে। শ্রমিকদের যখন বেতন বাড়ানো হয়েছে তখন সরকারী চাকরিজীবীদের বেতন বাড়ানো হয়নি। তারপর সরকারী চাকরিজীবীদের বেতন বাড়ানো হয়েছে। এছাড়া ওয়েজ বোর্ড ঘোষণার অন্তত পাঁচ বছরের মধ্যে বেতন বাড়ানোর সুযোগ থাকে না। এক বছরের মধ্যে হলে রিভিউ করার একটা সুযোগ থাকে। কবে তাদের বেতন বাড়ানো হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর এমন প্রশ্নের জবাবে শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বলেন, ২০০৯ সালের পর দুই দফা বেতন বাড়ানো হয়েছে। ২০১০ সালে গামের্ন্টস শ্রমিকদের বেতন ১ হাজার ছয় শ’ টাকা থেকে তিন হাজার টাকায় উন্নীত করা হয়। ২০১৩ সালে তাদের বেতন ৩ হাজার টাকা থেকে ৫ হাজার তিন শ’ টাকায় উন্নীত করা হয়েছে। বেতন-ভাতা বৃদ্ধির দাবিতে সপ্তাহখানেক ধরে আশুলিয়ার বেশ কয়েকটি কারখানায় কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ চলে আসছে। এ খবরে সোমবার বিভিন্ন গার্মেন্টস পরিদর্শন করেছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য এনামুর রহমান। তিনি বলেন, শ্রমিকদের দাবির ব্যাপারে মালিকপক্ষ এবং সরকারের সঙ্গে আলোচনা চলছে। কোন শ্রমিক মারা গেলে কারখানার নিজস্ব অর্থায়নের বাইরে শ্রমিক কল্যাণ তহবিল থেকে ইন্স্যুরেন্সের দুই লাখ টাকাসহ ৫ লাখ টাকা দেয়া হবে। কারখানায় কর্মরত অবস্থায় আহত হলে পাবে ২ লাখ টাকা, বড় কোন অসুখ হলে দেয়া হবে এক লাখ টাকা, এছাড়া মেধাবী সন্তানের পড়ালেখার জন্য বিভিন্ন হারে আর্থিক সুবিধা দেয়া হবে। তিনি আরও বলেন, সাধারণ শ্রমিকদের কোন বিভ্রান্তিমূলক তথ্যের ভিত্তিতে অসন্তোষ থেকে বিরত থেকে কাজে যোগ দিতে হবে। যারা এ ধরনের বিভ্রান্তিমূলক কাজ করবে তাদের ধরে পুলিশের হাতে দেয়ার আহ্বান জানান। এছাড়া পরিস্থিতি শান্ত রাখতে শিল্প পুলিশের পাশাপাশি ঢাকা জেলা পুলিশের উর্ধতন কর্মকর্তারা কাজ করে যাচ্ছে। যে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে কারখানাগুলোর সামনে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
×