ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

নাম আছে গেজেটে স্মৃতিফলকে ॥ নেই ভাতার তালিকায়

প্রকাশিত: ০৬:৪৭, ১০ ডিসেম্বর ২০১৬

নাম আছে গেজেটে স্মৃতিফলকে ॥ নেই ভাতার তালিকায়

১৯৭১ সালের ৬ সেপ্টেম্বর সকাল আটটার দিকে যশোরের কালীগঞ্জের বয়রা এলাকায় পাক সেনাদের সঙ্গে সম্মুখযুদ্ধে গুলিবিদ্ধ হয়ে দু’দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে ৮ সেপ্টেম্বর ভারতের ব্যারাকপুর হাসপাতালে মারা যান নুরুল হক। ওই যুদ্ধে ঘটনাস্থলেই শহীদ হয়েছিলেন নুরুল হকের সহযোদ্ধা আবুল হোসেন হাওলাদার। স্মৃতিফলকে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে নুরুল হক হাওলাদারের নাম স্মৃতি হয়ে আছে। সরকারের দেয়া মাসিক ভাতাসহ সব সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত রয়েছে নুরুল হকের অসহায় পরিবার। শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ও সংগঠক নুরুল হক হাওলাদারের অসহায় বিধবা মেয়ে ফেরদৌসি বেগম বাবার নাম শহীদ মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা করে দেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ চেয়েছেন। উজিরপুর উপজেলার হস্তিশু- গ্রামের আবদুল আজিজ হাওলাদারের ছেলে তৎকালীন বিমানবাহিনীর কর্পোরাল শহীদ মুক্তিযোদ্ধা নুরুল হক হাওলাদারের বড় মেয়ে বিধবা ফেরদৌসি বেগম বলেন, বাবার লাশ কোথায় দাফন করা হয়েছে আমরা তা আজও জানতে পারিনি। তিনি বলেন, বাবার মৃত্যুর পর আমাদের তিন ভাই ও তিন বোনকে নিয়ে মা নূরজাহান বেগম চরম আর্থিক দীনতায় পড়েন। একপর্যায়ে বিভিন্নরোগে আক্রান্ত হয়ে বিনা চিকিৎসায় ১৯৯০ সালে মা মারা যান। আমার শহীদ মুক্তিযোদ্ধা বাবা নুরুল হক হাওলাদারকে সম্মান জানিয়ে সরকারী অর্থায়নে উপজেলা পরিষদের সামনে বিশাল স্মৃতিফলক করা হলেও সুযোগ-সুবিধা থেকে আমরা বঞ্চিত। মুক্তিযোদ্ধার গেজেটে আমার বাবার নাম থাকা সত্ত্বেও আমরা মাসিক ভাতা পাই না। এ জন্য আমরা ভাইবোন সংশ্লিষ্টদের কাছে দীর্ঘদিন ধর্ণা দিয়েও প্রতিকার পাইনি। আক্ষেপ করে ফেরদৌসি বেগম বলেন, অন্যসব ভাইবোন কোনমতে জীবনযাপন করলেও বর্তমানে আমি চরম আর্থিক সঙ্কটে ভুগছি। আমার স্বামীর মৃত্যুর পর সন্তানদের নিয়ে আমি মাথা গোঁজার ঠাঁইটুকুও হারিয়েছি। অথচ বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য সরকারীভাবে বাড়ি করে দেয়াসহ কতই না সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা করেছে। বরিশাল নগরীর ভাড়া বাড়িতে বিধবা ফেরদৌসি বেগম তার সন্তানদের নিয়ে কোনমতে দিনাতিপাত করছেন। -খোকন আহম্মেদ হীরা বরিশাল থেকে
×