ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

তিন সমঝোতা স্মারক সই

পায়রা বন্দর ॥ স্থাপনা নির্মাণে এগিয়ে এসেছে চীন

প্রকাশিত: ০৫:৫৬, ৯ ডিসেম্বর ২০১৬

পায়রা বন্দর ॥ স্থাপনা নির্মাণে এগিয়ে এসেছে চীন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ২০২৩ সালের মধ্যে পায়রা বন্দরকে বিশ্বমানের আধুনিক বন্দর হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে বন্দর উন্নয়নের কাজ আরও ত্বরাণ্বিত করতে মূল অবকাঠামো নির্মাণ এবং তীর রক্ষাবাঁধ ও আবাসন, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যখাতের স্থাপনা নির্মাণে এগিয়ে এসেছে চীন। বৃহস্পতিবার এসব বিষয়ে চীনের দুটি কোম্পানির সঙ্গে পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের তিনটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরিত হয়েছে। কোম্পানি দুটি হলো চায়না হারবার ইঞ্জিনিয়ারিং কোং লিঃ (সিএইচইসি) ও চায়না স্টেট কনষ্ট্রাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং কর্পোরেশন লিঃ (সিএসসিইসি) । নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খানের উপস্থিতিতে এমওইউতে স্বাক্ষর করেন পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) কমোডর মোঃ সাইদুর রহমান এবং চায়না হারবার ইঞ্জিনিয়ারিং কোং লিঃ-এর পক্ষে যুগ্ম ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এল জেং নানহাই ও চায়না স্টেট কনস্ট্রাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং কর্পোরেশন লিঃ-এর পক্ষে ব্যবস্থাপনা পরিচালক লি শুজিয়াং। এ সময় নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব অশোক মাধব রায়ও উপস্থিত ছিলেন। বন্দরের মূল অবকাঠামোর মধ্যে রয়েছে সংযোগ ব্রিজ, রাস্তা, বন্দরের জন্য অবকাঠামোসহ পয়ঃনিষ্কাশন, জলনিষ্কাশন আন্তঃসড়ক সংযোগ, রেল যোগাযোগ ইত্যাদি। সিএইচইসি বন্দরের মূল অবকাঠামো নির্মাণের কাজটি করবে। এতে নদী তীর রক্ষা কার্যক্রম এর মাধ্যমে বন্যা প্রতিরোধ, ভূমি ক্ষয়রোধ ইত্যাদি প্রতিরোধ করা সুদৃঢ় হবে। তীর রক্ষাবাঁধ ও আবাসন, শিক্ষা, স্বাস্থ্যখাতের স্থাপনা নির্মাণ করবে সিএসসিইসি। এ তিনটি উন্নয়ন কম্পোনেন্ট জি টু জি এর আওতায় বাস্তবায়ন হবে। অনুষ্ঠানে নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান বলেন, আজকের সমঝোতা স্মারকপত্রসমূহ স্বাক্ষরের মাধ্যমে পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষ আধুনিক বন্দর নির্মাণের যাত্রার ক্ষেত্রে আরও একধাপ এগিয়ে গেল। উল্লেখ্য, পায়রা বন্দরে উন্নয়ন কাজকে ১৯টি কম্পোনেন্টে বিভক্ত করা হয়েছে। আলোচ্য তিনটি কম্পোনেন্টের কাজ জি টু জি ভিত্তিতে বাস্তবায়নের জন্য কমিটি সুপারিশ দাখিল করে। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় সিএইচইসি এবং সিএসসিইসি-এর সঙ্গে আলোচ্য তিনটি এমওইউ স্বাক্ষরের অনুমোদন দেয়। এ ৩িনটি কম্পোনেন্টকে পায়রা বন্দরের ভিত্তি হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে। যুক্তরাজ্যের বিখ্যাত পরামর্শক প্রতিষ্ঠান এইচআর ওয়ালিংফোর্ড পায়রা বন্দরের হাইড্রোলিক ও বাস্তবতা সংক্রান্ত সমীক্ষা প্রতিবেদনে নদী তীর রক্ষা, মূল বন্দর অবকাঠামো এবং জনকল্যাণ সংক্রান্ত কার্যক্রমের গৃহায়ন, স্বাস্থ্য এবং শিক্ষা সুবিধাদি নির্মাণের সুপারিশ করে। এই তিনটি কম্পোনেন্ট বাস্তবায়নের পর ২০১৯ সালকে টার্গেট ধরে পূর্ণাঙ্গ বন্দর উন্নয়নের জন্য অগ্রাধিকার প্রকল্প হিসেবে কন্টেইনার টার্মিনাল, বাল্ক টার্মিনাল, পেসেঞ্জার টার্মিনাল, টাগ বোট সংগ্রহ, বিদ্যুত প্লান্ট স্থাপন, নৌ সংরক্ষণ এবং পশ্চাদ সুবিধা নির্মাণ ইত্যাদি হাতে নেয়া হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯ নভেম্বর ২০১৩ তারিখে দেশের ৩য় সমুদ্রবন্দর হিসেবে পায়রা সমুদ্রবন্দর উদ্বোধন করেন। পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলায় দেশের ৩য় সমুদ্রবন্দর হিসেবে পায়রা বন্দর ইতোমধ্যে সীমিত আকারে পণ্য খালাস কার্যক্রম শুরু করেছে। রাবনাবাদ চ্যানেলের পশ্চিম তীরে ৭,০০০ একরেরও অধিক ভূমিজুড়ে বন্দরটি নির্মিত হচ্ছে।
×