ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

নির্বাচনে রুশ হস্তক্ষেপ বিষয়ে তদন্ত চান তারা

ট্রাম্পের সঙ্গে একমত নন দলের সিনিয়র নেতারা

প্রকাশিত: ০৪:১৩, ১৩ ডিসেম্বর ২০১৬

ট্রাম্পের সঙ্গে একমত নন দলের সিনিয়র নেতারা

ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রুশ হস্তক্ষেপের অভিযোগ উড়িয়ে দিলেও রিপাবলিকান পার্টির সবাই তার সঙ্গে একমত নন। নির্বাচনে ক্রেমলিনের ভূমিকা কী ছিল তা নিয়ে তদন্ত এখন দলের শীর্ষ সদস্যরাও চাইছেন। যুক্তরাষ্ট্রে গত মাসে অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান প্রার্থী হিসেবে ট্রাম্প জয়লাভ করেছেন। নিউইয়র্ক টাইমস। ট্রাম্পকে জেতাতে রুশ হ্যাকাররা হস্তক্ষেপ করেছে, কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএর এ রকম একটি রিপোর্টকে উপহাস করার পর এ নিয়ে তার সঙ্গে গোয়েন্দা মহলের সম্পর্কে টানাপোড়েন তৈরি হয়েছে। সিআইএর একজন কর্মকর্তা শনিবার বলেছেন, ট্রাম্পকে জেতাতে রুশ হ্যাকাররা হস্তক্ষেপ করেছে সে বিষয়ে মূল্যায়নের কাজ তারা নির্বাচনের এক সপ্তাহ পেরনোর আগেই বন্ধ করে দেন। রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন কেবল মার্কিন নির্বাচন ব্যবস্থাকেই খাটো করার চেষ্টা করেননি বরং এক প্রার্থীকে জেতানোর জন্যও চেষ্টা করেছেন। এ ধরনের মূল্যায়ন প্রতিবেদন রাজনৈতিক প্রভাবিত বিবেচিত হতে পারে আশঙ্কা থেকে সিআইএ তখন এ নিয়ে বেশিদূর এগোয়নি। ডেমোক্র্যাট দলের প্রার্থী হিলারি ক্লিনটনের অনেক সমর্থকও এমন ধারণা পোষণ করতেন যে রাশিয়া নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করে থাকতে পারে। কারণ হিলারির ক্যাম্পেন ম্যানেজারের ব্যক্তিগত ইমেইল ফাঁস হয়ে পড়েছিল। সিআইএর এক কর্মকর্তা বলেছেন, অক্টোবরেই রুশ হ্যাকাদের পরিকল্পনায় কিছুটা পরিবর্তন আসে। তারা হিলারির অনিষ্ট করার পরিবর্তে ট্রাম্পকে জেতাতেই বেশি মনোযোগী হয়। কিন্তু এ নিয়ে সিআইএ দ্রুতগতিতে তৎপর হয়নি। বিষয়টি নিয়ে বিদায়ী প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। শুক্রবার তদন্তের ফল নিয়ে সংবাদ প্রকাশের পর থেকে গোয়েন্দাদের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন ট্রাম্প। ট্রাম্প নির্বাচনে রুশ সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি বারবার অস্বীকার করে এলেও হোমল্যান্ড সিকিউরিটি চেয়ারম্যান টেক্সাসের সিনেটর মাইকেল ম্যাককল, আরিজোনার সিনেটর জন ম্যাককেইন এবং ক্যালিফোর্নিয়া থেকে নির্বাচিত কংগ্রেস সদস্য ডেভিন নুনেসের মতো দলের সিনিয়র সদস্যরা মনে করেন রাশিয়া নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করেছে। ট্রাম্প ও শীর্ষ মার্কিন গোয়েন্দাদের মধ্যে যে দ্বন্দ্ব দেখা দিয়েছে কর্মকর্তাদের কেউ কেউ একে কয়েক দশকের মধ্যে প্রশাসনের জন্য জটিল সমস্যা বলে অভিহিত করেছেন। বিগত অনেক বছরের মধ্যে এমন জটিল অবস্থা আর দেখা দেয়নি। ট্রাম্পের ক্ষমতাগ্রহণবিষয়ক অন্তর্বর্তী অফিস শুক্রবার এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘গোয়েন্দা রিপোর্টটি ভুল। এরা একসময় বলেছিলেন, সাদ্দাম হোসেনের কাছে ব্যাপক বিধ্বংসী অস্ত্র রয়েছে।’ কর্মকর্তারা এরই মধ্যে গোয়েন্দাবিরোধী প্রচারণা শুরু করেছেন। তারা বলছেন, ‘নির্বাচন হয়ে গেছে। এখন সময় সামনে এগোনোর।’ তবে ট্রাম্পের এই মনোভাবের সঙ্গে কংগ্রেসের গোয়েন্দা কমিটির রিপাবলিকান সদস্যরা একমত নন। তারা বলছেন, গোয়েন্দা সূত্রে তাদের কাছে যেসব তথ্য এসেছে তা থেকে এটি স্পষ্ট যে, এবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে যেভাবেই হোক রাশিয়া নাক গলিয়েছে। তবে কাউকে ক্ষতি করতে নয় কেবল ট্রাম্পকে জেতাতে ক্রেমলিনের সমর্থনপুষ্ট রুশ হ্যাকাররা এটি করেছে। প্রশ্ন দেখা দিয়েছে গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সঙ্গে সম্ভাব্য নয়া প্রশাসনের সম্পর্ক কতটুকু স্বাভাবিক হবে। চীন, রাশিয়া, মধ্যপ্রাচ্যসসহ গোপন ড্রোন হামলা ও সাইবার কর্মকা-ের মতো বিভিন্ন ইস্যুতে গোয়েন্দা তথ্যের ওপর হোয়াইট হাউসকে নির্ভর করতে হয়। সাধারণত যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী প্রার্থীরা দায়িত্ব বুঝে নেয়ার আগের এই সময়টি গোয়েন্দাদের সঙ্গে পরিচিত হওয়া ও তাদের কর্মকা- সম্পর্কে প্রত্যক্ষ ধারণা অর্জনের জন্য ব্যয় করে থাকেন।
×