ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

তীব্র যানজট

বুড়িগঙ্গা দ্বিতীয় সেতুর ওপর অবৈধ বাসস্ট্যান্ড

প্রকাশিত: ০৬:৩৪, ১০ ডিসেম্বর ২০১৬

বুড়িগঙ্গা দ্বিতীয় সেতুর ওপর অবৈধ বাসস্ট্যান্ড

নিজস্ব সংবাদদাতা, কেরানীগঞ্জ, ৯ ডিসেম্বর ॥ বুড়িগঙ্গা দ্বিতীয় সেতুতে যানজট নিরসনে পৌর কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করলেও তা সফল হচ্ছে না। সেতুর দুই প্রান্তে ও মাঝে অবৈধভাবে গড়ে উঠেছে বাসস্ট্যান্ড, যে কারণে যানজট নিরসনে পদক্ষেপ সম্পূর্ণ ব্যর্থ হচ্ছে। সকাল-সন্ধ্যায় দূরপাল্লার যাত্রীবাহী বাসগুলো বুড়িগঙ্গা দ্বিতীয় সেতুর ওপর পার্কিং করার ফলে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। অথচ সেতুর উভয় প্রান্তে ও মাঝে রয়েছে ট্রাফিক পুলিশ। তারা পাচ্ছে সপ্তাহ ও মাসোয়ারা, যে কারণে অবৈধ বাসস্ট্যান্ডের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। বাড়ছে সড়ক দুর্ঘটনা। কেরানীগঞ্জের জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়তে থাকে যানবাহন। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন ও মানুষের চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বুড়িগঙ্গা দ্বিতীয় সেতু দিয়ে দেশের সকল গুরুত্বপূর্ণ জেলার সঙ্গে যাতায়াতের বন্ধন হিসেবে কাজ করছে। ছোট-বড় যাত্রীবাহী বাস সার্ভিসগুলো সরকারের বিনানুমতিতে কেরানীগঞ্জে বাস কাউন্টার খুলে যাত্রীসেবা শুরু করে। প্রথমদিকে ২-৪টি যাত্রীবাহী বাস গুলিস্তান থেকে ছেড়ে আসা দ্বিতীয় সেতুর পাদদেশ থেকে (কেরানীগঞ্জ) মাওয়া ঘাটের যাত্রী বোঝাই করত। এগুলোই ৭-৮ বছরে প্রকট আকার ধারণ করেছে। প্রতিদিন কয়েক হাজার পরিবহন যাতায়াত করে এই সেতু দিয়ে। সেতুর প্রান্তে অবৈধ বাসস্ট্যান্ডের ফলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজট লেগেই থাকে। বলার বা দেখার কেউ নেই। ভোগান্তিতে পড়েছে কেরানীগঞ্জ, নবাবগঞ্জ দোহার, মুন্সীগঞ্জ, মাওয়া, শিবচর, ভাঙ্গা, মাদারীপুর, ফরিদপুর, শরীয়তপুর, বরিশাল, ভোলা, পাটুয়াখালী ও খুলনার যাত্রীরা। তাছাড়া হাজার হাজার ব্যবসায়ী ও শিক্ষার্থী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন যাতায়াত করছে। ভারি যানবাহন ছাড়াও শত শত প্রাইভেটকার, সিএনজি অটোরিক্সা, ভ্যান চলাচল করছে। অবৈধ বাসস্ট্যান্ডের ফলে এরাও প্রতিদিন যানজটের শিকার হচ্ছে। সরেজমিন দেখা গেছে, বুড়িগঙ্গা দ্বিতীয় সেতুর বাবুবাজার থেকে ১৫-২০টি কোম্পানির যাত্রীবাহী বাস রাস্তা বন্ধ করে মাওয়া ঘাটের যাত্রী বোঝাই করছে। পুলিশ কাছে দাঁড়িয়ে পুতুলের মতো নীরবে দেখছে। তারা কিছু বলছে না। পথচারীরা অভিযোগ করে বলেন, ট্রাফিক পুলিশ রয়েছে সেতুর উভয় প্রান্তে এবং মিটফোর্ড হাসপাতালে ও বাদামতলী ডাইভার্সনে। থাকলে কী হবে। ‘যত দোষ নন্দ ঘোষ’। বলা-কওয়া অরণ্যে রোদন। সেতুর দক্ষিণ তীরে কেরানীগঞ্জের পাদদেশে ইমামবাড়ি এলাকায় অবৈধভাবে গড়ে ওঠা সার্বিক পরিবহনের ম্যানেজার মতিউর রহমান এবং প্রতিষ্ঠানের মালিক মাদারীপুরের হাফিজুর রহমান খান। তিনি বলেন, ২০০২ সালে প্রথমে মতিঝিল থেকে যাত্রী আনা শুরু করে। কিছুদিন পর ট্রাফিক পুলিশ বন্ধ করে দেয়। পরে চলে আসি নয়াবাজারে। সেখানে আসার পর দেখা দেয় যানজট। এ কারণে সেখানেও থাকতে দেয়নি ট্রফিক পুলিশ। অবশেষে নিজের ইচ্ছায় ঠাঁই করে নেই কেরানীগঞ্জের ইমামবাড়ি এলাকায় বুড়িগঙ্গার দ্বিতীয় সেতুর পাদদেশে। যানজটের ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, কী করব উপায় নেই। তবে চেষ্টা করি যাতে যানজট না লাগে। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখানে বাসস্ট্যান্ডের জন্য কেউ অনুমতি দেয়নি। তবে আমাদের রুট পারমিটটি রয়েছে এ রকম। এ ব্যাপারে কেরানীগঞ্জ ট্রাফিক পুলিশের টাউন সাব-ইন্সপেক্টর (টিএসআই) আব্দুল আজিজ বলেন, লক্ষ্য করা গেছে বুড়িগঙ্গা দ্বিতীয় সেতুর ওপর বাসস্ট্যান্ড করায় প্রতিদিনই যানজট লেগে থাকে। পরিবহন মালিকরা কিভাবে এগুলো করছেন, তা ঠিক নয়। অপরদিকে সার্জেন্ট নুরুল ইসলাম মল্লিক বলেন, অবৈধ বাসস্ট্যান্ডের ব্যাপারে আমরা কোন পরিবহনকে অনুমতি দেইনি। তাই অবৈধ বাসস্ট্যান্ডের ব্যাপারে কিছু বলতে পারি না।
×