ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

হেরেও সেমিফাইনালে বাংলাদেশ যুব দল

প্রকাশিত: ০৫:৩৭, ১৯ ডিসেম্বর ২০১৬

হেরেও সেমিফাইনালে বাংলাদেশ যুব দল

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশ-পাকিস্তান যুব দলের ম্যাচ তখনও শেষ হয়নি। মাঝপথে রয়েছে। তবে ততক্ষণেই অনুর্ধ-১৯ এশিয়া কাপ ক্রিকেটে বাংলাদেশ যুব দলের সেমিফাইনালে খেলা নিশ্চিত হয়ে গেছে। শেষ পর্যন্ত পাকিস্তানের বিপক্ষে ১ উইকেটে হেরেছে বাংলাদেশ অনুর্ধ-১৯ ক্রিকেট দল। হেরেও প্রথমবারের মতো টুর্নামেন্টের সেমিফাইনালে খেলা নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ। পয়েন্ট তালিকায় শীর্ষে থেকেই শেষ চারে খেলবে বাংলাদেশ। জিতেও টুর্নামেন্ট থেকে বাদ পড়েছে পাকিস্তান। আরেক দল হিসেবে আফগানিস্তান যুব দল সেমিফাইনালে খেলবে। শ্রীলঙ্কার গলে অনুষ্ঠিত হওয়া ম্যাচে টস জিতে পাকিস্তান বাংলাদেশকে আগে ব্যাট করতে পাঠায়। যে আফিফ হোসেন ধ্রুব টানা দুটি ম্যাচে ব্যর্থ হন। এবার ঝলক দেখান। তার ৮০ রানের দুর্দান্ত ইনিংসে ৪৯.৫ ওভারে ২৩০ রান করে অলআউট হয় বাংলাদেশ। জবাবে পাকিস্তানকে ভালই চেপে ধরেছিল। ২১৬ রানে ৯ উইকেট হারিয়ে বসেছিল পাকিস্তান। তখন জিততে ১৫ রানের দরকার ছিল। আর একটি উইকেটই তুলে নিতে পারেনি বাংলাদেশ। দশম উইকেটে সাদ খান (১৮*) ও মোহাম্মদ হাসনাইন (৪*) মিলে ১৭ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়ে পাকিস্তানকে জেতায়। ৪৯.১ ওভারে ২৩৩ রান করে জয় তুলে নেয় পাকিস্তান। তারাও সেমিফাইনালে খেলা নিশ্চিত করে। ২০১ রান পর্যন্ত মনে হচ্ছিল সহজেই জিতে যাবে পাকিস্তান। কিন্তু পরের ১৬ রানের মধ্যেই ৫ উইকেট তুলে নেয় বাংলাদেশ বোলাররা। তাতে করে শেষ ওভারে জিততে ২ রানের প্রয়োজন থাকে। প্রথম বলেই বাউন্ডারি হাঁকিয়ে দেন হাসনাইন। পাকিস্তানের জয়ও হয়ে যায়। ব্যাট হাতে দুর্দান্ত ইনিংস খেলার পর বল হাতেও ২ উইকেট নেন ধ্রুব। সিঙ্গাপুর ও আফগানিস্তানের ম্যাচটি শেষ হলো। আফগানিস্তান যুব দল সিঙ্গাপুরের ছুড়ে দেয়া ৭৪ রানের টার্গেট ৪.১ ওভারেই অতিক্রম করে ৯ উইকেটে জিতে গেল, তখনই বাংলাদেশের সেমিফাইনালে খেলা নিশ্চিত হয়ে গেল। কারণ আফগানরা যে এত বড় জয় নিয়েও রানরেটে বাংলাদেশকে পেছনে ফেলতে পারেনি। তখন রানরেটের হিসেবে বোঝাই যাচ্ছিল, পাকিস্তান বড় জয় পেলেও বাংলাদেশকে টপকাতে পারবে না। আর জয়ের ব্যবধান যত কমে আসবে পাকিস্তানেরই বাদ পড়ার সম্ভাবনা থাকবে। তাই হলো। বাংলাদেশ, আফগানিস্তান ও পাকিস্তান ১ বোনাস পয়েন্টসহ ২ জয় পেয়ে ৯ পয়েন্ট করে পেল। কিন্তু রানরেটে বাংলাদেশ (+১.৫৮৪) ও আফগানিস্তানের চেয়ে (+১.৪২৫) পেছনে থেকে টুর্নামেন্টের লীগ পর্ব থেকেই বিদায় নিল পাকিস্তান (+১.৩৬৮)। প্রথমবারের মতো লীগ পর্ব অতিক্রম করতে পারল না দুইবার ফাইনালে খেলা পাকিস্তান। এবারই প্রথম অনুর্ধ-১৯ এশিয়া কাপের সেমিফাইনালে খেলছে বাংলাদেশ যুব দল। এ বছর শুরুতেই বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে খেলা বাংলাদেশ দলটির এবার আশা শিরোপা জেতা। কিন্তু প্রথম লক্ষ্য ছিল সেমিফাইনালে খেলা। সেই আশা পূরণ হয়ে গেছে। বুধবার শ্রীলঙ্কা যুব দলের বিপক্ষে দ্বিতীয় সেমিফাইনালে মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ যুব দল। মঙ্গলবার ভারত ও আফগানিস্তান যুব দলের মধ্যকার প্রথম সেমিফাইনালটি অনুষ্ঠিত হবে। অনুর্ধ-১৯ এশিয়ান শ্রেষ্ঠত্বের টুর্নামেন্টে কখনও সেমিফাইনালই খেলতে পারেনি বাংলাদেশের তরুণ দল। বাংলাদেশকে স্বস্তিতে থাকতে দিচ্ছিল না ২০১৩ সালের টুর্নামেন্টও। পয়েন্ট ও রানরেট এবার বেশী থাকার পরও পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচটি শেষ না হওয়া পর্যন্ত সেমিফাইনালে উঠে গেছে বাংলাদেশ, তা বলা যাচ্ছিল না। কিন্তু যখনই আফগানিস্তান জিতে গেল, তখনই নিশ্চিত হয়ে গেল। ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে সংযুক্ত আরব আমিরাতে হওয়া সর্বশেষ আসরেও প্রথম দুই ম্যাচে জিতেছিল বাংলাদেশ। মালয়েশিয়া ও আফগানিস্তানের বিপক্ষে জয় তুলে নিয়েছিল। কিন্তু শেষ ম্যাচে শ্রীলঙ্কার কাছে হেরে যায়। তিন দলের পয়েন্ট সমান হয়ে যায়। কিন্তু রানরেটে এগিয়ে থেকে শ্রীলঙ্কা ও আফগানিস্তান চলে যায় সেমিফাইনালে। ২০১২ সালের মালয়েশিয়ায় অনুষ্ঠিত অনুর্ধ-১৯ এশিয়া কাপেও শেষ চারে খেলতে পারেনি বাংলাদেশ। প্রথম আসরে কাতারকে হারালেও শ্রীলঙ্কা-আফগানিস্তানের কাছে হেরে সেমিফাইনালে ওঠা হয়নি। এবার আফগানিস্তান ও সিঙ্গাপুরকে শুরুতেই হারিয়েছে। পাকিস্তানের কাছে হেরেছে। তাতেও কোন অসুবিধা হয়নি। হেরেও সেমিফাইনালে খেলা নিশ্চিত করে নিয়েছে বাংলাদেশ।
×