ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

জয়পুরহাট-ঢাকা আন্তঃনগর ট্রেনে সিট বরাদ্দ কম

প্রকাশিত: ০৫:৫৫, ১৭ ডিসেম্বর ২০১৬

জয়পুরহাট-ঢাকা আন্তঃনগর ট্রেনে সিট বরাদ্দ কম

তপন কুমার খাঁ, জয়পুরহাট থেকে ॥ সড়কপথে জয়পুরহাট থেকে ঢাকা ও অন্যান্য গন্তব্যে যাওয়ার দুর্ভোগ থেকে সুন্দরভাবে যাওয়ার জন্য রেলপথই প্রধান বাহন হলেও জয়পুরহাট রেল স্টেশন থেকে ঢাকা ও অন্যান্য স্থানের টিকেট সঙ্কটের কারণে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে যাত্রীদের। জয়পুরহাট-ঢাকা দীর্ঘ আড়াই শ’ কিলোমিটার পথ সাধারণ টিকেটের পাশাপাশি বার্থ ও এসি সুযোগ না থাকায় অর্থনৈতিকভাবে সাবলম্বী যাত্রীরা আরও দুর্ভোগে পড়েছেন। এর ফলে রেল বিভাগ বিপুলসংখ্যক যাত্রীদের পরিবহন সেবা দিতে না পারায় বিপুল পরিমাণ রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। রেল সূত্রে জানা যায়, জয়পুরহাটের উপর দিয়ে প্রতিদিন আপ-ডাউন ১৪টি আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল করে থাকে। এই আন্তঃনগর ট্রেনগুলো হচ্ছে রূপসা, তিতুমীর, বরেন্দ্র, একতা, দ্রুতযান, নীল সাগর ও সীমান্ত। এর মধ্যে ঢাকাগামী আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল করে থাকে ৩টি। এই তিনটি ঢাকগামী ট্রেন হলো একতা, দ্রুতযান ও নীল সাগর। এর মধ্যে আন্তঃনগর দ্রুতযান ট্রেনটি দিনাজপুর থেকে ছেড়ে জয়পুরহাটে এসে পৌঁছায় সকাল ১০টা ৩৬ মিনিটে এবং সকাল ১০টা ৪৯ মিনিটে ছেড়ে যায় কমলাপুর রেল স্টেশনের উদ্দেশে। আবার অন্তঃনগর একতা ট্রেনটি দিনাজপুর থেকে ছেড়ে জয়পুরহাটে এসে পৌঁছে রাত ১২টা ১৭ মিনিটে। রাত ১২টা ২০ মিনিটে জয়পুরহাট স্টেশন থেকে ছেড়ে কমলাপুরের উদ্দেশে যায়। এদিকে নীল সাগর আন্তঃনগর ট্রেনটি চিলাহাটি থেকে ছেড়ে জয়পুরহাট এসে পৌঁছায় রাত ১টা ৯ মিনিটে এবং রাত ১টা ১২ মিনিটে ছেড়ে যায় ঢাকা ক্যান্টমেন্ট স্টেশনের উদ্দেশে। যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায় সড়ক পথে ঢাকা যেতে সময়, নিরাপত্তাসহ নানা বিড়ম্বনার কারণে রেলপথে যাওয়ার আগ্রহ যাত্রীদের অনেক। কিন্তু আসন সংখ্যা সীমিত হওয়ায় যাত্রীরা সেই সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। ঢাকাগামী আন্তঃনগর দ্রুতযান চেয়ার কোচে প্রতিদিনের চাহিদা ১০০ আসন, বরাদ্দ মাত্র ৪০টি আসন। জয়পুরহাট থেকে ওই ট্রেনের চেয়ার কোচের টিকেটে মূল্য ৩৯০ টাকা। ওই ট্রেনে এসি কোচের চাহিদা ২০টি থাকলেও তার বিপরীতে বরাদ্দ মাত্র ৩টি আসন। এসি আসনের টিকেটের মূল্য ৭৪২ টাকা, এসি কেবিন দিনের বেলায় প্রয়োজন ১০টি, কিন্তু বরাদ্দ মাত্র ৪টি আসন। কেবিন এসি প্রতি টিকেটের মূল্য ৮৯২ টাকা। নীল সাগর ট্রেনে চেয়ার কোচ বরাদ্দ মাত্র ২৯ আসন, তার বিপরীতে চাহিদা ৬০ আসন। বার্থ চাহিদা ৬টি থাকলেও বরাদ্দ মাত্র ২টি আসন। কিন্তু এদিকে রাতে একতা এক্সপ্রেস ট্রেনে কোন বার্থ বরাদ্দ থাকে না। এদিকে একতা ট্রেনের চেয়ার কোচ শোভনের চাহিদা ১০০টি থাকলেও বরাদ্দ মাত্র ৪০ আসন। অপরদিকে এসি চেয়ার কোচ এর চাহিদা ২০টি থাকলেও বরাদ্দ মাত্র ৩টি আসন। আসন সংখ্যা অত্যন্ত কম হওয়ায় এই টিকেটগুলো জয়পুরহাটের যাত্রীদের বাধ্য হয়ে দিনাজপুর অথবা সৈয়দপুর থেকে সংগ্রহ করতে হয়ে অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে। এদিকে দিনাজপুর রেল স্টেশনের জন্য ২৮টি ও সৈয়দপুর রেল স্টেশনের জন্য ২৮টি ভিআইপি টিকেট বরাদ্দ থাকলেও জয়পুরহাট স্টেশন থেকে ভিআইপি কোন সিট বরাদ্দ নাই। এমনকি জয়পুরহাটের ২ এমপি, জেলা প্রশাসনের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তা, ব্যবসায়ীদের জন্যও কোন ভিআইপি টিকেটের বরাদ্দ নাই। যাত্রী ও সংশ্লিষ্টরা মনে করেন প্রয়োজনীয় সংখ্যক আসন সংখ্যা বৃদ্ধি হলে যাত্রী দুর্ভোগ কমবে। রেলের বুকিং দফতর জানায় প্রতিদিন জয়পুরহাট রেল স্টেশনে ১ লাখ ৫০ হাজার টিকেট বিক্রি হয়। আসন সংখ্যা বাড়লে এই আয় কয়েকগুন বাড়বে। জয়পুরহাট রেল স্টেটশনের বুকিং ইনচার্জ আনিসুর রহমান বুলবুল জানান জয়পুরহাট জেলা শহর হলেও এই স্টেশন থেকে আন্তঃনগর ট্রেনগুলির আসন সংখ্যা কম এবং ভিআইপিদের কোন কোঠা না থাকায় তাদের ও আমাদেরও বিড়ম্বনার মধ্যে পড়তে হয়।
×