ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

আনন্দবাজার এলাকার ৬.১৫ কি.মি. এলাকাজুড়ে বে টার্মিনাল নির্মাণের নতুন স্থান নির্ধারণ

বন্দরের সক্ষমতা বাড়াতে বে টার্মিনাল নির্মাণ করা হচ্ছে

প্রকাশিত: ০৫:১৩, ১১ ডিসেম্বর ২০১৬

বন্দরের সক্ষমতা বাড়াতে বে টার্মিনাল নির্মাণ করা হচ্ছে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ সমুদ্র বন্দরের সক্ষমতা বাড়াতে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ (সিপিএ) প্রথমবারের মতো ১ হাজার একর জমিতে বে টার্মিনাল নির্মাণ করতে যাচ্ছে। আমদানি রফতানি কাজে কন্টেইনার হ্যান্ডেলিংয়ে বন্দরের ওপর ক্রমবর্ধমান চাপ সামলাতে সিপিএ এই বে টার্মিনাল নির্মাণ করছে। সিপিএর নির্বাহী প্রকৌশলী রাফিউল আলমের বরাত দিয়ে বাসস জানায়, জার্মানির প্রতিষ্ঠান ‘শেলহর্ন, এইচপিসি, কেএস, জেবি’ গত আগস্ট থেকে সম্ভাব্যতা যাচায়ের কার্যক্রম শুরু করেছে। এতে ব্যয় হয়েছে ৭ কোটি ৯০ লাখ টাকা। আগামী বছর মে মাসের মধ্যে বে টার্মিনাল নির্মাণের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দিবে জার্মান প্রতিষ্ঠানটি। এর আগে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে আগ্রহী ১৩টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে থেকে ‘শেলহর্ন, এইচপিসি, কেএস, জেবি’ এর সঙ্গে সিপিএর সমঝোতা স্মারক সই হয়। রাফিউল আলম জানান, ইতোমধ্যে নগরীর হালিশহর এলাকায় কিছু জায়গায় ১৪ মিটার গভীর প্রায় ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি জায়গা চিহ্নিত করেছে শেলহর্ন, এইচপিসি, কেএস, জেবি। জায়গাটিতে বড় জাহাজ নোঙর করার জন্য পর্যাপ্ত নাব্যতা রয়েছে। সিপিএ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, জায়গাটির গভীরতা পটুয়াখালীর পায়রা এবং কক্সবাজারের মহেশখালীর মতো। প্রাথমিকভাবে উজ্জ্বল সম্ভাবনা দেখা যাওয়ায় প্রস্তাবিত জায়গাটিতে বে টার্মিনাল নির্মাণের জন্য উপযুক্ত স্থান বলে বিবেচনা করছে সিপিএ। সম্ভাব্য স্থানটি মূল বন্দরের সামান্য বাইরে পতেঙ্গা সি বিচ রিসোর্টের কাছে এবং চট্টগ্রাম এক্সপোর্ট প্রসেসিং জোন (সিইপিজেড)-এর পশ্চিমে। বন্দরের প্রধান এস্টেট অফিসার জিল্লুর রহমান বলেন, বন্দর নগরীর হালিশহর এলাকার দক্ষিণ দিকে আনন্দবাজার এলাকার ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে বন্দরের বে টার্মিনাল নির্মাণের নতুন স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে। তিনি জানান, বন্দরের বহিঃনোঙ্গরের কুতুবদিয়া পয়েন্টে ১৪ মিটার গভীরে নাব্যতায় বাল্ক কেরিয়ারগুলো কার্গোতে কন্টেইনার খালাস করবে। এরপর লাইটার জাহাজ কার্গোগুলোকে বহিঃনোঙ্গর থেকে বন্দরে নিয়ে আসবে। গভীর বন্দর সাধারণত বিশাল এলাকাজুড়ে হয় এবং একাধিক বার্থ থাকে। এই টার্মিনালে দুটি বার্থ থাকবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, বন্দর নির্মিত হলে সরাসরি কার্গো হ্যান্ডেলিংয়ের ফলে বৈদেশিক বাণিজ্যে ব্যয় কমাসহ পণ্য উঠা-নামার সময় এবং ব্যয় কমবে। বন্দরটি নির্মিত হলে চট্টগ্রাম বন্দরের আয় ও সক্ষমতা দুটিই বাড়বে। প্রস্তাবিত বে টার্মিনালের ফলে বড় জাহাজ বিভিন্ন বন্দরের জন্য সরাসরি প্রায় ১০ হাজার কন্টেইনার নিতে পারবে। কম নাব্যতার কারণে বড় জাহাজ কর্ণফুলী চ্যানেলে যেতে পারে না। তাই প্রস্তাবিত বে-টার্মিনালটি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারবে। সিপিএর সদস্য (প্রশাসন ও পরিকল্পনা) মোহাম্মদ জাফর আলম বলেন, প্রধান বন্দর হিসেবে চট্টগ্রাম বন্দরে আমদানি-রফতানি কার্যক্রমে কার্গো হ্যান্ডেলিং বৃদ্ধির ফলে বন্দর কর্তৃপক্ষ বে-টার্মিনাল নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তিনি বলেন, বে-টার্মিনাল নির্মাণ হলে প্রতি বছর ২৩ লাখ ২০ ইউনিট কন্টেইনার হ্যান্ডেলিং করা যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। একইসঙ্গে বন্দরের সক্ষমতা বাড়াতে বিভিন্ন আধুনিক সরঞ্জাম সরবরাহে দরপত্র আহ্বান করেছে সিপিএ।
×