ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

রুশ ও ন্যাটো অস্ত্রসজ্জায় পরীক্ষার মুখে নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট

বাল্টিক ট্রাম্পের জন্য নয়া চ্যালেঞ্জ

প্রকাশিত: ০৩:৪৯, ১১ ডিসেম্বর ২০১৬

বাল্টিক ট্রাম্পের জন্য নয়া চ্যালেঞ্জ

ইউরোপের বাল্টিক অঞ্চলে রাশিয়া ও ন্যাটোর সামরিক মহড়া নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও আমেরিকার ইউরোপীয় মিত্রদের প্রতি তার অঙ্গীকারের জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দেখা দিয়েছে। খবর ওয়ান স্টিট জার্নালের। উত্তর আটলান্টিক চুক্তি সংস্থা (ন্যাটো) মস্কোর ইউক্রেইন আক্রমণের পর এক প্রতিরোধ ব্যবস্থা হিসেবে মে নাগাদ এর পূর্ব প্রান্তে এক বহুজাতিক বাহিনী মোতায়েনের পরিকল্পনা করছে। কিন্তু এর আগে জানুয়ারিতে ইউএস আর্মি ফোর্থ ইনফ্যান্ট্রি ডিভিশনের এক ব্রিগেড জার্মানি পৌঁছবে এবং এরপর প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব গ্রহণের দিনের আগেই পোল্যান্ডে চলে যাবে। মার্কিন কর্মকর্তারা একথা জানান। কর্মকর্তারা বলেন, পোল্যান্ডে সিস্টেমস টেস্ট চালানোর পর এক ব্যাটালিয়ন জার্মানিতে প্রশিক্ষণ সেন্টারে ফিরে যাবে, আরেক ব্যাটালিয়ন বাল্টিক রাষ্ট্রগুলোতে যাবে এবং এক ব্যাটালিয়ন রোমানিয়ায় যাবে। কর্মকর্তারা জানান ওই সৈন্য মোতায়েনের পরিকল্পনা নিতে গত সপ্তাহে ন্যাটো সামরিক কর্মকর্তারা এক মহড়া অনুষ্ঠান করে। বড়দিনের ছুটির পর মোতায়েন করার জন্য কিছু ইউনিট প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ইউরোপের সুপ্রিম এ্যালাইড কমান্ডার ইউএস আর্মি জেনারেল কার্টিস স্ক্যাপারোটি বুধবার এ কথা জানান। এদিকে রাশিয়া সাম্প্রতিক মাসগুলোতে কালিনিনগ্রাড অঞ্চলে জাহাজ বিধ্বংসী নতুন ক্ষেপণাস্ত্র, বিমান বিধ্বংসী এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র এবং পরমাণু অস্ত্র বহনে সক্ষম ইস্কান্দার ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন করছে। কালিনিনগ্রাড দীর্ঘদিন ধরেই বাল্টিক সাগরের তীরে রুশ দুর্গ। এ ছিটমহলটি ন্যাটোর দুই নতুন সদস্য পোল্যান্ড ও লিথুয়ানিয়ার মধ্যে অবস্থিত। সেখানে অস্ত্রসজ্জার অর্থ হলো পাশ্চাত্য জোট ন্যাটোর ধৈর্য পরীক্ষা করা। ট্রাম্প তার নির্বাচনী প্রচার অভিযানে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধোত্তর পারস্পরিক প্রতিরক্ষা চুক্তি ন্যাটোর প্রয়োজনীয়তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র জন কারবি গত মাসে ঐ ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েনের পদক্ষেপকে অপ্রয়োজনীয় এবং ইউরোপের নিরাপত্তার প্রতি অস্থিরতা সৃষ্টিকারী বলে অভিহিত করেন। মস্কো দ্রুত এর জবাব দেয়। রুশ কর্মকর্তারা ইস্কান্দার ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েনের পদক্ষেপকে রোমানিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের মজুত করা ক্ষেপণাস্ত্র এবং পোল্যান্ডে মোতায়েনের জন্য পরিকল্পিত ক্ষেপণাস্ত্রের পাল্টা-ব্যবস্থা হিসেবে বর্ণনা করেন। ওয়াশিংটন বলছে এসব ক্ষেপণাস্ত্র ইরানের মতো দেশগুলো থেকে ইউরোপের দিকে ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করবে। কিন্তু রাশিয়া সেগুলোকে এক হুমকি হিসেবে দেখছে। ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন নিয়ে নবেম্বরে এক প্রশ্নের জবাবে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি জেসকভ বলেন, ন্যাটো এক আগ্রাসী ব্লক, কাজেই এর জবাব দিতে রাশিয়া প্রয়োজনীয় সব কিছুই করবে। ন্যাটোর মহাসচিব ড্রেনস স্টলটেনবার্স জোটের পদক্ষেপকে পরিমিত বলে বর্ণনা করেন। তিনি বুধবার বলেন, আমরা সংঘাত চাই না। কিন্তু যখন আমরা রাশিয়াকে ইউক্রেন আগ্রাসনের মতো আচরণ করতে এবং আমাদের সীমান্তের কাছে সামরিক শক্তি বৃদ্ধি করতে দেখি, তখন আমাদের পাল্টা ব্যবস্থা নিতে হয়। উত্তেজনাপূর্ণ কথাবার্তা সত্ত্বেও রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন বলেন, তার দেশ ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত রয়েছে। তিনি ১ ডিসেম্বর বলেন, দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক স্বাভাবিক করা ও উন্নত করার প্রক্রিয়া শুরু করা প্রয়োজন। ট্রাম্প তার নির্বাচনী প্রচার-অভিযান চালানোর সময় পুতিনের নেতৃত্বের প্রশংসা করেন এবং বলেন, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই চালতে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার আরও বেশি সহযোগিতা করা উচিত। এদিকে ন্যাটোর যৌথ প্রতিরক্ষা সম্পর্কিত বাধ্যবাধকতা নিয়ে ট্রাম্পের মন্তব্য মার্কিন মিত্রদের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার করেছে। নিউইয়র্ক টাইমসের সঙ্গে এক সাক্ষাতকারে ট্রাম্প বলেন, যদি রাশিয়া বাল্টিক রাষ্ট্রগুলোকে আক্রমণ করে তবে তিনি সেগুলো আমাদের প্রতি তাদের বাধ্যবাধকতা পালন করেছে কিনা তা পর্যালোচনা করার পরই কেবল তাদের প্রতিরক্ষায় এগিয়ে আসার কথা বিবেচনা করবেন।
×