ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

কর্মশালায় দেয়া বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী

জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিপূরণ আমাদের দেয়া হচ্ছে না

প্রকাশিত: ০৫:১৭, ১৯ ডিসেম্বর ২০১৬

জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিপূরণ আমাদের দেয়া হচ্ছে না

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সমস্যার জন্য উন্নত দেশগুলো দায়ী বলে মন্তব্য করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। তিনি বলেন, জলবায়ু ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কারণে আমরা নানাভাবে সমস্যায় পড়ছি। অথচ সেভাবে আমাদের ক্ষতিপূরণ দেয়া হচ্ছে না। তাই নিজেদের টাকায় আমরা জলবায়ু পরিবর্তনজনিত বিষয়ে নানা ধরনের কর্মসূচী গ্রহণ করেছি। ক্লাইমেট চেঞ্জ করে উন্নত দেশ আর ভিকটিম হচ্ছি আমরা। তবে এ সমস্যা মোকাবিলা করে ২০৩০ সালের মধ্যে এসডিজি অর্জন করা সম্ভব হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন অর্থমন্ত্রী। রবিবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ইন্টার প্রেস সার্ভিস এবং ইউএন ফাউন্ডেশন আয়োজিত দুদিনব্যাপী মিডিয়া ট্রেনিং কর্মশালার উদ্বোধনকালে তিনি এসব কথা বলেন। অর্থমন্ত্রী বলেন, ইতোপূর্বে জাতিসংঘ ঘোষিত মিলেনিয়াম ডেভেলপমেন্ট গোল বা এমডিজি অর্জন করতে পেরেছে বাংলাদেশ। এরই ধারাবাহিকতায় টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জিত হবে। গত ২০০০ সালে এমডিজি শুরু হয়ে শেষ হয়েছে গত বছর। এর লক্ষ্যমাত্রা ছিল আটটি। আর এসডিজির ১৭টি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে ২০১৬ থেকে ২০৩০ সাল পর্যন্ত। নির্ধারিত সময়ের আগে এর অনেকগুলো পূরণ করা সম্ভব হবে। তিনি আরও বলেন, দারিদ্র্য বিমোচন বিষয়টি দীর্ঘস্থায়ী হতে হবে, চলমান হলে চলবে না। তবে আমাদের দেশের বড় সমস্যা হচ্ছে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সমস্যা। এর ফলে উপকূলীয় এলাকায় খরা ও ভাঙ্গনের সৃষ্টি হচ্ছে। এসব প্রাকৃতিক দুর্যোগ দ্রুততম সময়ের মধ্যেই দারিদ্র্যের সৃষ্টি করে। তবে ক্লাইমেট চেঞ্জের জন্য আমরা দায়ী না। দায়ী মূলত উন্নত দেশগুলো। চীন ও ভারত কার্বন-ডাই অক্সাইড নিঃসরণ করছে, অথচ আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে উপকূলীয় এলাকায় খরা ও ভাঙ্গনের সৃষ্টি হচ্ছে। এসব প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেশে দারিদ্র্য বাড়াবে। আর এ সমস্যার জন্য উন্নত দেশগুলোকেই দায়ী। তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে উপকূলীয় এলাকায় খরা ও ভাঙ্গনের সৃষ্টি হচ্ছে। মুহিত বলেন, দারিদ্র্যমুক্ত করার ক্ষেত্রে দেশ ইতোমধ্যে অনেক ধাপ এগিয়ে গেছে। তবে বর্তমান সরকার দীর্ঘস্থায়ীভাবে দারিদ্র্য মোকাবিলা করার পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। ফলে দেশ দারিদ্র্যমুক্ত হতে বেশি সময় লাগবে না। অর্থমন্ত্রী বলেন, এসডিজির ১৭টি লক্ষ্যমাত্রা হলোÑ সব ধরনের দারিদ্র্য দূর করা, খাদ্যনিরাপত্তা, সবার জন্য সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করা, শিক্ষার সুযোগ নিশ্চিত করা, জেন্ডার সমতা অর্জন, সবার জন্য নিরাপদ পানি, সবার জন্য জ্বালানি বা বিদ্যুতের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা, স্থিতিশীল ও অংশগ্রহণমূলক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, স্থিতিশীল শিল্পায়ন, আন্তঃরাষ্ট্র বৈষম্য বিলোপ, মানব বসতি ও শহরগুলোকে নিরাপদ, উৎপাদন ও ভোগ কাঠামোর স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা, জলবায়ু পরিবর্তন, সম্পদের সঠিক ব্যবহার, স্থলভূমির জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ, ন্যায়বিচার ও বৈশ্বিক অংশীদারিত্বে স্থিতিশীলতা আনা। কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেনÑ অর্থনীতিবিদ ড. কাজী খলিকুজ্জমান আহমেদ, ইন্টার প্রেস সার্ভিসের মহাপরিচালক ফারহানা হক রহমান, আইপিএসের দক্ষিণ এশীয় বিষয়ক প্রতিনিধি শহিদুজ্জামান প্রমুখ।
×