ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

আসাদ বাহিনীর আলেপ্পো পুনর্দখল

মধ্যপ্রাচ্যে পিছু হটল যুক্তরাষ্ট্র

প্রকাশিত: ০৫:৪৯, ১৬ ডিসেম্বর ২০১৬

মধ্যপ্রাচ্যে পিছু হটল যুক্তরাষ্ট্র

সিরীয় প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের বাহিনীর আলেপ্পো পুনর্দখল মধ্যপ্রাচ্য থেকে ওয়াশিংটনের পশ্চাদপসরণের এক সুস্পষ্ট দৃষ্টান্ত। যখন রাশিয়া ও এর অংশীদাররা প্রায় ছয় বছর ধরে চলমান সিরীয় যুদ্ধের ঘটনা প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করতে পদক্ষেপ নিয়েছে, তখন পিছু হটল যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন, ইউরোপীয় ও আরব কর্মকর্তারা একথা জানান। রাশিয়া ও তুরস্ক অবরুদ্ধ উত্তরাঞ্চলীয় সিরীয় শহরের অধিবাসীদের জন্য মানবিক ত্রাণ সহায়তা প্রদান করতে চলতি সপ্তাহে আলোচনায় মিলিত হয়। তখন থেকেই ওবামা প্রশাসন গুরুত্বহীন হয়ে পড়ে। যুক্তরাষ্ট্র এর মিত্ররা ও জাতিসংঘ আলেপ্পোতে সামরিক লোকজনকে নির্বিচারে হত্যার দায়ে সিরিয়া ও এর মিত্রদের অভিযুক্ত করেছেন। সিরিয়া ও রাশিয়া বলছে, তারা বেসামরিক লোকজনকে নয়, কেবল সন্ত্রাসীদের হত্যা করছে। শহরের নাগরিক সম্প্রদায় ও বিদ্রোহী দলগুলো ইতোপূর্বে মার্কিন সহায়তা পায় এবং তারা এখন বাহিরের হস্তক্ষেপ চেয়েছে। মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের কোন কোন কর্মকর্তা বলেন, যুক্তরাষ্ট্র মানবিক সঙ্কট নিবৃত্ত করার সুযোগ হারিয়েছে। মধ্যপ্রাচ্য নিয়ে কাজ করছেন পররাষ্ট্র দফতরের এমন এক উর্ধতন কর্মকর্তা বলেন, আমরা আর আলোচনা করছি না। আমরা একটি মাত্র কাজই করছি, আর তা হলো, তারা যাতে লোকজনকে আলেপ্পো থেকে সরে যাওয়ার সুযোগ দিতে বোমাবর্ষণ বন্ধ করে, সেই জরুরী আবেদন জানানো। আমরা সেই লোকজনকে সমর্থন করেছিলাম এবং আমরা তাদের রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছি। বুধবার সিরীয় সৈন্যরা ও মিলিশিয়ারা আলেপ্পোর নিয়ন্ত্রণ পুনর্গ্রহণ করলে রাশিয়া ও ইরানের নেতারা যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বকে খাটো করে দেখান। শহরটি দেশের আসাদ বিরোধী বিদ্রোহের অন্যতম কেন্দ্রস্থল ছিল। রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ বলেন, তুরস্কের সঙ্গে সহযোগিতা ওয়াশিংটনের সঙ্গে আলোচনার চেয়ে আরও বেশি কার্যকর হতে পারে। তিনি এ আলোচনাকে নিষ্ফল পুনর্মিলনীর মতো কোন কিছু বলে অভিহিত করেন। রুশ বার্তা সংস্থা ইন্টারফ্যাক্স একথা জানায়। ইরানের রেভোলিউশনারি গার্ডের অন্যতম শীর্ষ জেনারেল ইয়াহিয়া রহিম সাফাভি রাষ্ট্রীয় প্রচার মাধ্যমে ঘোষণা করেন যে, আলেপ্পো যুক্তরাষ্ট্রের ওপর তার দেশ ও এর মিত্রদের বিজয়ের প্রতীক এবং নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সেদিকে দৃষ্টি দেয়া উচিত। তিনি বলেন, ইরান বিজয়ের পথে এগিয়ে যাচ্ছে এমন কোয়ালিশনের পক্ষে এবং এতে আমাদের শক্তির প্রকাশ ঘটেছে। নতুন আমেরিকান প্রেসিডেন্টের ইরানের শক্তি সম্পর্কে সতর্ক থাকা উচিত। ওবামা প্রশাসন সিরীয় জনসাধারণের প্রতি যুদ্ধাপরাধ সংগঠনের দায়ে সিরিয়া, ইরান ও রাশিয়াকে অভিযুক্ত করে। কিন্তু উর্ধতন মার্কিন কর্মকর্তারা যুক্তরাষ্ট্রের সিরিয়া নীতির কোন পরিবর্তনের আভাস দেননি। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জন কারবি বলেন, আমরা এক কূটনীতিক দৃষ্টিভঙ্গী এক রাজনৈতিক সমাধানকেই সঠিক পথ বলে মনে করে যাচ্ছি। ট্রাম্পের আমলে মার্কিন অবস্থানের নাটকীয় পরিবর্তন ঘটার সম্ভাবনা দেখা যায় না। তিনি ইতোপূর্বে ইসলামিক স্টেটের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সিরিয়ায় রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের সঙ্গে মিত্রের মতো কাজ করার কথা প্রকাশ্যেই বলেছিলেন। এ সন্ত্রাসী সংগঠনটি দেশটির উত্তর ও পূর্ব অংশে বিস্তীর্ণ ভূখ- নিয়ন্ত্রণ করছে। ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল
×