প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের সমস্যা সমাধানের ব্যাপারে বলেছেন, রোহিঙ্গা সমস্যাটি রাজনৈতিক এবং মিলিটারি পন্থায় এর সমাধান সম্ভব নয়। বাংলাদেশে ডেনমার্কের নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূত মিখাইল হেমনিদ উইনটার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতকালে তিনি এ কথা বলেন। খবর বাসস’র।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম জানান, সাক্ষাতকালে প্রধানমন্ত্রী ডেনিস রাষ্ট্রদূতকে বলেছেন, রোহিঙ্গা সমস্যাটি রাজনৈতিক সমস্যা এবং মিলিটারি পন্থায় এর সমাধান সম্ভব নয়।
এ সময় বাংলাদেশে ডেনমার্কের নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূত মিখাইল হেমনিদ উইনটার বলেন, তার দেশ বাংলাদেশের ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হওয়ার ঈপ্সিত লক্ষ্য অর্জনে অংশীদার হতে চায়।
বৃহস্পতিবার ডেনিশ রাষ্ট্রদূত উইনটার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে এক সৌজন্য সাক্ষাতে এ কথা বলেন। বাংলাদেশের উন্নয়ন সহযোগী হতে পারায় ডেনমার্ক গর্বিত বলেও এ সময় রাষ্ট্রদূত উল্লেখ করেন।
বৈঠকের পর সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব বলেন, বৈঠকে উভয়ে বিভিন্ন দ্বিপাক্ষিক এবং আন্তর্জাতিক বিষয়ে আলোকপাত করেন। এমনকি মিয়ানমারের সাম্প্রতিক রোহিঙ্গা সমস্যাও তাদের আলোচনায় উঠে আসে।
বৈঠকের শুরুতেই ডেনমার্ককে বাংলাদেশের একজন গর্বিত উন্নয়ন সহযোগী আখ্যায়িত করে ডেনিশ রাষ্ট্রদূত দুই দেশের মধ্যে এ সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, দুই দেশের মধ্যে সবুজ জ্বালানি খাতে সহযোগিতার বিস্তর সম্ভাবনা রয়েছে।
এ সময় রোহিঙ্গা ইস্যু মোকাবেলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করেন ডেনিশ রাষ্ট্রদূত।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, তিনি রিফিউজি সমস্যা সম্পর্কে ভালভাবেই অবগত, কেননা ’৭৫-এ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর তাকেও দীর্ঘ ছয়টি বছর রিফিউজি হিসেবেই প্রবাসে কাটাতে হয়।
রোহিঙ্গা সমস্যা মোকাবেলায় প্রধানমন্ত্রী পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তির উল্লেখ করে বলেন, এটা তৃতীয় কোন পক্ষের সাহায্য ছাড়া মিয়ানমারকে স্থানীয় পর্যায়েই সমাধান করতে হবে। শান্তিচুক্তির ফলে ১৯৯৭ সালে বিদ্রোহীরা অস্ত্র সমর্পণ করেছিল, বলেন প্রধানমন্ত্রী।
পার্বত্য চট্টগ্রামে তার সরকার গৃহীত বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকা-ের উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পার্বত্যাঞ্চলের জনগণ এখন অন্যান্য সকল সুবিধার সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলার সুযোগ এবং ইন্টারনেট সুবিধা ভোগ করছে। এ সময় প্রধানমন্ত্রী সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে তার সরকারের ‘জিরো টলারেন্স নীতি’ পুনর্ব্যক্ত করেন।
প্রধানমন্ত্রী ডেনিশ উদ্যোক্তাদের এ দেশের কৃষি ও খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়ে বলেন, সারাদেশে তার সরকার এক শ’ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলছে। যে এলাকায় যে ধরনের শিল্পের উপযোগ আছে সেখানে সেসব শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার জন্য কৃষিজমি বাঁচিয়ে শিল্প প্রতিষ্ঠার জন্য নির্দিষ্ট এলাকা ঠিক করা হয়েছে।
দেশের উন্নয়নে সরকারের প্রধান লক্ষ্য পল্লী উন্নয়ন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এজন্যই তৃণমূল পর্যায় থেকে দেশের উন্নয়নে তাঁর সরকার নিরলস প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।
দায়িত্ব পালনকালীন ডেনিশ রাষ্ট্রদূতকে প্রয়োজনীয় সব রকম সহযোগিতা প্রদান করা হবে বলেও প্রধানমন্ত্রী আশ্বস্ত করেন। এ সময় আগামী ১০ থেকে ১২ ডিসেম্বর ঢাকায় অনুষ্ঠেয় নবম গ্লোবাল ফোরাম অন মাইগ্রেশন এবং উন্নয়ন সম্মেলন আয়োজনে প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান ডেনিশ রাষ্ট্রদূত। প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. কামাল আব্দুল নাসের চৌধুরী এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: