ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

মসলিনের ঐহিত্য ফেরাতে ১২ কোটি টাকার প্রকল্প

প্রকাশিত: ০৫:০১, ১৯ ডিসেম্বর ২০১৬

মসলিনের ঐহিত্য ফেরাতে ১২ কোটি টাকার প্রকল্প

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ দেশের সোনালী ঐতিহ্য মসলিন কাপড় ফিরিয়ে আনতে বিশেষ উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে সরকার। এজন্য ‘মসলিনের সুতা তৈরির প্রযুক্তি ও মসলিন কাপড় পুনরুদ্ধার’ শীর্ষক একটি প্রকল্প প্রস্তাব করা হয়েছে পরিকল্পনা কমিশনে। এ প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয়েছে ১২ কোটি ১০ লাখ টাকা। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের আওতায় বাংলাদেশ তাঁত বোর্ড। প্রকল্পটির ওপর গত ২০ নবেম্বর প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় বেশ কিছু সুপারিশ সাপেক্ষে প্রকল্পটি অনুমোদনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনের শিল্প ও শক্তি বিভাগের সদস্য জুয়েনা আজিজ পরিকল্পনা কমিশনের মতামত দিতে গিয়ে বলেছেন, ‘প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে নিবিড় গবেষণার মাধ্যমে মসলিনের সুতা ও কাপড় তৈরির প্রযুক্তি বের করা, পরীক্ষামূলক মসলিন সুতা ও কাপড় তৈরি করা এবং বাংলাদেশের সোনালী ঐতিহ্য মসলিনের হৃত গৌরব পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হবে বলে আশা করা হচ্ছে।’ বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ২০১৪ সালের ১২ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় পরিদর্শন করেন। সে সময় তিনি মসলিন তৈরির প্রযুক্তি পুনরুদ্ধারে উদ্যোগ নেয়ার নির্দেশ দেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়েছে। এটি ২০১৯ সালের জুনের মধ্যে বাস্তবায়নের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। পিইসি সভায় অংশ নেয়া বাংলাদেশ তাঁত বোর্ডের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ে ব্যাপক গবেষণার লক্ষ্যে মসলিনের নমুনা সংগ্রহ, নমুনা হতে মসলিন সুতার ডিএনএ প্রোফইল শনাক্তকরণ, মসলিন তৈরির উপযোগী তুলা গাছের অনুসন্ধান, সমজাতীয় তুলার জাত উন্নয়ন, পরীক্ষামূলকভাবে তুলার চাষ ও তুলা সংগ্রহ করা হবে। সংগৃহীত তুলা স্পিনিং করে মসলিন তৈরির উপযোগী কাউন্টের সুতা উৎপাদন করা হবে। তিনি আরও জানিয়েছেন, প্রাথমিক পর্যায়ে প্রকল্পের আওতায় স্পিনিংকরণের জন্য ডাম্পিং শেড ভাড়া ও দক্ষ স্পিনারের সাহায্যে সুতা স্পিনিং এবং কাপড় তৈরির প্রযুক্তি পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করা হবে। এ সমস্ত কার্যক্রম বাংলাদেশ তাঁত বোর্ড, তুলা উন্নয়ন বোর্ড, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব বায়োলজিক্যাল সায়েন্স, বাংলাদেশ টেক্সটাইল ইউনিভার্সিটি ও বস্ত্র পরিদফতর ইত্যাদি সংস্থার সহযোগিতায় বাস্তবায়ন করা হবে। সূত্র জানায়, প্রকল্পের আওতায় পরামর্শক হিসেবে একজন গবেষক এবং একজন কম্পিউটার প্রোগ্রামারের প্রস্তাব করা হয়েছে। সার্বক্ষণিক গবেষণা কাজে নিয়েজিত থাকার জন্য একজন বায়োটেকনোলজিক্যাল গবেষক পরামর্শক হিসেবে নিয়োগের বিষয়ে গুরুত্বারোপ করা হয়েছে সভায়। পিইসি সভার সুপারিশে বলা হয়েছে, স্থানীয় অথবা বিদেশি পরামর্শক হিসেবে একজন সিনিয়র বায়োটেকনোলজিক্যাল গবেষক, দুই জন বায়োটেকনোলজিক্যাল গবেষক ও একজন কম্পিউটার প্রোগ্রামারের সংস্থান রাখা যেতে পারে। এ ছাড়া পরামর্শকদের সম্মানী সরকারী ক্রয় আইন-২০০৮ অনুসারে এবং গবেষণা টিমের সদস্যদের সম্মানী এবং দক্ষ বুননকারী ও স্পিনারদের মজুরি প্রচলিত বিধি মোতাবেক নির্ধারণ করতে হবে।
×