ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

উবাচ

প্রকাশিত: ০৫:৫৯, ৯ ডিসেম্বর ২০১৬

উবাচ

অলির অভিমান! স্টাফ রিপোর্টার ॥ ঘরের মানুষ। স্বজন। তাই প্রিয়। রাজনীতি মাঝে মাঝে দূরে ঠেলে দেয়। তাতে কি। সময়ের প্রয়োজনে ফের ঐক্য। ভালবাসা। ফের রাজনীতি। এ রকম নিবিড় সম্পর্ক বিএনপি ও এলডিপিপ্রধান কর্নেল অলির মধ্যে। যখন বিএনপি তথা ২০ দলের ভালবাসা তুঙ্গে ঠিক তখন অভিমান করেছেন অলি। তাও বিএনপির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা তিনি। সঙ্গত কারণেই সাবেক এই কর্নেলের অধিকার বেশি। পথ চলায় ভুল হলেও বিএনপি তো তাকে আঘাত দিতে পারে না! নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন (নাসিক) নির্বাচনে মেয়র পদে ২০ দলীয় জোট সমর্থিত বিএনপি প্রার্থী সাখাওয়াত হোসেন খানের পক্ষে প্রচার ও জনসংযোগ চালানোর জন্য গঠিত টিমে নাম রাখা হয়নি অলির। এতেই ক্ষুব্ধ হয়েছে জোটের অন্যতম শরিক লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (এলডিপি) প্রধান। কারও কারও মতে ক্ষোভ নয়, নিছক অভিমান। ঘরের মানুষ তাই। হয়ত মান ভাঙবে শীঘ্রই। এজন্যই হয়ত ক্ষোভের প্রকাশ ঘটেছে নানা কায়দায়। এলডিপির নেতারা বিষয়টি অনাকাক্সিক্ষত, অনভিপ্রেত ও অবমাননাকর হিসেবে দেখছেন। তারা মনে করছেন জোটের অখ-তা রক্ষার এ ধরনের ঘটনা এড়িয়ে চলা উচিত। মঙ্গলবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত ২০ দলীয় জোটের মহাসচিবদের বৈঠকে সাখাওয়াত হোসেন খানের পক্ষে প্রচার ও জনসংযোগ চালানোর জন্য তিনটি টিম গঠন করা হয়। টিম ‘ক’ তে রয়েছে বাংলাদেশ ন্যাপ, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি), ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (এনডিপি) ও ডেমোক্র্যাটিক লীগ (ডিএল)। টিম ‘খ’ তে রয়েছে জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর), জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা), ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি), বাংলাদেশ লেবার পার্টি, পিপলস লীগ (পিএল) ও বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল (একাংশ)। টিম ‘গ’ তে থাকছে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম, ইসলামী ঐক্যজোট, খেলাফত মজলিস, ইসলামিক পার্টি, ন্যাপ ভাসানী ও বাংলাদেশ মুসলিম লীগ। কিন্তু জোটের অন্যতম দুই শরিক জামায়াতে ইসলামী ও এলডিপিকে ওই তিন টিমের কোথাও রাখা হয়নি। এলডিপির নেতারা মনে করছেন ২০ দলীয় জোট সমর্থিত বিএনপি প্রার্থী সাখাওয়াত হোসেন খানের পক্ষে প্রচার চালানোর জন্য গঠিত টিমে অলি আহমদ বীর বিক্রম নেতৃত্বাধীন এলডিপিকে না রেখে জামায়াতের সঙ্গে ‘ব্রাকেটবন্দি’ করা হয়েছে। জোট নেতাদের এই আচরণ কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না এলডিপি নেতারা। তারা বলছেন, বিএনপি মনোনীত প্রার্থী সাখাওয়াত হোসেন খানের বিরুদ্ধে প্রার্থী হওয়ায় দীর্ঘ দিনের পরীক্ষিত নেতাকে দল থেকে বহিষ্কার করেছে এলডিপি। তার প্রতিদান হিসেবে প্রচারের জন্য গঠিত টিমে রাখা হয়নি এলডিপিকে! কবর রক্ষক স্টাফ রিপোর্টার ॥ ১৯৬১ সালে সংসদ ভবনের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ইতিহাসের নানা চড়াই উতরাই পেরিয়ে ১৯৭২ সালের ২৮ জানুয়ারি এ ভবনের উদ্বোধন করা হয়। দৃষ্টিনন্দন এ ভবনের নক্সা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রখ্যাত স্থপতি লুই আই কান। নক্সায় সংসদ ভবন ছাড়া আর কোন স্থাপনা ছিল না। একপর্যায়ে সংসদ এরিয়াতে জিয়াউর রহমানের মাজার স্থাপন করা হয়। এ নিয়ে রাজনীতিতে নতুন বিতর্ক। ক্ষমতাসীন দল বলছে, জাতীয় সংসদের সৌন্দর্য ফুটিয়ে তুলতে নক্সাবহির্ভূত সকল স্থাপনা অপসারণ করা হবে। বিএনপির না। এ নিয়ে সোচ্চার বিএনপি নেতাদের অনেকেই। নানা হুমকি-ধমকি দিচ্ছেন তারা। