ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ঠাকুরগাঁও চিনিকলে মাড়াই শুরু

প্রকাশিত: ০৫:০০, ১৯ ডিসেম্বর ২০১৬

ঠাকুরগাঁও চিনিকলে মাড়াই শুরু

নিজস্ব সংবাদদাতা, ঠাকুরগাঁও ॥ গত মৌসুমের ২ হাজার ৭শ’ ৪৬ মেট্রিক টন চিনি মজুদ রেখে বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিকভাবে চালু করা হলো ঠাকুরগাঁও সুগার মিলের ৫৯তম আখ মাড়াই কার্যক্রম। সম্প্রতি দোয়া মাহফিল ও ডোঙ্গায় একসঙ্গে আখ ফেলে মিলের ২০১৬-১৭ মাড়াই মৌসুমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ঠাকুরগাঁও-১ আসনের সংসদ সদস্য রমেশ চন্দ্র সেন, জেলা প্রশাসক আব্দুল আওয়াল, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সাদেক কুরাইশী, মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী এনায়েত হোসেন ও অন্য নেতৃবৃন্দ। এ বছর ৫৫ দিন মিলটি চালু রেখে ৯০ হাজার মেট্রিক টন আখ মাড়াই করে পাঁচ হাজার ৬ হাজার ৫শ’ ১৫ মেট্রিক টন চিনি উৎপাদন করবে বলে জানান মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী এনায়েত হোসেন। এতে চিনি আহরণের হার ধরা হয়েছে শতকরা ৭.২৫ শতাংশ। তিনি জানান, ২০১৫-১৬ সালে অবিক্রীত চিনি আছে ২ হাজার ৭শ’ মেট্রিক টন। মিলের শ্রমিক-কর্মচারীদের অভিযোগ, বেতনের বদলে চিনি দেয়ায় বাইরে চিনি বিক্রি করতে গিয়ে মূল বেতন থেকে কমে যাচ্ছে শতকরা ছয় থেকে আট ভাগ টাকা। অন্যদিকে সময়মতো আখের টাকা না পেয়ে আখচাষ থেকে বিমুখ হচ্ছেন কৃষকরা। সদর উপজেলার আউলিয়াপুর গ্রামের আখচাষী নিহার চন্দ্র, মাতৃগাঁও গ্রামের আরমান আলী ও মোবারক বলেন, আখ চাষে দীর্ঘদিন জমি পড়ে থাকে। একই জমিতে অন্য ফসল করলে লাভ বেশি পাওয়া যায়। এদিকে মিলে আখ দেয়ার পর সঙ্গে সঙ্গে টাকা পাওয়া যায় না। টাকার জন্য ঘুরতে হয়। দীর্ঘদিনের পুরনো এ মিলটি বেশি সময় চালু রেখে লোকসান কমাতে মিল কর্তৃপক্ষ বহুমুখী কর্ম প্রস্তাবনা দিয়েছিল সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে। সরকার প্রায় ৫শ’ কোটি টাকার প্রস্তাবনা প্রকল্প পাস করেছে। খুব শীঘ্রই মিলের সংস্কারের কাজ শুরু হবে। ওই কাজ শেষ হলে আরও বেশি চিনি উৎপাদনের পাশাপাশি এখান থেকে বিদ্যুত জাতীয় গ্রিডে যোগ হবে বলে জানান মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী এনায়েত হোসেন। মিলটি সংস্কার হলে আখ সঙ্কট রোধে সুগারবিটে উৎপাদন হবে চিনি। আর বায়োগ্যাস প্লান্টের মাধ্যমে বিদ্যুত উৎপাদন, বায়োফার্টিলাইজার প্লান্টসহ বহুমুখী প্রকল্প মন্ত্রণালয় পাস করেছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে বাড়বে চিনি উৎপাদন ক্ষমতা, ফলে লোকসান কমে আসবে বলে জানান মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। দেশের চিনিকলগুলোর এ অবস্থা থেকে উত্তরণে দেশী চিনি উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশি বিপণনের ওপর গুরুত্বারোপ করে ভারি শিল্প রক্ষায় এগিয়ে আসবে সরকার- এমন প্রত্যাশা সবার।
×