ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

‘মুক্তিযুদ্ধে ভারতের সহযোগিতা ভোলার নয়’

প্রকাশিত: ০৫:১৮, ১৯ ডিসেম্বর ২০১৬

‘মুক্তিযুদ্ধে ভারতের সহযোগিতা ভোলার নয়’

কূটনৈতিক রিপোর্টার ॥ মহান মুক্তিযুদ্ধে ভারতের সহযোগিতা কোনভাবেই ভোলার নয়। এতে ভারতীয়রাও রক্ত দিয়েছে। এটাই দুই দেশের সম্পর্কের আবেগগত ভিত্তি। রবিবার রাজধানীতে এক আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। ‘বাংলাদেশ ভারত সম্পর্ক : বন্ধুত্বের ৪৫ বছর উদ্যাপন’-শীর্ষক এই আলোচনা সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ল এ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল এ্যাফেয়ার্স (বিলিয়া)। বিলিয়া মিলনায়তনে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে বক্তারা পারস্পরিক সম্মান ও আস্থার ভিত্তিতে সম্পর্ক জোরদারের ওপর গুরুত্ব দেন। নতুন মানসিকতা ও চিন্তা নিয়ে কাজ করার পরামর্শ দেন। অভিন্ন নদীর পানির সমস্যা সমাধান, ভিসা জটিলতা নিরসন, বাণিজ্য-ঘাটতি কমিয়ে আনা, ভারতে বাংলাদেশের চ্যানেল দেখা না যাওয়াসহ নানা সমস্যার কথা উঠে আসে আলোচনায়। অনুষ্ঠানে তিনটি প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সাবেক রাষ্ট্রদূত হুমায়ুন কবীর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক আমেনা মোহসীন ও বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) জ্যেষ্ঠ গবেষণা ফেলো মোহাম্মদ ইউনুস। অনুষ্ঠানে সাবেক রাষ্ট্রদূত হুমায়ুন কবীর তার উপস্থাপনায় বলেন, বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কে আবেগ, বাস্তবতা দুটোই আছে। মহান মুক্তিযুদ্ধে ভারতের সহযোগিতা কোনভাবেই ভোলার নয়। এতে ভারতীয়রাও রক্ত দিয়েছেন। এটাই দুদেশের সম্পর্কের আবেগগত ভিত্তি। অন্যদিকে বাস্তবতা হলো, ৪৫ বছরে সম্পর্ক ওঠানামা করেছে। কিন্তু গত কয়েক বছরে এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ সাফল্যও আছে। স্থলসীমান্ত চুক্তি ও সমুদ্রসীমা চুক্তির মাধ্যমে দীর্ঘদিনের আটকে থাকা সমস্যা সমাধান হয়েছে। তিনি আরও বলেন, সীমান্ত সমস্যা সমাধানে দুই দেশকে আরও কৌশলী হতে হবে। দুই দেশের বাণিজ্য-ঘাটতি কমানো, ভিসা সমস্যা সহজীকরণসহ নানা সমস্যা সমাধানে গুরুত্ব দিতে হবে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ এখন শুধু নিরাপত্তাগ্রহীতা নয়, নিরাপত্তাদাতাও। আমরা উত্তর-পূর্ব ভারতে নিরাপত্তা দিচ্ছি, ভারত মহাসাগরেও দিচ্ছি। অধ্যাপক আমেনা মোহসীন বলেন, সম্পর্কের ক্ষেত্রে আস্থা ও বিশ্বাস বড় একটি বিষয়। ভারত-চীন, ভারত-পাকিস্তান, পাকিস্তান-বাংলাদেশ, বাংলাদেশ-মিয়ানমার সম্পর্ক এ অঞ্চলের কূটনৈতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ কিছু উপাদান। আন্তর্জাতিক রাজনীতির কথা মাথায় রেখে কীভাবে এসবের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করবে, তার ওপর অনেক কিছু নির্ভর করে। অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সাবেক অধ্যাপক আকমল হোসেন বলেন, বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্ক পরিচালিত হয় দুই দেশের পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট কিছু বিষয়ের ওপর। এ ক্ষেত্রে দুই দেশই অন্যের বিষয়টিকে বিবেচনায় নিলে সম্পর্ক উন্নয়ন সহজ হয়। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক এহসানুল হক, একই বিভাগের অধ্যাপক লাইলুফার ইয়াসমীন, সাবেক রাষ্ট্রদূত আশফাকুর রহমান, হুমায়ুন এ কামাল, মুহসীন আলী খান প্রমুখ।
×