ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

টানা ৩৫ ম্যাচে হার না মানার অবিস্মরণীয় রেকর্ড গড়ল স্পেনের ক্লাবটি

আবারও রামোসে রক্ষা রিয়াল মাদ্রিদের

প্রকাশিত: ০৭:০৯, ১২ ডিসেম্বর ২০১৬

আবারও রামোসে রক্ষা রিয়াল মাদ্রিদের

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ আবারও শেষ মুহূর্তের নায়ক সার্জিও রামোস। দেপোর্তিভো লা করুনার বিপক্ষে তার করা গোলেই রক্ষা পেয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ। নিশ্চিত ড্র করা ম্যাচে রিয়াল মাদ্রিদ ৩-২ গোলে হারালো দেপোর্তিভো লা করুনাকে। সেইসঙ্গে চলতি মৌসুমের প্রথম ১৫ ম্যাচে অপরাজিত থাকল তারা। আর সবমিলিয়ে টানা ৩৫ ম্যাচে হার না মানার বিস্ময়কর এক কীর্তি গড়লো জিনেদিন জিদানের দল। গত সপ্তাহে মৌসুমের প্রথম এল ক্লাসিকোতে সার্জিও রামোসের কারিশমা দেখে ফুটবল বিশ্ব। তার করা গোলেই বার্সিলোনার সঙ্গে ড্র নিয়ে মাঠ ছেড়েছিল রিয়াল মাদ্রিদ। শনিবারও পিছিয়ে পড়া দলকে রক্ষা করলেন দুর্দান্ত ফর্মে থাকা সার্জিও রামোস। আর তাতেই দেপোর্তিভো লা করুনার বিপক্ষে নাটকীয় জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নরা। আগামী সপ্তাহে ক্লাব বিশ্বকাপে জাপান সফরের কথা মাথায় রেখে জিদান বেশ কয়েকটি পরিবর্তন করে মূল একাদশ সাজান এদিন। দলের সেরা তারকা ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর পাশাপাশি একাদশের বাইরে রাখেন করিম বেনজামা ও লুকা মদরিচকেও। তাদের অভাবটা বেশ ভালই বুঝতে পারে স্বাগতিকরা। বিরতির ঠিক আগেই পিছিয়ে পড়তে পারতো রিয়াল। সেলসো বোরগেসের হেড পোস্টে লাগার পর ফিরতি বলে গুইলহারমের শট বাইরে চলে যায়। আর তাতেই ভাগ্যক্রমে বেঁচে যায় রিয়াল। ফলে গোলশূন্য থেকেই প্রথমার্ধ শেষ করে দুই দল। তবে দ্বিতীয়ার্ধের ৫০ মিনিটে আলভারো মোরাতা ২৫ গজ দূর থেকে দুর্দান্ত শটে গোল করলে মাদ্রিদকে এগিয়ে দেন। কিন্তু ৬৩ মিনিটে জোসেলু সমতা ফেরান সফরকারীদের। তার দুই মিনিটের মধ্যেই স্টোক সিটি থেকে ধারে আসা ফরোয়ার্ড জোসেলু হঠাৎ করেই পুরো ম্যাচের চেহারা পাল্টে দেন। দেপোর্তিভোর হয়ে দ্বিতীয় গোলও করে ফেলেন তিনি। পিছিয়ে পড়েই যেন খেই হারিয়ে ফেলে স্বাগতিকরা। কাউন্টার এ্যাটাক থেকে জোসেলুর আরেকটি শট কেইলর নাভাস কোনরকমে রক্ষা করেন। বার্নাব্যুর ভিআউপি বক্স থেকে তখন রোনাল্ডোর হতাশামাখা চেহারাটাই চোখে পড়ে। সতীর্থদের যে কোনভাবেই সহযোগিতা করতে পারছেন না তার হতাশামাখা মুখটা খুবই স্পষ্ট হয়ে ওঠে। রোনাল্ডোর অনুপস্থিতিতে মূল একাদশে সুযোগ না পেলেও ৭২ মিনিটে ইস্কোর পরিবর্তে মাঠে নেমেই জিদানের আস্থার প্রতিদান দেন মারিয়ানো। ৮৪ মিনিটে লুকাস ভাসকুয়েজের ক্রসে দারুণ এক হেডে রিয়ালের পক্ষে সমতাসূচক গোলটি করেন ডোমিনিকান রিপাবলিকের এই স্ট্রাইকার। এরপর পোলিশ গোলরক্ষক পোস্টের সাথে লেগে ইনজুরিতে পড়লেও ম্যাচ ছেড়ে দেননি। তবে ম্যাচের অতিরিক্ত সময়ে টনি ক্রুসের ক্রস থেকে সার্জিও রামোসের শক্তিশালী হেড আর আটকানোর সামর্থ্য ছিল না টাইটনের। আক্রমণভাগের সেরা তিন তারকাকে ছাড়াই মাঠে নামে রিয়াল মাদ্রিদ। কিন্তু তাদের অনুপস্থিতি এদিন বেশ ভালই অনুভব করেছেন জিদান। তবে ম্যাচ শেষে সন্তুষ্ট রিয়াল শিবির। বিশেষ করে দলের জয়ের নায়ক রামোস দারুণ তৃপ্ত। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘কেউ যখন শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত লড়াই করে তখন তার ফলও পাওয়া যায়। এটা আমাদের সেরা পারফর্মেন্স ছিল না। আমরা বেশ কিছু ভুল করেছি যা করা উচিত হয়নি। কিন্তু শেষ দিকে আবারও ঘুরে দাঁড়ানোর সাহস দেখিয়েছি।’ এর আগে ১৯৮৮-৮৯ মৌসুমে ডাচ কোচ লিও বিনহাকারের অধীনে রিয়াল মাদ্রিদ লীগে টানা ৩৪ ম্যাচে অপরাজিত ছিল। এখন জিদানের অধীনে সেই ল্যান্ডমার্ককে ছাড়িয়ে গেল রিয়াল। এ প্রসঙ্গে জিদান বলেন, ‘৩৫ ম্যাচে অপরাজিত থাকাটা মানসিকভাবেও আমাদের শক্তিশালী করে তুলেছে। সার্জিও সত্যিকার অর্থেই আমাদের একজন বিশেষ খেলোয়াড়। কারণ এই ধরনের ঘটনা এটাই প্রথম নয়। সে আমাদের অধিনায়ক, অনেকের কাছে সে দলের প্রাণ।’ এর আগে দিনের শুরুতে লিওনেল মেসির জোড়া গোলে জয়ে ফিরেছে বার্সিলোনা। এদিন তারা ৩-০ ব্যবধানে হারান ওসাসুনাকে। বাকি গোলটি করেন দলের উরুগুইয়ান স্ট্রাইকার লুইস সুয়ারেজ। তিনটি গোলই হয় দ্বিতীয়ার্ধে। ম্যাচের ৫৯ মিনিটে প্রথম গোল করে বার্সাকে এগিয়ে দেন সুয়ারেজ। এরপর ৭২ ও ৯২ মিনিটে পরপর দুই গোল করে দলের জয় নিশ্চিত করেন বার্সিলোনার আর্জেন্টাইন স্ট্রাইকার লিওনেল মেসি। এই জয়ের পরেও রিয়ালের সঙ্গে পয়েন্ট ব্যবধান ৬। ৩৭ ম্যাচ নিয়ে সবার ওপরে অবস্থান করছে রিয়াল মাদ্রিদ। আর ৩১ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে লুইস এনরিকের দল।
×