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের মাজারে হাত দিলে কেউ বসে থাকবে না বলে মন্তব্য করেছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। অর্থাৎ কবর রক্ষকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন তিনি বুধবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন-বাংলাদেশ মিলনায়তনে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, নির্মম হত্যাকা-ের পর চট্টগ্রামের জনগণ জিয়াউর রহমানের মরদেহ পাহাড়ের জঙ্গল থেকে খুঁজে বের করে ঢাকায় পাঠিয়েছিল। সেদিন সারাদেশ থেকে লাখ লাখ মানুষ হেঁটে ঢাকায় এসে জিয়াউর রহমানের জানাজায় শরিক হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনার প্রিয় ভাইকে (হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ) জিজ্ঞেস করেন, তার কাঁধে বহন করে কার মরদেহ ওখানে (জিয়ার মাজার) দাফন করা হয়েছিল? জিয়ার মাজারে হাত দিলে আগুনে হাত দেয়া হবে মন্তব্য করে মোশাররফ হোসেন বলেন, মরদেহের ওপর হস্তক্ষেপ করবেন? মাজার তুলে দেবেন? মুখে বলেছেন-তাতে জনগণ ফুঁসে উঠেছে। মাজারে হাত দিলে কেউ বসে থাকবে না। ক্ষমতার পটপরিবর্তন হলে জনগণ দেশের অন্য মাজারগুলোতেও হাত দেবে। জামায়াত ছাড়ুন! স্টাফ রিপোর্টার ॥ যাকে হৃদয় থেকে ভালবাসা যায়; তাকে কি কখনও দূরে ঠেলে দেয়া সম্ভব। গায়ে যতই ক্ষত থাক। থাক সমালোচনা। এমনকি অপকর্মের অভিযোগ। দেশবিরোধী ভূমিকা থাকলেও ভালবাসা কমার কথা নয়। হয়ত তাই। তবে রাজনীতিতে সম্ভব ও অসম্ভব দু’রকমের উদাহরণ রয়েছে। এর মধ্যে সম্ভবের জ্বলন্ত উদাহরণ হলো বিএনপি-জামায়াত জোট। হয়ত এজন্যই নানা সমালোচনার মুখেও ২০ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক জামায়াত ইসলামীকে বাদ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিতে পারে না বিএনপি। বিএনপিপন্থী বুদ্ধিজীবীরাও বহুবার এ ব্যাপারে পরামর্শ দিয়েছেন। কাজে আসেনি। বিএনপি মানেই জামায়াত। যেন ভাই ভাই। নির্বাচন কমিশনকে পুনর্গঠন ইস্যুতে ফের আলোচনায় বিএনপি ও জামায়াত জোট। এই ইস্যুতে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে আলোচনা করতে চায় বিএনপি। এজন্য আনুষ্ঠানিক চিঠিও পাঠানো হয়েছে বঙ্গভবনে। এই প্রেক্ষাপটে জামায়াতকে ছেড়ে বিএনপিকে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে আলোচনায় বসার আহ্বান জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। ১৪ দলীয় জোটের এই মুখপাত্র বলেন, আপনারা (বিএনপি) জামায়াতকে ছেড়ে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে আলোচনায় আসুন। আপনাদের প্রস্তাব গ্রহণযোগ্য হলে রাষ্ট্রপতি সেটা অবশ্যই বিবেচনা করবেন। কিন্তু নির্বাচন হবে ২০১৯ সালে সংবিধান অনুযায়ী শেখ হাসিনার অধীনে। নির্বাচন পরিচালনা করবে নির্বাচন কমিশন। বৃহস্পতিবার সকালে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের পর পরই রাজনৈতিক অঙ্গনে মুখরোচক নানা আলোচনা। যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত রাজনৈতিক দল জামায়াতকে জোট থেকে বাদ দিতে সকল মহল থেকেই দাবি ছিল। খোদ বিএনপি নেতাদের অনেকেই এমন দাবি জানিয়েছেন। ছিল আন্তর্জাতিক চাপও। জামায়াতসহ বিএনপি নেতাদের মধ্যে যারা যুদ্ধাপরাধী ছিলেন তাদের বিচার হয়েছে। নানা অপকর্ম ফাঁস হয়েছে জামায়াতের। সংবাদমাধ্যমে ফলাও করে প্রচার ও প্রকাশ হয়েছে সবকিছু। তবুও সম্পর্কের মধ্যে এক চুল পরিমাণ চিড় ধরেনি। এখন নতুন করে জামায়াত ছাড়ায় পরামর্শ কতটুকু কার্যকর হবে এ নিয়েই প্রশ্ন। বিএনপি আন্দোলন করার মতো অবস্থায় নেই উল্লেখ করে নাসিম বলেন, সাহস থাকলে আন্দোলন করেন আওয়ামী লীগের মতো বাধা ভেঙ্গে। আমরা মার খেয়ে মিটিং করেছি, জেলে গিয়েছি। নির্বাচনে অংশ না নিয়ে নিজেরাই নিজেদের অধিকার হারিয়েছেন। আপনাদের জ্বালাও-পোড়াও আন্দোলনে কোন মানুষ আসবে না। ধর্মের নামে বিভ্রান্তি ছাড়ানো হচ্ছে উল্লেখ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, শান্তির ধর্ম ইসলামকে ব্যবহার করে বাংলাদেশে জঙ্গীবাদের উত্থানের চেষ্টা হচ্ছে। তরুণ প্রজন্মকে বিপথগামিতা করে ইসলামকে বিতর্কিত করার চেষ্টা চলছে।
×