ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

ব্রিসবেনে ডে-নাইট টেস্ট দিয়ে শুরু অস্ট্রেলিয়া-পাকিস্তান দ্বৈরথ

আরেকটি চ্যালেঞ্জের সিরিজ মিসবাহদের

প্রকাশিত: ০৪:৩১, ১৫ ডিসেম্বর ২০১৬

আরেকটি চ্যালেঞ্জের সিরিজ মিসবাহদের

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ শ্রীলঙ্কা সফরে ‘হোয়াইটওয়াশ’ হওয়ার পর ঘরের মাটিতে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে ২-১এ সিরিজ হেরেছে অসিরা। সাবেক পাকিস্তান অধিনায়ক ওয়াকার ইউনুস বলছেন, অস্ট্রেলিয়াবধের এটাই সেরা সুযোগ। মিসবাহ-উল হকের নেতৃত্বে সম্প্রতি টেস্ট ক্রিকেটে আলো ছড়ানো নৈপুণ্য তাদের। কিন্তু আসলেই কি সেরা সুযোগ? উত্তরটা সহজ নয়। কারণ সিরিজ হারলেও শেষ টেস্টে দারুণ জয়ে ঘুরে দাঁড়িয়েছে স্টিভেন স্মিথের অস্ট্রেলিয়া। অন্যদিকে সদ্যই নিউজিল্যান্ডের কাছে ২-০তে বিধ্বস্ত পাকিস্তান। তার ওপর সেই ১৯৭৮ থেকে অস্ট্রেলিয়া সফরে ৭ সিরিজে কখনই জেতেনি তারা। সব মিলিয়ে কাজটা কঠিন। সাবেক অসি কোচ মিকি আর্থার যিনি বর্তমানে পাকিস্তানের দায়িত্বে তিনিও সেটি স্বীকার করেছেন। এজন্য সবার আগে ব্যাটসম্যানদের স্কোর বোর্ডে রান জমা করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। র‌্যাঙ্কিংয়ে অস্ট্রেলিয়া তৃতীয় ও পাকিস্তান চতুর্থ স্থানে। ব্রিসবেনে ডে-নাইট ম্যাচ দিয়ে আজ শুরু হচ্ছে তিন টেস্টের উত্তাপ ছড়ানো এই সিরিজ। অস্ট্রেলিয়ার কন্ডিশনে উপমহাদেশের দলগুলোর অতীত ইতিহাস ভাল নয়। গত জুলাই-আগস্টে ইংল্যান্ড সফরে দুর্দান্তভাবে ২-২এ সিরিজ ড্র করে পাকিস্তান প্রথমবারে মতো টেস্ট র‌্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে উঠেছিল। কিন্তু সম্প্রতি সেই তারাই নিউজিল্যান্ডে ২-০তে ‘হোয়াইটওয়াশ’ হয়। মিসবাহ-উল হকদের সামনে এবার অস্ট্রেলিয়া সফরের চ্যালেঞ্জ। তবে গ্রেট ওয়াকার এটিকে সুবর্ণ সুযোগ হিসেবে দেখছেন। সদ্যই ঘরের মাটিতে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে হারের লজ্জায় ডোবে স্টিভেন স্মিথের অস্ট্রেলিয়া। সাবেক পাকিস্তান কোচের চোখে তাই অসিদের ধরাশায়ী করার এটাই সেরা সময়, ‘অসিরা দুর্বল ও এই মুহূর্তে খুবই কোণঠাসা দল। অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে পাকিস্তানের সিরিজ জয়ের এটাই সুবর্ণ সুযোগ।’ তবে ইতিহাস সফরকারীদের পক্ষে নয়। অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে পাকিস্তান এ পর্যন্ত ১১টি টেস্ট সিরিজ খেলে একটিতেও জিততে পারেনি। সর্বোচ্চ সাফল্য ড্র। সেটি সেই ১৯৭৬-১৯৭৭এ। আসলে উপমহাদেশের কোন দলই এখন পর্যন্ত ওই স্বাদটা পায়নি। এবার ইতিহাস বদলাবে বলে মনে করেন কিংবদন্তি পাকিস্তানী পেসার ওয়াকার। নিউজিল্যান্ডে পাকিদের ভরাডুবির অন্যতম কারণ ব্যাটিং ব্যর্থতা। দ্রুতগতির পিচে পেসারদের বিপক্ষে আজহার আলিরা ছিল অসহায়। রান পাননি অভিজ্ঞ ইউনুস খানও। শেষ টেস্টে অনুপস্থিত ছিলেন অধিনায়ক মিসবাহ। তিনি এবার ফিরেছেন। পাশপাশি অস্ট্রেলিয়ায় প্রস্তুতি ম্যাচে দারুণ জয় পেয়েছে দল। রান করেছেন আজহার আর ইউনুস। এটা অতিথিদের বাড়তি আত্মবিশ্বাস যোগাবে। কোচ মিকি আর্থার বলেন, ‘গ্যাবার বাউন্সি উইকেটে ব্যাটসম্যানরা ২৭০, ২৮০ কিংবা ৩০০ রান করতে পারলে ভাল ম্যাচ হবে। কারণ আমার বোলারদের ২০ উইকেট তুলে নেয়ার সামর্থ্য আছে।’ ২০১৩ সালের মাঝামাঝি আর্থারকে কোচের পদ থেকে ছাঁটাই করে অস্ট্রেলিয়া। সুতরাং এবার প্রতিপক্ষ শিবিরে থেকে প্রতিশোধ নিতে মরিয়া তিনি। যদিও সেটি প্রকাশ না করে খেলায় মন দিতে চান। আর্থার বলেন, ‘লড়াইটা অস্ট্রেলিয়া ও পাকিস্তানের সঙ্গে। দুটি দলই শক্তিশালী। দারুণ সব প্রতিভাবান ক্রিকেটার রয়েছে। আমি উত্তেজক একটা সিরিজের অপেক্ষায়।’ রাহাত আলি, ওয়াহাব রিয়াজ, মোহাম্মদ আমির ও ইয়াসির শাহকে নিয়ে পাকিস্তানের বোলিং লাইন দুর্দান্ত। প্রস্তুতি ম্যাচে চমৎকার বল করা আমির সহসা নিজের ছন্দে ফিরবে বলে আশাবাদী প্রধান নির্বাচক ইনজামাম-উল হক। অন্যদিকে দ. আফ্রিকার কাছে টানা দুই হারে সিরিজ খোয়ানোর পর শেষ টেস্টে অস্ট্রেলিয়া দলে ব্যাপক পরিবর্তন আনা হয়। বিশেষ করে ব্যাটিংয়ে। তারকাদের মধ্যে ডেভিড ওয়ার্নার, অধিনায়ক স্মিথ, উসমান খাজা উল্লেখ্য। বোলিংয়ে মিচেল স্টার্ক, জস হ্যাজলউডের সঙ্গে জ্যাকশন বার্ড যোগ দেয়ায় পেস আক্রমণে শক্তি বেড়েছে। ডে-নাইট, ফ্লাটলাইট আর গোলপী বল সমস্যা নয় বলেই জানিয়েছেন দুই অধিনায়ক মিসবাহ ও স্মিথ। ১৯৫৬ থেকে মুখোমুখি ৫৯ টেস্টের ২৮টিতে জয় অস্ট্রেলিয়ার, পাকিস্তান ১৪। ড্র ১৭টি।
×