ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

১৩২০ মে.ও. দ্বিতীয় তাপ বিদ্যুত প্রকল্পের কাজ শুরু হচ্ছে

প্রকাশিত: ০৪:১৯, ১৩ ডিসেম্বর ২০১৬

১৩২০ মে.ও. দ্বিতীয় তাপ বিদ্যুত প্রকল্পের কাজ শুরু হচ্ছে

মেজবাহউদ্দিন মাননু, নিজস্ব সংবাদদাতা, কলাপাড়া ॥ উপজেলার ধানখালীতে লোন্দা মৌজায় ১৩২০ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক দ্বিতীয় তাপ বিদ্যুত প্রকল্পের কাজ শীঘ্রই শুরু হচ্ছে। তবে এ প্রকল্পের প্রথম কাজ হচ্ছে অধিগ্রহণকৃত জমির মালিকদের পুনর্বাসন প্রকল্প। এ প্রকল্পের জন্য ১৫০ পরিবারকে পুনর্বাসনে ২৫ একর জমির অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া চূড়ান্ত পর্যায়ে। ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাসে পুনর্বাসন প্রকল্পের কাজ শুরু হচ্ছে। এ বিদ্যুত প্রকল্পের জন্য লোন্দা মৌজায় মোট ৯১৫ একর জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়ার কাজ শেষ পর্যায়। পুনর্বাসন প্রকল্পের কাজ শুরুর লক্ষ্যে চায়না সরকারের নোরিনকো ইন্টারন্যাশনাল কর্পোরেশন লিমিটেড এবং বাংলাদেশ সরকারের রুরাল পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেডের উর্ধতন কর্মকর্তারা রবিবার প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করেন। নোরিনকে ইন্টার ন্যাশনাল কর্পোরেশন লিমিটেডের ভাইস প্রেসিডেন্ট মিঃ ওয়াং ঝিংউইং, জেনারেল ম্যানেজার মিঃ কি-ইউ, প্রজেক্ট ইঞ্জিনিয়ার মিঃ ফু জিকুয়ান এবং আরপিসিএল এর নির্বাহী পরিচালক মোঃ সেলিম ভুইয়া, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মোঃ তৌফিক ইসলাম, নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ ইকবাল করিম, ডিজিএম মেজর (অবঃ) সৈয়দ সাখাওয়াত হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। চায়না এবং বাংলাদেশ সরকার জি টু জি প্রকল্পের মাধ্যমে বিদ্যুত প্লান্টের কাজ হচ্ছে। প্রকল্পসূত্রে জানা গেছে, ১৬ হাজার কোটি টাকা ব্যয় ১৩২০ মেগাওয়াট আল্ট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল টেকনোলজির মাধ্যমে এ প্লান্টটি নির্মাণ হতে যাচ্ছে। প্রথমেই পুনর্বাসনের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। একদিকে বাড়িঘর-জমির টাকা তো পাবেই ক্ষতির শিকার লোকজন। এছাড়া এ প্রকল্পের ক্ষতিগ্রস্ত জমির মালিকরা ক্ষতিপূরণ পাচ্ছেন নির্ধারিত মূল্যের তিনগুণ অর্থ। আরপিসিএলের পরিচালক মোঃ সেলিম ভুইয়া নিশ্চিত করেছেন ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে পুনর্বাসনের লক্ষ্যে এ প্রকল্পে ৯২ কোটি টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে। যেখানে প্রত্যেক পরিবার এক হাজার দুইশ’ বর্গফুট এলাকা নিয়ে একটি নির্দিষ্ট বাউন্ডারি করে সেখানে সেমি পাকা ঘর তুলে দেয়া হবে। এজন্য বরাদ্দ রয়েছে ৬০ কোটি টাকা। থাকছে এ প্রকল্পে বিদ্যুত সুবিধা। থাকছে রাস্তা, সড়ক বাতি, লেক। এক কোটি ৩৫ লাখ টাকা ব্যয় করে নির্মাণ হবে মসজিদ। থাকছে কবরস্থান, হাসপাতাল। দুই কোটি সাত লাখ টাকা ব্যয় হবে স্কুল-মাদ্রাসা নির্মাণে। দুই কোটি ১৬ লাখ টাকা ব্যয় করে নির্মাণ হবে বহুমুখী ব্যবহারের জন্য আট হাজার বর্গফুটের একটি কমিউনিটি হল। খেলার মাঠ, লেকসহ মিনি পার্ক। ৬৫ লাখ ৩০ হাজার টাকা ব্যয় ৬৫ হাজার তিন শ’ ৪০ বর্গফুট আয়তনের একটি পুকুর খনন করা হবে। যার গভীরতা থাকছে ১০ ফুট। এছাড়া বিদ্যুত প্লান্ট এরিয়ার অবকাঠামোসহ রাস্তাঘাট উন্নয়ন এবং এখানকার মানুষের জীবন মান উন্নয়নে প্রকল্প থেকে উৎপাদিত প্রতি ইউনিট বিদ্যুত থেকে তিন পয়সা করে উন্নয়ন তহবিলে জমা হবে। তাতে অন্তত বছরে ২৫ কোটি টাকা জমা হবে। যা ব্যয় হবে উপরোক্ত উন্নয়নে। এছাড়াও এ প্রকল্পে জমি অধিগ্রহণকৃতরা যোগ্যতার ভিত্তিতে কর্মসংস্থানের সুযোগ পাবেন। স্থানীয় বাসিন্দা শিক্ষক ইকবাল বাহাদুর জানান, যদি ক্ষতিগ্রস্তরা তিনগুণ পরিমাণ ক্ষতিপূরণের টাকা পায় এবং পুনর্বাসনে যেসব কথা বলা হচ্ছে তা বাস্তবায়ন করলে কোন সমস্যা নেই। তবে অধিগ্রহণের অর্থ সহজভাবে যারা জমিতে বসবাস করছে তারা পেলে কোন সমস্যা হবে না। কিন্তু ১৩২০ মেগাওয়াট পায়রা তাপ বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণে অধিগ্রহণকৃতরা যেভাবে ক্ষতির শিকার হয়েছে তাতে মানুষ আস্থা ফিরে পাচ্ছেন না। প্রকল্পের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (এইচ আর এ্যান্ড এডমিন) মেজর (অবঃ) সৈয়দ সাখাওয়াত হোসেইন জানান আগে অধিগ্রহণকৃত বাড়িঘরের মালিকদের পুনর্বাসনের কাজ সম্পন্ন করা হবে।
×