ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

নাগরপুরে ঝুঁকিপূর্ণ ভবন ও শিক্ষক সঙ্কটে ব্যাহত পাঠদান

প্রকাশিত: ০৬:৩৪, ১০ ডিসেম্বর ২০১৬

নাগরপুরে ঝুঁকিপূর্ণ ভবন ও শিক্ষক  সঙ্কটে ব্যাহত পাঠদান

ইফতেখারুল অনুপম, টাঙ্গাইল ॥ সরকার প্রতিনিয়ত প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়নের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। কিন্তু টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলায় ঝুঁকিপূর্ণ ভবন ও শিক্ষক সঙ্কটের কারণে ব্যাহত হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রম। জানা যায়, নাগরপুর উপজেলার ১৫২টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ২৫টি ঝুঁকিপূর্ণ বিদ্যালয়, ২৩টি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এবং ৫১টি সহকারী শিক্ষকের শূন্যপদ নিয়ে কোন রকমে জোড়াতালি দিয়ে ক্লাস করতে হচ্ছে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের। বিকল্প কোন ব্যবস্থা করতে না পারায় আতঙ্কের মধ্যে ক্লাস করছে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা। অতিরিক্ত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ায় এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি বিদ্যালয়ের ভবন পরিত্যক্ত ও ২৫টি বিদ্যালয়কে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলোর মধ্যে রয়েছেÑ ২০নং শান্তিনগর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, ২১নং নয়াপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, যদুনাথ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, শাখাইল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, কাশাদহ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়। ঝুঁকিপূর্ণ অধিকাংশ বিদ্যালয়ে শ্রেণীকক্ষ সমস্যা, টয়লেট সমস্যা এবং বর্ষার মৌসুমে বৃষ্টি ও বন্যার পানিতে মাঠ তলিয়ে থাকে। এর ফলে শিক্ষা কার্যক্রম চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। নামমাত্র সংস্কার করে কিছু বিদ্যালয়ে শ্রেণীকক্ষ জোড়াতালি দিয়ে পাঠদানের উপযোগী করা হলেও কিছুদিন পর সেগুলো আবার পাঠদানের অনুপোযোগী হয়ে পড়ে। এসব বিদ্যালয়ের মধ্যে ২১নং নয়াপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়টির দুটি ভবন থাকলেও সর্বশেষ ২০০৭ সালে নির্মিত ভবনটির ছাদের পলেস্তারা খুলে পড়ছে। আর পুরাতন ভবনটির করুণ দশা নিয়ে অত্যন্ত ঝুঁকির মধ্যে চলছে পাঠদান। পুরাতন ভবনের ভাঙ্গাচোরা মেঝে, ছাদের পলেস্তারা খুলে গেছে। অল্প বৃষ্টি হলেই ছাদ চুইয়ে পানি পড়ে। এদিকে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনসংবলিত বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকরা ক্ষোভের সঙ্গে জানান, আমরা প্রতি মাসের বিল মিটিংয়ের সময় আমাদের দুঃখ-দুর্দশার কথা বলি। কিন্তু আজ পর্যন্ত এর কোন সমাধান পাইনি। অপরদিকে নাগরপুরে প্রধান ও সহকারী শিক্ষক মিলিয়ে ৭৪টি শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। এ বিপুলসংখ্যক শিক্ষকের পদ শূন্য হওয়ায় বছরের শেষ সময়ে এসে বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষা কার্যক্রম বিঘিœত হচ্ছে। উপজেলা সদরের কাছাকাছি বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষক সঙ্কট না থাকলেও প্রত্যন্ত অঞ্চলে শিক্ষক সঙ্কট প্রকট। আর এ কারণে শহরের তুলনায় গ্রামের শিক্ষার্থীরা পিছিয়ে পড়ছে। এসব বিষয়ে নাগরপুর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা খোরশেদ আলম জানান, উর্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট চাহিদা অনুযায়ী ভবন ও শিক্ষক সঙ্কটের তালিকা পাঠানো হয়েছে। নিয়োগ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শিক্ষক সঙ্কটের সমাধান করা হবে। আর নিয়ম অনুযায়ী প্রতি বছর নতুন নতুন ভবন বিদ্যালয়গুলোতে নির্মাণ হচ্ছে। আশা করি দ্রুতই এ সকল সঙ্কট কেটে যাবে।
×