ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

আত্মহত্যায় প্ররোচনা ॥ ইউপি চেয়ারম্যানসহ গ্রেফতার তিন

প্রকাশিত: ০৬:৫৩, ১২ ডিসেম্বর ২০১৬

আত্মহত্যায় প্ররোচনা ॥ ইউপি চেয়ারম্যানসহ গ্রেফতার তিন

স্টাফ রিপোর্টার, সাতক্ষীরা ॥ এক তরুণীকে প্রকাশ্যে নির্যাতন করে আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে কলারোয়া উপজেলার সোনাবাড়িয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এসএম মনিরুল ইসলামসহ তার দুই সহযোগী চৌকিদার ইসলাম ও জয়কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শনিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে সাতক্ষীরা শহর থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত এসএম মনিরুল ইসলাম সোনাবাড়িয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। শুক্রবার দুপুরে ইউপি চেয়ারম্যান মনিরুল ইসলাম বিচারের নামে গ্রামপুলিশ দিয়ে তরুণ-তরুণীকে বেঁধে সোনাবাড়িয়া বাজারে ঘোরায়। এ অপমান সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা করে মেয়েটি। এ ঘটনায় শনিবার মেয়েটির ভাই ইব্রাহিম হোসেন বাদী হয়ে ইউপি চেয়ারম্যানসহ সাতজনকে আসামি করে কলারোয়া থানায় একটি এজাহার দেন। এরপর মধ্যরাতে তাকে গ্রেফতার করা হয়। রবিবার চেয়ারম্যানকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। এদিকে নিহতের ভাই মামলার বাদী ইব্রাহিমকে অপহরণের অভিযোগে পুলিশ রবিবার কলারোয়া থানায় একটি জিডি এন্ট্রি করেছে। কলারোয়া থানার ওসি বলেন, বাদীর ভগ্নিপতির অভিযোগে এ জিডি করা হয়েছে। তাকে কোর্টে তুলে এনে এফিডেভিট করে নেয়া হয়েছে বলে শুনেছেন বলে তিনি জানান। আফরোজার পরিবারের সদস্যরা জানান, আফরোজা নিজ বাড়িতে দর্জির কাজ করত। শুক্রবার দুপুরে কাজের ফাঁকে বাড়ির পাশে সোনাবাড়িয়ায় হাসানের দোকানে মোবাইল ফোনে রিচার্জ করতে যায় সে। এ সময় পলাশ নামের এক যুবক আসে হাসানের কাছে তার পাওনা টাকা নিতে। একপর্যায়ে পলাশ ও আফরোজাকে একটি ঘরে ঢুকিয়ে দিয়ে বাইরে থেকে দরজা আটকে দেয় হাসান ও তার বন্ধু হাফিজ। পরে তারা চিৎকার দিয়ে লোক জড়ো করে। অভিযোগ, বিষয়টি ইউপি চেয়ারম্যান মনিরুল ইসলামকে টেলিফোনে জানানো হলে চেয়ারম্যান পলাশ ও আফরোজাকে ধরে আনার নির্দেশ দেন। হাসান ও হাফিজ তাদের দুজনকে বেঁধে নিয়ে যায় ইউনিয়ন পরিষদে। এরপর বিচারের নামে মেয়েটিকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করেন চেয়ারম্যান মনিরুল। ঘটনা সাজানো দাবি করে আফরোজা চেয়ারম্যানকে জানানোর পরও চেয়ারম্যান পলাশকে টাকা নিয়ে ছেড়ে দেন। অপরদিকে আফরোজাকে নানাভাবে অপমানিত করে দড়ি দিয়ে বেঁধে বাজার ঘুরিয়ে মারধর করে বাড়ি পাঠিয়ে দেন চেয়ারম্যান। আফরোজা বাড়িতে গেলে তার চাচা আবদুল হাকিম ও আবদুর রাজ্জাক আবারও তাকে মারধর করেন। এ অপমান সইতে না পেরে শনিবার সন্ধ্যায় নিজ ঘরে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে আফরোজা। এদিকে চেয়ারম্যানকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে কলারোয়া উপজেলা চত্বরে উপজেলা আওয়ামী লীগ ও স্থানীয় চেয়ারম্যানদের উদ্যোগে এক প্রতিবাদ সভা ও মানববন্ধন করা হয়। হেলাতলা ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল ওয়াদুদের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তারা চেয়ারম্যানকে নির্দোষ উল্লেখ করে বলেন, চেয়ারম্যান মনিরুল মাসখানেক আগে পুলিশের বিরুদ্ধে গ্রেফতার বাণিজ্যের বিরুদ্ধে এক সমাবেশ করেন। ওই ঘটনার জের ধরে তাকে এ মামলায় আসামি করা হয়েছে।
×