ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

আজ ভোলা হানাদার মুক্ত দিবস

প্রকাশিত: ০৬:৩৮, ১০ ডিসেম্বর ২০১৬

আজ ভোলা হানাদার মুক্ত দিবস

হাসিব রহমান, ভোলা ॥ আজ ১০ ডিসেম্বর ভোলা হানাদারমুক্ত দিবস। এ দিবস উপলক্ষে জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ও মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ড নানা কর্মসূচী গ্রহণ করেছে। স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পাক বাহিনীর অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে পড়ে ভোলাবাসী। এরপর মুক্তযোদ্ধারা সংগঠিত হয়ে বিভিন্ন ভাগে বিভক্ত হয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। ভোলায় সর্বপ্রথম বোরহানউদ্দিন দৌউলার তালুকদার বাড়িতে হানা দেয় পাকবাহিনী। গোপন সংবাদ পেয়ে হাই কমান্ড সিদ্দিকের নেতৃত্বে একটি সুসংগঠিত মুক্তিবাহিনী আগেই ওত পেতে থাকে। পাকবাহিনী সেখানে পৌঁছামাত্র তিন দিক থেকে মুক্তিবাহিনী তাদের ঘিরে ফেলে। সম্মুখ যুদ্ধে প্রায় ৪০ পাকসেনা নিহত হয়। বাকিরা পালিয়ে যাওয়ার সময় বোরহানউদ্দিন বাজার আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেয়। এরপর বাংলাবাজার চাউলতাতলী মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে যুদ্ধ হয়। ওই যুদ্ধে অনেক মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। তবে প্রতিটি ক্ষেত্রেই পাকবাহিনী ভোলার মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিরোধের মুখে পড়ে। সর্বশেষ ১০ ডিসেম্বর পাকবাহিনী ভোলা থেকে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। নড়াইল নিজস্ব সংবাদদাতা, নড়াইল থেকে জানান, আজ নড়াইল হানাদারমুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে নড়াইলের মুক্তি পাগল দামাল ছেলেরা মিত্র বাহিনীর কোন প্রকার সহযোগিতা ছাড়াই পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীকে সম্মুখযুদ্ধে পরাজিত করে নড়াইলকে মুক্ত করে। দিবসটি পালন উপলক্ষে নড়াইল জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ বিভিন্ন কর্মসূচী গ্রহণ করেছে। ৭ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধারা ফজলুর রহমান জিন্নার নেতৃত্বে নড়াইল কলেজের দক্ষিণে মাছিমদিয়া গ্রামে সমবেত হয়ে পাকিস্তানী পুলিশ ও রাজাকারদের ওপর অতর্কিতে আক্রমণ চালায়। এই যুদ্ধে তরুণ মুক্তিযোদ্ধা লোহাগড়ার জয়পুর গ্রামের মিজানুর রহমান হানাদার বাহিনীর হাতে শহীদ হন। মিজানুর রহমানের মৃতদেহ হানাদার বাহিনীর দোসররা হাত-পা বেঁধে ঝুলিয়ে নড়াইল শহর প্রদক্ষিণ করে আতঙ্ক সৃষ্টি করে এবং ছবি তোলে। ৯ ডিসেম্বর বিজয়ের তীব্র আকাক্সক্ষা নিয়ে নড়াইলের মুজিব বাহিনীর কমান্ডার শরীফ হুমায়ুন কবীরের নেতৃত্বে দুই শতাধিক মুক্তিযোদ্ধা জড়ো হয়। মুক্তিযোদ্ধারা নড়াইল ভিক্টোরিয়া কলেজের দক্ষিণ দিক থেকে আক্রমণ চালালে হানাদারবাহিনীর পাল্টা আক্রমণে সম্মুখযুদ্ধে বাগডাঙ্গার মুক্তিযোদ্ধা মতিয়ার রহমান শহীদ হন। ওই দিনই পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাংলোতে অবস্থানরত পাকিস্তান মিলিটারির ৪০ জন সদস্যকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিলে তারা আত্মসমর্পণে অস্বীকৃতি জানায়। এ সময় মুক্তিবাহিনীর যোদ্ধারা চতুর্দিক থেকে প্রচ- গোলাবর্ষণ শুরু করলে পাক মিলিটারিরা আত্মসমর্পণে বাধ্য হয়।
×