ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

আলেপ্পোর দুর্ভোগের জন্য সিরিয়ার সরকার, ইরান ও রাশিয়া দায়ী ॥ যুক্তরাষ্ট্র

সমগ্র সিরিয়ায় অস্ত্রবিরতি চায় রাশিয়া

প্রকাশিত: ০৪:৩৬, ১৮ ডিসেম্বর ২০১৬

সমগ্র সিরিয়ায় অস্ত্রবিরতি চায় রাশিয়া

সিরিয়া যুদ্ধের পরবর্তী পদক্ষেপ এখন দেশব্যাপী অস্ত্রবিরতি কার্যকর করা, জাপান সফররত রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন শুক্রবার একথা বলেছেন। আলেপ্পোর বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত পূর্বাঞ্চল বিদেশী শক্তির সহায়তায় সরকারী বাহিনী দখল করে নেয়ার পর সেখান থেকে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ের চিত্র আসতে শুরু করেছে। সিরিয়ার জনগণের দুর্ভোগের জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা, সিরিয়ার সরকার, ইরান ও রাশিয়াকে দায়ী করেছেন। খবর এএফপি ও বিবিসি অনলাইনের। পুতিন বলেছেন, সিরিয়ায় এখন একটি দেশব্যাপী অস্ত্র বিরতি প্রয়োজন। তিনি বলেন, ‘তুরস্কের মধ্যস্থতায় আমরা সশস্ত্র বিদ্রোহী গ্রুপগুলোর সঙ্গে কথা বলছি।’ কাজাখস্তানের রাজধানী অস্তানা নতুন শান্তি আলোচনার একটি ভেন্যু হতে পারে বলে তিনি জানান। আলেপ্পো থেকে বেসামরিক নাগরিক ও বিদ্রোহী যোদ্ধাদের সরে যেতে সীমিত সুযোগ দিয়েছিল আসাদ বাহিনী। পরে অবশ্য সুযোগটি প্রত্যাহার করা হয়েছে। এর আগে মঙ্গলবার হওয়ার পূর্ব আলেপ্পো দখলে নেয়ার পর সাময়িক অস্ত্র বিরতি ঘোষণা করে আসাদ বাহিনী। একদিন পরই অস্ত্রবিরতি চুক্তি ভেঙে বিদ্রোহী ও সরকারী বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষ আবার শুরু হয়। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে আটকা পড়া লোকজনকে বেরিয়ে আসতে দেয়া হয়। কিন্তু শুক্রবার ভোরে আবার গোলাগুলি শুরু হলে বেসামরিক লোকজন সেখানে আটকা পড়ে। রাষ্ট্র পরিচালিত টেলিভিশনে বলা হয়েছে, বিদ্রোহীরা অবস্থার সুযোগ নিয়ে অস্ত্রশস্ত্র পাচার শুরু করেছিল। জাতিসংঘের মতে, শহরটিতে এখন প্রায় ৫০ হাজার মানুষ আটকা রয়েছে। গোলাগুলি আবারও শুরু হওয়ায় তারা সেখানে এক ভয়াবহ পরিস্থিতি মুখে পড়েছে। সিরিয়া বিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ দূত স্তেফান দ্য মিস্তুরা প্রায় ৫০ হাজার মানুষ আটকা থাকার কথা বলেছেন। তিনি সতর্ক করে দিয়ে জানিয়েছেন, ‘কোন রাজনৈতিক সমাধান ও কার্যকর অস্ত্রবিরতি চুক্তি সম্ভব না হলে ইদলিব হতে পারে পরবর্তী আলেপ্পো।’ ২০১২ সাল থেকে বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে ছিল পূর্ব আলেপ্পো। সম্প্রতি সরকারী বাহিনী অঞ্চলটির অধিকাংশ জায়গা দখল করে নেয়ায় বিদ্রোহীরা কোণঠাসা হয়ে পড়ে। শুক্রবার ওবামা বলেছেন, ‘গণহত্যা চালিয়ে আসাদ ক্ষমতায় থাকার বৈধতা অর্জন করতে পারবেন না।’ বছরের শেষ সংবাদ সম্মেলনে ওবামা বলেন, ‘আলেপ্পোয় নৈরাজ্যের দায় সিরিয়া ও তাদের আঞ্চলিক পৃষ্ঠপোষক রাশিয়া ও ইরানের শাসকবর্গ এড়িয়ে যেতে পারে না। তাদের হাতে রক্তের দাগ লেগে রয়েছে।’ এর আগে যুদ্ধে প্রায় বিধ্বস্ত নগরীতে থেকে বেসামরিক লোকজনকে বেরিয়ে আসতে দিতে সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের আহ্বাান জানিয়েছিলেন জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন। তিনি বলেছিলেন, আলেপ্পা এখন পুরোপুরি নরকে পরিণত হয়েছে। বিপর্যস্ত নগরীতে প্রয়োজনীয় ত্রাণ সামগ্রী নিয়ে আন্তর্জাতিক পর্যক্ষেকরা যেন যেতে পারে সে লক্ষ্যে নিরাপত্তা পরিষদ রবিবার ফ্রান্সের তৈরি করা খসড়া প্রস্তাবের ওপর ভোটাভুটি হতে পারে। জাতিসংঘে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত সামান্থা পাওয়ার বলেছেন, পরিস্থিতির যেন আরও অবনতি না ঘটে সেজন্য আলেপ্পোতে যত দ্রুত সম্ভব নিরপেক্ষ পর্যবেক্ষক পাঠানো প্রয়াজন। জাতিসংঘে ফরাসী রাষ্ট্রদূত ফ্রাঁসোয়া দেলাত্রে বলছেন, ‘আলেপ্পো যেন আরেকটি সেব্রেনিৎসা হয়ে না ওঠে সেলক্ষে মানুষের জীবন বাঁচানো ও গণহত্যা বন্ধ হওয়াই এ মুহূর্তে আমাদের প্রধান অগ্রাধিকার হওয়া উচিত।’
×